দ্বিতীয় দিন বিকালের সেশন থেকেই পিচ স্পিনারদের হয়ে ওঠে—শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বাইশ গজ নিয়ে এই ধারণাটা মোটামুটি প্রচলিত।
কাল শেষ সেশনে সাকিব আল হাসানের উইকেট পাওয়া এই ধারণার পক্ষেই কথা বলে। সাকিব আজও ছিলেন লঙ্কানদের সংহারকের ভূমিকায়, কিন্তু বেরসিক বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে মূল্যবান সময়। নইলে কে জানে, শ্রীলঙ্কা হয়তো আরেকটু চাপে থাকত!
অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে ও ‘নাইটওয়াচম্যান’ কাসুন রাজিতা কাল দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন। স্কোরবোর্ডে ২ উইকেটে ১৪৩ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। আজ মধ্যাহ্নভোজ বিরতির ঠিক পাঁচ বল আগে বৃষ্টি নামার পর প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল খেলা।
দ্বিতীয় সেশনের পুরোটা তো বৃষ্টিতে ভেসে গেছেই, বিকালের সেশনেও প্রায় এক ঘণ্টা খেলা হয়নি। আজ তৃতীয় দিনে ৫১ ওভার ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। সব মিলিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ২৮২ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেকে এখনো ৮৩ রানে পিছিয়ে করুণারত্নের দল।
বিকালের সেশনে মেঘলা আবহাওয়ায় বেশির ভাগ সময় ফ্লাডলাইটের আলোয় খেলা হয়। আজ পুরো দিনে বাংলাদেশের সফল বোলার বলতে সাকিব ও ইবাদত হোসেন। কাল একটি করে উইকেট তুলে নেওয়া এ দুই বোলার আজও ভালো করেছেন।
বিশেষ করে আজ দুটি উইকেট নেওয়া সাকিব ছিলেন বেশি উজ্জ্বল। করুণারত্নকে (৮০) দারুণ ডেলিভারিতে সকালের সেশনে তুলে নেন সাকিব। ৫৬তম ওভারে সাকিবের ফাঁদে পা দিয়ে বোল্ড হন লঙ্কান অধিনায়ক। বল বাঁক নিচ্ছে, তৃতীয় দিনে তা প্রথম স্পষ্ট বোঝা গেছে সাকিবের ওই ডেলিভারিতে।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস এবং ধনঞ্জয়া ডি সিলভা মিলে পঞ্চম উইকেটে বেশ ভালো একটা জুটি গড়েছিলেন। ১৯১ বলে ১০২ রানের এই জুটিটা বৃষ্টিতে বন্ধ হওয়া খেলা পুনরায় শুরুর পর ভেঙেছেন সাকিব। এবারও বল বাঁক নিয়ে ফাঁকি দিয়েছে ব্যাটসম্যানকে—ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
উইকেটের পেছনে ক্যাচের আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। মাঠের আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। ভিডিও রিপ্লেতে দেখা গেছে, বল ধনঞ্জয়ার ব্যাটের কানা ছুয়ে লিটন দাসের গ্লাভসে জমা পড়ে।
৯৫ বলে ৫৮ রানে আউট হন ধনঞ্জয়া। দিনেশ চান্ডিমালকে নিয়ে এরপর দিনের বাকি সময় পার করেন ম্যাথুস। চট্টগ্রাম টেস্টে ১৯৯ রানের ইনিংস খেলা ম্যাথুস অপরাজিত আছেন ৫৮ রানে। ১৫৩ বলের এই ইনিংসটি কাল বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। ২৯ বলে ১০ রানে অন্য প্রান্ত ধরে রেখেছেন চান্ডিমাল।
পেসার ইবাদতের কথাও আলাদা করে বলতে হয়। আজ দিনের দ্বিতীয় বলেই রাজিতাকে তুলে নিয়ে শুভসূচনা এনে দিয়েছিলেন ইবাদত। ১২ বলে ০ রানে অপরাজিত রাজিতাকে বোল্ড করেন তিনি। ২৬ ওভারে ৭৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ইবাদত। তাঁর সমান ওভারে ৫৯ ওভারে ৩ উইকেট সাকিবের।
বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার আজ যতটা ভালো বল করেছেন, বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ না থাকলে শ্রীলঙ্কা হয়তো আরও উইকেট হারাতে পারত। তাতে কাল চতুর্থ দিনটা আরও স্বস্তি নিয়ে শুরু করতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টিতে সম্ভাবনাটুকু জলে ভেসে গেছে।