বোলারদের ধৈর্য ধরতে বললেন তামিম
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেগ ব্রাফেটের ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট ৪০। গত এক বছরে সেটি কমে এসেছে ৩৭-এ। কিন্তু সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দিন শেষে টেস্ট ক্রিকেটে মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত এই ব্যাটসম্যান অপরাজিত আছেন ৫৫ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে, স্ট্রাইক রেট ৫৪.৫৫! তাঁর সঙ্গী জন ক্যাম্পবেল ৪১ বলে ৩২ রানে অপরাজিত, তাঁর স্ট্রাইক রেট ৭৮.০৫।
দুই ক্যারিবীয় ওপেনারের দ্রুত রান তোলার পেছনে ‘দায়ী’ বাংলাদেশ দলের বোলাররাই। ২৩৪ রানে অলআউট হওয়ার পর দিনের শেষ সেশনে নতুন বলটা কাজে লাগাতে পারেনি ইবাদত হোসেন-খালেদ আহমেদরা। উইকেটের নেশায় প্রচুর আলগা বল করেছেন প্রায় সবাই। সেই সুযোগটাও নিয়েছেন দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার।
দিন শেষে বাংলাদেশ দলের ওপেনার তামিম ইকবালও নিজ দলের বোলারদের এই ভুলের কথা বললেন। প্রথম দিন শেষে ১৬ ওভারে ৬৭ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, রান রেট ৪.১৯। তামিম বলছিলেন, ‘বোলিংয়ে ২৫-৩০ রান আরও কম দিতাম, তাহলে ভালো হতো। কারণ ওরা যে ধরনের ব্যাটিং করে সাধারণত, সেটা এত দ্রুত না। আমার কাছে মনে হয় ২০-২৫ রান বেশি দিয়ে দিয়েছি।’
বোলারদের পারফরম্যান্সটি বিচার করা হচ্ছে মূলত তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম ইনিংসে দারুণ মিতব্যয়ী ছিলেন প্রত্যেকেই। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ইনিংসে এক চুল ছাড় দেননি বোলাররা। সেন্ট লুসিয়ায় অন্তত প্রথম দিন সেই পারফরম্যান্সের ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না।
তামিম অবশ্য উইকেট ও কন্ডিশনের ভিন্নতার প্রসঙ্গটি তুলেছেন, ‘অ্যান্টিগায় পেসারদের জন্য বেশি সাহায্য ছিল। সেখানে সুইং ছিল। কিছু বল সিম করছিল। আজ প্রথমদিনে কিছু ফাটল ছিল, কিন্তু সে রকম সুইং ওরাও পায়নি। আমরাও পাইনি।’
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বোলিংয়ে প্রথম সেশনে সে ভাবে সফল না হলেও দ্বিতীয় সেশন ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপ সৃষ্টি করে পেয়েছে বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের উইকেট।
নিজ দলের বোলারদেরও একই কৌশলে বোলিং করতে বললেন তামিম, ‘আগামীকাল সকালের সেশনটা গুরুত্বপূর্ণ। উইকেট নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ধৈর্যের খেলা খেলতে হবে। রান কম দিয়ে যত দ্রুত উইকেট নেওয়ায় সম্ভব হয় আর কি। দেখতে হবে কাল উইকেট কেমন আচরণ করে। সূর্যের তাপে যদি ফাটল আরও বড় হয়ে যায়… আমরা চাচ্ছি যেন ভালো আচরণ না করে। এটা এমন উইকেট না যেখানে এসে আপনি যা ইচ্ছা তা করতে পারবেন। এখানে ধৈর্যের খেলাটা খেলতে হবে। ওদের যদি দেখেন, শুরুতে আক্রমণ করেছে। কিন্তু পরে রান শুকিয়ে উইকেট নেওয়া চেষ্টা করেছে। আমাদেরও সেটা করতে হবে।’
সেন্ট লুসিয়া টেস্টে টিকে থাকতে হলে এখন বোলারদের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশের। দ্বিতীয় দিন সকালের সেশনটা সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে আজ বিকেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার অপরাজিত থাকায় দিনটা যে স্বাগতিকদের, সেটা মেনেই নিয়েছেন তামিম, ‘ওদের উইকেট পড়েনি, তাই দিনটা ওদেরই। ২টি উইকেট নিলে হয়তো সমান থাকতাম। তবে এখন তাঁরা এগিয়ে আছে নিশ্চিতভাবেই। নির্ভর করছে আমরা কাল কেমন শুরু করি।’