ঘুম থেকে উঠেই আফ্রিদি শুনলেন রেকর্ড নেই!
তখনো হয়তো দাঁতই মাজেননি। সারা হয়নি প্রাতরাশ। ঘুম ঘুম চোখে ২০১৪ সালে শহীদ আফ্রিদি প্রথম যে কথাটি শুনলেন তা হলো, তাঁর সেই বিখ্যাত রেকর্ডটি আর নেই! আফ্রিদির কাছে এই বার্তা বয়ে আনল তাঁরই ভাস্তে। কে ভাঙল এই রেকর্ড? আফ্রিদি এমন একজনের নাম শুনলেন, যে ক্রিকেটারের নাম তিনি আগে কখনোই শোনেননি!
আজ কুইন্সটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কুরে অ্যান্ডারসন যা করলেন, তা এক কথায় অভাবনীয়, অতুলনীয়! সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে মাত্র ৩৬ বলেই করে বসলেন সেঞ্চুরি! কথা হলো, ১৭ বছর যে রেকর্ড পরম মমতায় লালন করেছেন আফ্রিদি, সেটিই যখন নিউজিল্যান্ডের এক তরুণ তুর্কি ভেঙে দিলেন, তখন কেমন লাগছিল তাঁর?
অ্যান্ডারসনকে অভিনন্দন জানিয়ে আফ্রিদি অবশ্য বলছেন, ‘ওর নাম কখনোই শুনিনি। আজ খুব সকালে আমার ভাস্তে ওর (অ্যান্ডারসন) কীর্তির কথা আমাকে জানাল। ২০১৪ সালে আমার জন্য প্রথম সংবাদই ছিল এ রেকর্ড ভাঙার কথা!’ নতুন বছর ‘নেতিবাচক’ খবর দিয়েই শুরু হলো আফ্রিদির। বললেন, ‘আমি অবশ্য বলব, এটা অনেক বড় অর্জন। অ্যান্ডারসন প্রশংসার দাবিদার। ৩৬ বলে সেঞ্চুরি করতে হলে অবিশ্বাস্য খেলতে হয়। আর রেকর্ড গড়াই হয় ভাঙার জন্য। জানতাম, আমার রেকর্ডও কোনো একদিন ভাঙবে।’
৪ অক্টোবর ১৯৯৬। দিনটা আফ্রিদি কেন, ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্যই এক স্মরণীয় দিন। নাইরোবিতে ১৬ বছরের এক তরুণ মুরালি-ভাসদের কি কচুকাটাই না করেছিলেন সেদিন! প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট করতে নেমেই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেন আফ্রিদি। ৩৭ বলে সেঞ্চুরি! ক্রিকেটবোদ্ধাদের অনেকের ধারণা ছিল, ওয়ানডে ক্রিকেটের অন্য অনেক রেকর্ড ভাঙাগড়া দ্রুত হলেও টি-টোয়েন্টি যুগেও আফ্রিদির রেকর্ড অক্ষুণ্ন থাকবে অনেক দিন। কিন্তু সেই আপ্তবাক্যই সত্য প্রমাণ হলো—রেকর্ড গড়াই হয় ভাঙার জন্য।
নিজের রেকর্ড নিয়েও কম শ্লাঘা অনুভব করেন না পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক, ‘আমার অবসর নেয়ার সময়ই চলে এসেছে। এত দিন পর্যন্ত রেকর্ডটি দখলে ছিল। এটা পাকিস্তান ও আমার জন্য অনেক গৌরবের ব্যাপার। যখনই আমার নাম আসত, তখনই রেকর্ডটির কথা উল্লেখ করা হতো। এখন অ্যান্ডারসনের কথা বলা হবে। নিশ্চিত টি-টোয়েন্টির প্রভাবে এ রেকর্ডটিও ভবিষ্যতে ভেঙে যাবে।’
আফ্রিদি সব সময়ই প্রত্যাশা করেছেন, রেকর্ডটি ভাঙলে যেটি যেন ক্রিস গেইল কিংবা ডেভিড ওয়ার্নারই ভাঙেন। তাহলে কি অপাত্রে মাল্যদান হয়ে গেল? আফ্রিদির যুক্তি, ‘নতুন কেউ রেকর্ড ভাঙুক, সেটি কখনোই চাইনি। ভেবেছি গেইল যেভাবে ব্যাট চালায় এবং ছক্কা হাঁকায় কিংবা ওয়ার্নার যেভাবে ব্যাট করে, ওরাই রেকর্ডটা ভেঙে দেওয়ার যোগ্য।’