চার বছর পর আবার ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

প্রথম সেশনেই ৬ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশএএফপি

একই অধিনায়ক, একই মাঠ, টসের ফলটাও একই। চার বছর আগে-পরে অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ও থাকল একই রকম। সেবার ১৮ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ আজ ১৬ রানে হারিয়েছে প্রথম ৩ উইকেট। সে দিন মধ্যাহ্নবিরতির আগেই ৪৩ রানে গুটিয়ে গেলেও অবশ্য এবার ৭৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রথম সেশন পার করেছে তারা। তবে তাতে কতটুকু সান্ত্বনা মিলবে, সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাই।

মধ্যাহ্নবিরতির সময় ২৭ রানে অপরাজিত সাকিব আল হাসান, তাঁর সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজের রান ২।

উইকেটে এখানে-সেখানে ঘাসের উপস্থিতি, ব্যাটিংটা সহজ হওয়ার কথা নয়ও। টসের সময় অবশ্য আশার কথাই শুনিয়েছিলেন সাকিব—বোলিং নিতে চাইলেও ব্যাটিংয়েও আপত্তি নেই। এরপর যা হলো, তাতে অবশ্য ঘোর আপত্তিই করার কথা বাংলাদেশ অধিনায়কের।

ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মাহমুদুলকে ফেরান রোচ
এএফপি

বাংলাদেশের বিপর্যয়ের শুরুটা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই। রোচের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দেন মাহমুদুল হাসান। পরের ওভারে এসে রোচ ফেরান নাজমুল হোসেনকে। ফুললেংথের বলটা নাজমুলের ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে ঢুকে ভাঙে স্টাম্প।

আরও পড়ুন

অধিনায়কত্বের ‘চাপ’ সরে যাওয়ার পরও মুমিনুল থাকেন আগের মতোই। জেইডেন সিলসের বলে শরীর থেকে দূরে শক্ত হাতে ডিফেন্ড করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। এ নিয়ে টানা ৯ ইনিংস দুই অঙ্কের আগেই ফিরলেন মুমিনুল, সর্বশেষ তিন ইনিংসের দুটিতেই আউট হলেন কোনো রান না করেই। বাংলাদেশের দুই থেকে চার নম্বর ব্যাটসম্যানের কেউই রান করতে পারেননি—নিজেদের ইতিহাসে এমন ঘটনাও ঘটল এই প্রথম বার।

দুঃসময় পিছু ছাড়ছে না মুমিনুলের
এএফপি

১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশকে একটু স্থির করার চেষ্টা করেন তামিম ও লিটন দাস। মুমিনুলের আউটের আগেই রোচের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন তামিম, দুই চার মেরে। আলজারি জোসেফের প্রথম বলে পাঞ্চ করে চার মারেন লিটনও। অবশ্য সিলসকে আলগা শটে চার মারতে গিয়ে প্রায় ক্যাচ তুলেছিলেন লিটন। এর মাঝে মুশফিকুর রহিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ৫ হাজার রান পূর্ণ করেন তামিম।

আরও পড়ুন

প্রথম ঘণ্টায় বাংলাদেশ উইকেট হারায়নি আর। তবে পানি-পানের বিরতির পরপরই আবার বিপর্যয়ে পড়ে তারা।

আলজারি জোসেফের লেগ স্টাম্পের বাইরের নিরীহ বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দেন তামিম। পরের ২ উইকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় ৩ বলের ব্যবধানে। নিজের প্রথম ওভারে করতে এসেই কাইল মায়ার্স নেন জোড়া উইকেট। তাঁর অফ স্টাম্পের বাইরে লাইন ধরে রাখা বলে কট-বিহাইন্ড লিটন, বেশ বাইরে থেকে ভেতরের দিকে ঢুকতে থাকা বলে শট না খেলে এলবিডব্লু হন নুরুল হাসান। নুরুল রিভিউ করেছিলেন, তবে কাজ হয়নি তাতে। ইনিংসে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে শূন্যতে ফেরেন নুরুল, বাংলাদেশ পরিণত হয় ৬ উইকেটে ৪৫ রানে।

মুশফিকুর রহিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজার রান পূর্ণ করেন তামিম
এএফপি

রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে এরপর একটু উদ্ধারের চেষ্টা করেন সাকিব ও মিরাজ। সাকিব প্রতি-আক্রমণের চেষ্টা করেছেন, ইনিংসে এখন পর্যন্ত মেরেছেন একটি করে চার ও ছয়। অবশ্য ভাগ্যের ছোঁঁয়াও পেয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। জোসেফের বলে ক্যাচ তুলেছিলেন, তবে অনেকটা ছুটে গিয়ে হাত লাগালেও ঠিকঠাক ক্যাচটা নিতে পারেননি সিলস। এরপর মিরাজের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তাঁর, রেমন রেইফার সরাসরি স্টাম্প ভাঙতে পারলে ফিরতে হতো মিরাজকে। তবে মধ্যাহ্নবিরতির সময় দুজনের জুটি অবিচ্ছিন্নই ছিল ৩১ রানে।