জয়ও যথেষ্ট হলো না তামিমদের, ফাইনালে মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল

৬৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের মোস্তাফিজুর রহমানছবি: বিসিবি

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে খেলা ততক্ষণে শেষ। মাহমুদউল্লাহর বিসিবি উত্তরাঞ্চলকে তামিম ইকবালের ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল হারিয়েছে সহজেই। কিন্তু ইনডিপেনডেন্স কাপের ফাইনালে খেলতে হলে তামিমদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছিল মূল মাঠের ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ও বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের ম্যাচের দিকে।

ম্যাচটিতে মধ্যাঞ্চল জিতলে ফাইনালে তাদের সঙ্গী হবে পূর্বাঞ্চল—সমীকরণ ছিল এমন। আর মধ্যাঞ্চল হারলে তাদের সঙ্গে ইনডিপেনডেন্স কাপের ফাইনালে যাওয়ার কথা ছিল দক্ষিণাঞ্চলের। শেষ পর্যন্ত তামিমদের হতাশ করে ৫ উইকেটের জয়ে ফাইনালে গেছে দক্ষিণাঞ্চল। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখা মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে খেলবে তারা। ফাইনাল হবে ১৫ জানুয়ারি।

তৌহিদ হৃদয় খেলেছেন ৭৮ বলে ৬৫ রানের ইনিংস
ছবি: বিসিবি

তবে ফাইনালের আশা থাকায় পূর্বাঞ্চলের ক্রিকেটাররা আগ্রহ নিয়ে মূল মাঠে এসে খেলার শেষ অংশ দেখছিলেন। আফিফ হোসেন, নাঈম হাসান, শাহাদাত হোসেন, রেজাউর রহমানরা আশা নিয়ে এসেছিলেন খেলা দেখতে। রেজাউর আসতে আসতে বলছিলেন, ‘আজ ওয়ালটনকে জিতিয়েই ছাড়ব। দরকার হয় সেজদায় লুটিয়ে পড়ব।’

ড্রেসিংরুমে তামিমও অপেক্ষা করছিলেন ম্যাচের ফলাফলের। ফাইনালে উঠবেন কি না, সেটির ওপর নির্ভর করছিল তাঁর ঢাকায় ফেরার। ওই সময় মধ্যাঞ্চলের দেওয়া ২২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের তৌহিদ হৃদয় ও জাকির হাসান। দুজনকে আউট করার জন্য আফিফরাই মাঠে উৎসাহ দিচ্ছিলেন মধ্যাঞ্চলকে। কিছুক্ষণ পর আফিফদের সঙ্গে এসে যোগ দেন দলটির ম্যানেজার হাসিবুল হোসেনও।

খেলা দেখতে মাঠে পূর্বাঞ্চলের খেলোয়াড়েরা
ছবি: বিসিবি

এমন সময় ৪৯ বল খেলে অধিনায়ক জাকির লং অন দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ তুলে আউট হন। মধ্যাঞ্চলের সঙ্গে মাঠের বাইরে থাকা পূর্বাঞ্চল ক্রিকেটারদের উল্লাসও তখন ছিল দেখার মতো! কিন্তু জাকির আউট হলেও নাহিদুল ইসলাম এসে রানের চাকা সচল রাখেন।

ফাইনাল খেলা হচ্ছে না তামিমদের
ছবি: বিসিবি

দক্ষিণাঞ্চলের জিততে যখন দরকার ২৯ বলে ২৫ রান, এমন সময় বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামকে ছক্কা মারেন নাহিদুল। জয় তখন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে দক্ষিণাঞ্চলের। তখনই হাসিবুল ফোনে কাকে যেন বলছিলেন, ‘আজ রাতের ফ্লাইটেই ঢাকা ফিরছি। আর থেকে কী করব।’ হাসিবুলের কথা শুনতেই উপস্থিত সবাই হেসে উঠলেন। হাসিবুলের সঙ্গে একে একে পূর্বাঞ্চলের সবাই মাঠ ছেড়েছেন হতাশ হয়ে। শেষ পর্যন্ত পার্থক্য গড়ে দিয়েছে হৃদয়ের ৭৮ বলে ৬৫ রানের ইনিংসই। এর আগে ৬৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

ইমরুল কায়েস করেছেন ৭১ রান
ছবি: বিসিবি

আরেক ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর ৬৬ রান ও ৩ উইকেটের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সও জেতাতে পারেনি উত্তরাঞ্চলকে। তাদের দেওয়া ২১৭ রানের লক্ষ্য ইমরুল কায়েসের ৭১ রানের ইনিংসে ভর করে ৪ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে গেছে পূর্বাঞ্চল। ৩৮ বল খেলে ৩৫ রান করেছিলেন তামিম। পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল তিন ম্যাচ খেলে ম্যাচ জিতেছে একটি করে। দুই দলই বাদ পড়ায় ইনডিপেনডেন্স কাপের ফাইনালে দেখা যাবে না তামিম ও মাহমুদউল্লাহকে। মধ্যাঞ্চলের হয়ে প্রথম দুই ম্যাচ খেলে ঢাকা ফিরে যাওয়ায় ফাইনাল খেলবেন না সাকিব আল হাসানও।