সর্বশেষ বিপিএলেও এক দলে খেলেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবাল। এবারও ঢাকা দলে আছেন দুজন, সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহও। বাংলাদেশের ওয়ানডের সফলতম অধিনায়ক, এখনকার ওয়ানডে অধিনায়ক, এখনকার টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক—তিনজনই তাই খেলবেন একই দলে। একসঙ্গে খেলাটা উপভোগ করবেন, মনে করেন তামিম ও মাহমুদউল্লাহ দুজনই।
এমনিতে গতকাল পর্যন্তও ঠিক ছিল না, ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা কার হতে যাচ্ছে। এর আগে যাদের নাম উল্লেখ করেছিল বিসিবি, শর্ত পূরণ করতে না পারায় তাদের দল দেওয়া হয়নি। আজ বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার জানিয়েছেন, আপাতত বিসিবির হাতেই থাকবে দলটি। দল গোছানোর পর স্পনসরশিপ বা মালিকানা কাউকে দেওয়া হবে।
আজ ড্রাফট শেষে ইসমাইল বলেছেন, ‘আপনারা তো বিসিবির সঙ্গে অনেক দিন ধরে কাজ করেন। এখানকার ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো যেসব নিয়মকানুন মানতে চায়, তা কিন্তু না। আপনি যদি দেখেন আমাদের আগের বিপিএলের সঙ্গে মেলাতে গেলে যেটা বড় পরিসরে হতো, অন্তত আর্থিক দিক আমলে নিলে এবার কিন্তু ছোট পরিসরেই হচ্ছে। তার মধ্যে আমাদের যে আর্থিক নিয়মকানুনগুলো ছিল বা অন্য যেগুলো ছিল, সেগুলো কিন্তু আমরা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে চাই। সুতরাং এটা যে পাচ্ছি না, তা না। আমাদের হাতে মালিকানা ও স্পনসর পেতে চায় এমন নাম আছে কিন্তু আমরা দিইনি।’ ড্রাফটের পর অন্যতম সেরা দল গড়েছে ঢাকা—এমন মন্তব্য করেছেন ইসমাইল।
নিয়ম অনুযায়ী, ড্রাফটের আগেই সরাসরি সাইনিংয়ে ‘এ’ শ্রেণির মাহমুদউল্লাহকে দলে নিতে পেরেছিল ঢাকা। আজ ড্রাফটে প্রথমে তামিমকে নেয় তারা। এরপর রুবেল হোসেনকে নেওয়ার পর ডাকা হয় মাশরাফিকে। মাশরাফি এক বছরেরও বেশি সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটের বাইরে। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে খেলেছিলেন তিনি।
মাহমুদউল্লাহ বলছেন, একসঙ্গে খেলার ‘বিশ্বাস’ ছিল তাঁদের, ‘সব সময়ই বিশ্বাস ছিল আবার একসঙ্গে খেলতে পারব। আলহামদুলিল্লাহ আবার একসঙ্গে খেলতে পারছি। তামিমও আমাদের সঙ্গে আছে। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়েরা আমাদের দলে বেশি তো, আমি আশা করি, মাঠে যদি এটা কাজে লাগাতে পারি, আমাদের ভালো ফল করার সম্ভাবনা আছে, সেটা বিশ্বাস করি।’
তামিম ও মাশরাফির সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করা নিয়ে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলেছেন, ‘এটা আমরা সব সময় উপভোগ করি—মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গে খেলা বা উনার অধীনে খেলা। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ যেটি হলো, তখনো খুব ভালো সময় আমরা কাটিয়েছি এবং ভালো ক্রিকেটও খেলতে পেরেছি। আশা করি, ওই রকম ভালো একটা পরিবেশ যেন এই দলেও তৈরি করতে পারি এবং ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি।’
তামিমের সঙ্গে সম্পর্কও আগের মতোই আছে মাহমুদউল্লাহর, ‘অনেক কিছুই আমার হাতে নেই। অনেকেই অনেক কিছু ভাবে। আমি সব সময় আমার তরফ থেকে বিশ্বাস করতাম যে বন্ধন বা সম্পর্ক—সব সময়ই ভালো ছিল।’
আর তামিমের কথা, দিন শেষে উপভোগ করাটাই সব, ‘এ রকম তো প্রত্যাশা করা যায় না আসলে। সাধারণ যেটা হয় আমরা তিনজন তিন দলে থাকি। এবার সৌভাগ্যবশত হয়েছে, খুব খুশি। আমার মনে হয়, ক্রিকেটে জেতা–হারাটা তো সব না। ক্রিকেটে উপভোগ করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি উপভোগ করার ব্যাপার না থাকে, তাহলে বিশ্বে কেউই খেলবে না। আমরা তিনজন একসঙ্গে থাকলে এমনিতেই উপভোগ করব।’
আমার মনে হয়, ক্রিকেটে জেতা–হারাটা তো সব না। ক্রিকেটে উপভোগ করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি উপভোগ করার ব্যাপার না থাকে, তাহলে বিশ্বে কেউই খেলবে না। আমরা তিনজন একসঙ্গে থাকলে এমনিতেই উপভোগ করব।
ড্রাফটে দল পাওয়ার ঢাকার টেবিলে গিয়ে বসেছিলেন তামিম। মাহমুদউল্লাহদের সঙ্গে পরামর্শও করতে দেখা গেছে তাঁকে। মাহমুদউল্লাহর কল পাওয়ার পরই ড্রাফটে গেছেন তামিম, ‘দেখেন, একটা বিষয় শেয়ার করি...আমরা তো মাত্র এক রাতের মতো সময় পেলাম। তো আজ সকালেই (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাই আমাকে কল করে বলল—তুই একটু জলদি আয়। তো এখানে আমি আর কী বলব বা কীভাবে বোঝাব আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে।’
দলে অধিনায়কত্বটাও মাহমুদউল্লাহর পাওয়া উচিত বলে মনে করেন তামিম, ‘না, এখানে আমি কিছু বলব না। কারণ, (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাই এখনকার জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। অবশ্যই তিনিই নেতৃত্ব পাওয়ার যোগ্য। আমাদের কাজ হল তাকে সমর্থন দেওয়া।’