বিশ্ব ফার্নান্ডোর মাথায় হাত। হতাশা ছড়িয়ে পড়ল শ্রীলঙ্কার ডাগআউটেও। এসে সান্ত্বনা দিয়ে গেলেন মোসাদ্দেক হোসেন। তবে সেটি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের জন্য যথেষ্ট হলো কি না, নিশ্চিত নয়। ১৯৯ রানে দাঁড়িয়ে আউট হয়ে গেলে এমন সান্ত্বনায় কতটুকুইবা কাজ হয়!
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ‘মাইলফলক’ই সঙ্গী হলো শ্রীলঙ্কা অলরাউন্ডার ম্যাথুসের। নাঈম হাসানের বলটা তুলে মারতে গিয়েছিলেন, তবে টাইমিং করতে পারেননি ঠিকঠাক। শর্ট মিড উইকেটে সাকিব আল হাসানের হাতে ধরা পড়েছেন ৩৯৭ বলে ১৯৯ রান করে। আর ১ রান করতে পারলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটা পেয়ে যেতেন।
ম্যাথুসের হতাশাটা আসলে আরও বেড়ে যাওয়ার কথা তিনি যেভাবে এত দূর এসেছেন, সে কারণে। দলীয় ৩২৮ রানেই সপ্তম ও অষ্টম উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা, ম্যাথুস তখন অপরাজিত ছিলেন ১৪৮ রানে। বিশ্ব ফার্নান্ডোর সঙ্গে প্রথমে যোগ করলেন ৪৭ রান। মাথায় আঘাত পেয়ে চা-বিরতির পর শুরুতে নামেননি বিশ্ব। আসিথা ফার্নান্ডো বেশিক্ষণ ম্যাথুসকে সঙ্গ দিতে না পারলেও বিশ্ব ফিরে এসে ঠিকই দিচ্ছিলেন সেটি।
তবে সুযোগটা যেন নিজেই হারালেন ম্যাথুস। নাঈমের ষষ্ঠ শিকারে পরিণত হয়ে ম্যাথুস বনে গেলেন ১৯৯ রানে আউট হওয়া মাত্র দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান। এর আগে আউট হয়েছিলেন সনাৎ জয়াসুরিয়া। ১৯৯৭ সালে কলম্বোতে ভারতের বিপক্ষে এমন ‘দুর্ভাগ্যের’ শিকার হন তিনি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৯৯ রানে আউট হওয়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান ম্যাথুস। এর আগে এমন হয়েছিল ডিন এলগারের। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে এখনকার দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ডাবল সেঞ্চুরি থেকে একটি স্কোরিং শট দূরে দাঁড়িয়ে আউট হয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমানের বলে। বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের অবশ্য এমন ‘দুর্ভাগ্য’ হয়নি আজ পর্যন্ত। ১৯০ রানে একবার আউট হয়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সেটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই, গলে, ২০১৩ সালে।
সব মিলিয়ে ১৯৯ রানে আউট হওয়া ১২তম ব্যাটসম্যান ম্যাথুস। টেস্টে প্রথম এই ‘কীর্তি’ পাকিস্তানের মুদাসসর নজরের। ১৯৮৪ সালে ফয়সালাবাদে ভারতের বিপক্ষে ১৯৯ রানে দাঁড়িয়ে শিবলাল যাদবের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি।
তবে প্রসঙ্গ যখন ১৯৯ রান, তখন কুমার সাঙ্গাকারা ও অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের ক্ষেত্রে সেটি সঙ্গী না থাকার আফসোসের। এ দুজনই অপরাজিত ছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে দাঁড়িয়ে। ২০০১ সালে হারারেতে ফলোঅনে পড়ে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন ফ্লাওয়ার। তবে শেষ ব্যাটসম্যান ডগলাস হন্ডো আউট হয়ে গিয়েছিলেন ফ্লাওয়ারকে হতাশায় ফেলে। ১১ বছর পর এমন ‘দুর্ভাগ্যে’র শিকার হন সাঙ্গাকারা, গলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেবার শেষ ব্যাটসম্যান ছিলেন নুয়ান প্রদীপ।
১৯৯ রানের এ তালিকায় অবশ্য এক দিক দিয়ে ‘অনন্য’ ইউনিস খান। এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৯৯ রানে দাঁড়িয়ে রানআউট হয়েছিলেন সাবেক পাকিস্তান ব্যাটসম্যান। ২০০৬ সালে লাহোরে ভারতের বিপক্ষে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিলেন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের। আরেক সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল ইউনিসের।
২৯৯ রানের ক্ষেত্রে তালিকাটা অবশ্য বেশ ছোটই। এ রানে দাঁড়িয়ে আউট হওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান নিউজিল্যান্ডের মার্টিন ক্রো। ১৯৯১ সালে ওয়েলিংটনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই আউট হন তিনি। ২৯৯ রানে অপরাজিত থাকা একমাত্র ব্যাটসম্যানের নাম—ডন ব্র্যাডম্যান।