বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে নিউজিল্যান্ডের একটি প্রধান দৈনিক আমাকে দলের উদ্দেশে একটা খোলা চিঠি লিখতে বলেছিল। টুর্নামেন্টের এই বিদায়লগ্নে আমার সেটির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। লেখাটি পড়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মি. জন কি আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। দল আমার কথার দারুণ প্রতিদান দিয়েছে, প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছে। রোববার (আজ) আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর একটি। আমি সেই লেখাটির চুম্বক অংশ মনে করিয়ে দিচ্ছি। ‘বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পুরস্কার। ইতিহাস বলে আমরা ছয়বার সেমিফাইনাল থেকে ফিরে গেছি। তবে অতীত নিয়ে পড়ে থাকার কোনো মানে নেই, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। একটি গর্বিত জাতি হিসেবে আমরা ব্ল্যাক ক্যাপদের দিকে তাকিয়ে আছি। গত কয়েক বছরের শ্রমের ফসল তোলার সুযোগ আমাদের সামনে।
বিশ্বকাপ প্রতি চার বছর পর পর আসে। সামনের ছয় সপ্তাহ তোমরা নিজেদের মতো উপভোগ করো। হ্যাঁ, চ্যালেঞ্জ আসবে, স্নায়ুর অনেক পরীক্ষা হবে। কিন্তু সবকিছু ইতিবাচকভাবে নিতে হবে। যদি লক্ষ্য অটুট থাকে, ইচ্ছাটা তীব্র থাকে তাহলে জয় আসবেই।
গত দুই বছরে আমরা জয়টাকে অভ্যাসে পরিণত করেছি। আমাদের একজন অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক আছে, ভালো পেস আক্রমণ আছে, বিশ্বের সেরা স্পিনারদের একজন আছে, দারুণ কিছু ব্যাটসম্যান আছে। দলের ভারসাম্যটা অসাধারণ, যেকোনো পরিস্থিতিতে এই দল লড়াই করতে পারে। বিশ্বকাপে খেলা এটাই নিউজিল্যান্ডের সেরা দল। দেশজুড়েই রোমাঞ্চ ও প্রত্যাশার একটা হাওয়া বইছে। এই দলকে নিয়ে সবার অনেক প্রত্যাশা। ক্রিকেট নিয়ে মানুষের আগ্রহ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তোমাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণেই এটা হয়েছে। সমর্থকদের প্রতি তোমাদের একটা দায়িত্ব আছে। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের কাছে তোমরা নায়ক, অনেকের কাছেই আদর্শ। শৈশব থেকে যে স্বপ্ন দেখে আসছিলে, সেটা পূরণ করার সুযোগ এখন তোমাদের সামনে।
যখনই তোমরা জার্সি পরে মাঠে নামো, দেশের জন্য সেটা গর্ব। উড়তে থাকা জাতীয় পতাকা থেকে তোমরা প্রেরণা খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবে। জানবে, তোমরা একা নও, পুরো দেশ আছে তোমাদের পাশে। ফল যা-ই হোক, সবাই তোমাদের সেরাটাই দেখতে চায়। অনেক অনেক শুভকামনা।’
খেলোয়াড়দের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন আজ। দেখা যাক, ব্ল্যাক ক্যাপরা ক্রিকেটের সবচেয়ে আরাধ্য স্বপ্ন পূরণ করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারে কি না। (হক-আই)।