উসমান খাজা ও ক্যামেরন গ্রিন—দুজনের জন্যই বছরটা যাচ্ছে দুর্দান্ত। গলেও জ্বলে উঠলেন দুজন, সঙ্গে যুক্ত হলেন অ্যালেক্স ক্যারি। গ্রিনের ৭৭, খাজার ৭১ রানের সঙ্গে ক্যারির ৪৭ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে দ্বিতীয় দিন শেষে গল টেস্টে ১০১ রানের লিড নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৮ উইকেটে ৩১৩ রান তুলে ফেলেছে তারা, দিনের শেষবেলায় আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও। মাত্র ১৬ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত তিনি, নাথান লায়নের সঙ্গে তাঁর অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠেছে ২৮ বলে ৩৫ রান।
আলোকস্বল্পতায় গলে খেলা শেষ হয়েছে আগেভাগেই। তবে এ দিন যে খেলা হয়েছে, সেটিই অবশ্য অনেক। বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে ভেঙে পড়েছিল অস্থায়ী গ্যালারি, সাইটস্ক্রিন। টিভি ক্যামেরার স্ট্যান্ডও হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত। অবশ্য প্রবল বাতাসে মাঠ শুকিয়ে এসেছে তুলনামূলক দ্রুত সময়েই, দিনের খেলা শুরু হতে পেরেছে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর।
এরপর যে ৪৪ ওভার খেলা হয়েছে, তাতে দাপট দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়াই। ওভারপ্রতি প্রায় ৪.৮৯ হারে তারা তুলেছে ২১৫ রান, হারিয়েছে ৫ উইকেট। গলে ক্রমাগত ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন হয়ে ওঠা উইকেটে এ রানের মূল্য যে অনেক, সেটি অবশ্য আলাদা করে না বললেও চলছে! অস্ট্রেলিয়ার এমন ব্যাটিংয়ের মূল ভূমিকাটা অবশ্য ছিল গ্রিনেরই। খাজার সঙ্গে ৫৭ রানের পর ক্যারির সঙ্গে ৮৪ রানের জুটি গড়েন তিনি।
বৃষ্টি বাধার পর খেলা শুরু হলে ট্রাভিস হেড অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেননি, দিনের সপ্তম বলেই ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে ফিরতি ক্যাচ দেন। উসমান খাজা ও ক্যামেরন গ্রিনের জুটিতে এরপর ৭৭ বলেই ওঠে ৫৭ রান। এমনিতেও বাতাসের কারণে স্পিনাররা একটু ঝামেলায় পড়েছেন, তবে খাজা ও গ্রিন তাঁদের সামলেছেন দারুণভাবে। দুজনের জুটিতে ৫০ রান ওঠে মাত্র ১১ ওভারেই।
অবশেষে খাজা থামেন জেফরি ভ্যান্ডারসের বলে। ফরোয়ার্ড ডিফেন্সিভ শট খেলতে গিয়ে শর্ট লেগে পাতুম নিসাঙ্কার দারুণ ক্যাচে পরিণত হন ৭১ রান করা খাজা। টেস্ট ক্যারিয়ারে ভ্যান্ডারসের সেটিই প্রথম উইকেট। অবশ্য খাজার উইকেটের পরও অস্ট্রেলিয়ার প্রতি-আক্রমণ থামাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।
ক্যারি ও গ্রিনের জুটিতে ওঠেন ৯৩ বলেই ওঠে ৮৪ রান। আক্রমণের মূল দায়িত্বটা ওই সময় নিজের কাঁধে নেন ক্যারিই, নিয়মিত স্ট্রাইক বদলে তাঁকে দারুণভাবে সহায়তা করেছেন গ্রিন। চা-বিরতির আগেই দুজনের জুটি ছুঁয়ে ফেলে অর্ধশতক, মাত্র ৪৯ বলেই। বিরতির আগেই লিডও পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
ক্যারিকে থামান রমেশ মেন্ডিস। সামনে এসে খেলেছিলেন, তবে মিড-অফে দীনেশ চান্ডিমালের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন। ৪৭ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ৬টি চার মেরেছেন ক্যারি, সুইপ ও রিভার্স সুইপ করেছেন দারুণভাবে। ক্যারি ফেরার পর মিচেল স্টার্কের সঙ্গে গ্রিনের জুটিতে ওঠে আরও ৩৭ রান। গ্রিন থামেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক থেকে ২৩ রান দূরে, মেন্ডিসের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। রিভিউ নিয়েছিলেন, তবে কাজে আসেনি তা।
গ্রিনের আউটের পরের ওভারেই স্টার্কও ফেরেন ভ্যান্ডারসেকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় দিনই অলআউট করে দেওয়ার ভালো সম্ভাবনা তৈরি করে তখন শ্রীলঙ্কা। সেটি হয়নি কামিন্সের প্রতি-আক্রমণে। এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের করা ২৬ রানের ২২ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে—একটি চারের সঙ্গে মেরেছেন তিনটি ছক্কা। এর মধ্যে শেষের ছক্কায় তো বল গিয়ে পড়েছে মাঠের বাইরের রাস্তায়।