অ্যামব্রোসকে আর সম্মান করেন না গেইল
বয়স ৪২ পেরিয়ে গেছে ক্রিস গেইলের। তবে এবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে আছেন তিনি। সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাস্ট বোলার কার্টলি অ্যামব্রোসের কাছে অবশ্য গেইলের ‘দলে জায়গাটা পাকা’ নয়। অ্যামব্রোসের এ মন্তব্যই সহ্য হয়নি গেইলের। প্রকাশ্যেই পূর্বসূরিকে ধুয়ে দিয়েছেন তিনি। গেইল বলেছেন, কার্টলি অ্যামব্রোসের জন্য এখন আর ‘কোনো সম্মান নেই’ তাঁর।
বিশ্বকাপের আগে নিজেকে মানসিক দিক দিয়ে চাঙা করতে আইপিএল থেকে আগেভাগেই নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন গেইল। এর আগে অবশ্য এই লিগের সংযুক্ত আরব আমিরাত অংশে গেইল খেলেছেন মাত্র ২ ম্যাচ, করেছেন ১৫ রান। এর আগে সিপিএলে ৯ ম্যাচে ১৮.৩৩ গড়ে ১৬৫ রান ছিল তাঁর। অ্যামব্রোস মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, শেষ ১৮ মাসে পারফরম্যান্সটা ঠিক জুতসই নয় গেইলের।
২০২০ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে গেইল খেলেছেন ১৬টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। ১৭.৪৬ গড় ও ১১৭.৬১ স্ট্রাইক রেটে এ সময়ে ব্যাটিং করেছেন তিনি, করেছেন মাত্র ১টি ফিফটি।
গেইলের এখনো ঝড় তোলার সামর্থ্য আছে মনে করলেও অ্যামব্রোস সম্প্রতি বার্বাডোজের এক রেডিওতে বলেছেন, দলে ঠিক ‘অটোমেটিক চয়েস’ নন তিনি, ‘বিশ্বকাপে জ্বলে উঠতে পারে, এমন মনে হওয়ার মতো তেমন কিছু শেষ ১৮ মাসে সে করেনি। আমার কাছে শুরুর দিকের একাদশে গেইলের নামটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আসবে না তাই। শেষ ১৮ মাসের দিকে তাকালে দেখবেন, শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগগুলোতেও ভুগেছে সে। ঘরের মাঠে আমরা যেসব ম্যাচ খেলেছি, সেখানেও এমন আহামরি কিছু করেনি গেইল।’
অ্যামব্রোসের এমন সমালোচনাই তাতিয়ে দিয়েছে গেইলকে। সেন্ট কিটসের এক রেডিওতে গেইল বলেছেন, ‘আমি কার্টলি অ্যামব্রোসের কথা বলছি। আপনাদেরই একজন কার্টলি অ্যামব্রোসের কথা আলাদা করেই বলছি আমি। যখন প্রথম দলে এসেছিলাম, তাঁর প্রতি সম্মান ছিল আমার। দলে আসার পর এই লোককে অনুসরণ করতাম। তবে এখন মন থেকে বলছি, কেন জানি অবসর নেওয়ার পর থেকেই সে ক্রিস গেইলের বিপক্ষে। সংবাদমাধ্যমে সব নেতিবাচক কথা বলে সে মনোযোগ কাড়তে চায় কি না, জানি না; তবে সে মনোযোগটা পাচ্ছে। আমিও তাকে সেটাই দিচ্ছি, যেটা তার দরকার।’
নেতিবাচক কথা বলতে থাকলে কারও মুখের ওপর সম্মানহানিকর কিছু বলতে ‘‘ইউনিভার্স বস’-এর বাধবে না বলেও ‘সতর্ক’ করে দেন গেইল, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে বলছি। তাকে জানিয়ে দেবেন, ইউনিভার্স বস ক্রিস গেইলের কার্টলি অ্যামব্রোসের প্রতি কোনো সম্মানবোধ নেই। তার সঙ্গে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে আমার। দেখা হলেই আমি তাকে বলব, এমন নেতিবাচক হবেন না, বিশ্বকাপের আগে দলকে সমর্থন দিন।’
এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে একাধিকবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১২ ও ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়ন দলের অংশ ছিলেন গেইল। এবারও তাদের লক্ষ্য শিরোপা, গেইল মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটাই, ‘আমরা দুবার শিরোপা জিতেছি, তৃতীয়বার জেতার লক্ষ্যে নামব। দলটা দেখেছে কী হচ্ছে। এটা দলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের কথায় কান দেব না। কার্টলি অ্যামব্রোস, নিজের কাজকর্ম একটু ঠিকঠাক করো, কেমন? ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সমর্থন করো। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সমর্থন করা, ব্যাপার তো সেটাই।’
দলটা ‘নির্বাচন’ করা হয়েছে এবং সাবেক ক্রিকেটারদের সমর্থন দরকার বলেও মনে করেন গেইল। অন্য দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা নিজ দলের প্রতি সমর্থন জোগালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজে এমন হবে না কেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।