আগের দিন নামের পাশে ২ উইকেট নিয়ে দিন শেষ করেছিলেন। আজ দিনের শুরুতেই আলজারি জোসেফকে আউট করে তৃতীয় উইকেটের দেখা পেয়ে যান খালেদ আহমেদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলআউট হতে তখন আরও ৩ উইকেট বাকি। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম বাংলাদেশি পেসার হিসেবে পাঁচ উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা তখন খালেদের সামনে।
সে জন্যই কি না, টানা খালেদকে বোলিং করাচ্ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এর মাঝে বৃষ্টি ও মধ্যাহ্নবিরতি গেল, খালেদের অপেক্ষাও বাড়ল। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই অবশ্য আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন ২৯ বছর বয়সী এই পেসার। ১৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা কাইল মায়ার্সকে অফ কাটারে বোকা বানিয়ে ছাড়েন খালেদ।
এর ছয় ওভার পর, ইনিংসের ১২৬তম ওভারের পঞ্চম বলে বাঁহাতি জেইডেন সিলসকে গুডলেংথ থেকে ওবল সিমে বেরিয়ে যাওয়া বলে কট বিহাইন্ড করান খালেদ। উইকেটকিপার নুরুল হাসানও লাফিয়ে বলটি গ্লাভসবন্দী করেন। ততক্ষণে খালেদকে ঘিরে পুরো দলের উল্লাস শুরু হয়ে গেছে। যেন শুধু খালেদ নন, পুরো দল অপেক্ষায় ছিলেন খালেদের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেটের। ৩১.৩ ওভার বল করে ১০৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে পেসার হিসেবে বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ইবাদত হোসেন, নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইতে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ে তিনি ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন।
খালেদের পাঁচ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসেরও ইতি ঘটে। ৪০৮ রান করে অলআউট হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড ১৭৪ রান।
জবাবে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি মোটেও। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই কেমার রোচের অনেক বাইরের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন তামিম ইকবাল। ৮ বল খেলে মাত্র ৪ রান করেন তিনি। তামিমকে আউট করে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৫০তম উইকেট পান রোচ, যেটির অপেক্ষা বাড়ছিল তাঁর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ নিয়ে ১২ বার তামিমকে আউট করলেন এই উইন্ডিজ পেসার।
২৫১ ও ২৫২তম উইকেটের জন্যও রোচকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ইনিংসের সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলেই আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান আউট। ওভারের প্রথম দুটি বল ফুললেংথে পেয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান মাহমুদুল। কিন্তু তৃতীয় বলে লেংথ একটু পিছিয়ে আনেন রোচ। বলটি ওবল সিমে করায় অ্যাঙ্গেলে ভেতরে না এসে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যাওয়ার আগে মাহমুদুলের আউটসাইড এজ স্পর্শ করে যায়। ২১ বল খেলে ১৩ রান করে আউট হন মাহমুদুল।
রোচ আঘাত হানেন পরের ওভারেও। এবার শিকার চারে নামা এনামুল হক। বিশাল ইনসুইং ডেলিভারি ফ্রন্ট ফুট থেকে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লুর শিকার হন তিনি। এনামুল অবশ্য বলটি স্টাম্পের ওপর দিয়ে যাবে ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় বল স্টাম্পের মাথা ছুঁয়ে যেত। তাই আম্পায়ার্স কলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় এনামুলকে।
শুধু এনামুল নয়, বৃষ্টি নামায় দুই দলই মাঠ ছাড়ে তখন। আম্পায়ার জোয়েল উইলসন এনামুলের আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বৃষ্টিতে ভিজে আম্পায়ার্স রুমের দিকে দৌড়ে যেতে যেতে। রোচ ও তাঁর সতীর্থরা এনামুলের আউট উদ্যাপন করেছেন একই অবস্থায়। আর আবার আম্পায়ার্স কলে আরেকটি উইকেট পতনের হতাশা তখন বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে। দুই দল যখন মাঠ ছাড়ে, তখন বাংলাদেশের রান ৮.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ৩২, দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে ১৪২ রানে।