অভিজ্ঞতাই শক্তি ঢাকার

২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসর। ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের ঘরোয়া এই টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে কোন দলের শক্তি কেমন, তা নিয়েই এই ধারাবাহিক প্রতিবেদন। আজ প্রথম পর্বে পড়ুন মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে—

বিপিএলের ড্রাফটে মাহমুদউল্লাহ ও তামিম ইকবাল: দুজনেই এবার ঢাকারছবি: শামসুল হক

ঢাকার দল নিয়ে হইচইটা একটু বেশিই হয় বিপিএলে। টাকার ঝনঝনানি আর তারকাদের ভিড় যে এই দলেই বেশি থাকে! এবার তো ঢাকাকে নিয়ে অন্য কারণেও আলোচনা ছিল। খেলোয়াড় ড্রাফটের আগের দিন জানা যায়, নির্ধারিত সময়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি জমা না দেওয়ায় রুপা ফেব্রিকস ও মার্ন স্টিলকে ঢাকার মালিকানা দেয়নি বিসিবি। এরপর বিসিবিই সাজায় দলটি। পরে অবশ্য ঢাকার মালিকানা কিনেছে মিনিস্টার গ্রুপ। এবারের বিপিএলে ‘মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা’ নামেই খেলবে ঢাকার দলটি।

ঢাকার দলে এবারও যথারীতি অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে ড্রাফটের আগেই দলে নিয়েছে তারা। এরপর ড্রাফট থেকে বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকেও নিয়ে ঢাকা হয়ে যায় কাগজে-কলমে সবচেয়ে শক্তিশালী দলগুলোর একটি। তিন অধিনায়কের সঙ্গে আছেন জাতীয় দলের মোহাম্মদ নাঈম, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম ও শুভাগত হোমের মতো ক্রিকেটাররা। কন্ডিশন পক্ষে থাকলে গতিময় বোলারের অভাবটা পুষিয়ে দেবেন ইবাদত হোসেন। সঙ্গে অভিজ্ঞ মাশরাফি তো আছেনই। টপ অর্ডারে তামিমের উপস্থিতি ব্যাটিংয়ের শুরুটা নিয়ে আশাবাদী হতে বলে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের কন্ডিশনে মাশরাফি ও তামিমের অভিজ্ঞতা অন্যদের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে ঢাকাকে।

বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে পেয়েছে ঢাকা
ছবি: প্রথম আলো

ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দলের ভারসাম্যটা গড়বেন মূলত মাহমুদউল্লাহ ও শুভাগত। দুজনের অফ স্পিন ঢাকা ও সিলেটের মাঠে বেশ কার্যকর হবে বলে আশা দলটির। সঙ্গে তাঁদের ব্যাটিং তো আছেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুজনের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও চোখে পড়ার মতো। ঢাকা চমক দেখিয়েছে ড্রাফটের বাইরে থেকে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে নিয়ে। সুযোগ পেলে তিনিও হয়ে উঠতে পারেন দলের কালো ঘোড়া। এ ছাড়া আরাফাত সানি, জহুরুল ইসলাম, শামসুর রহমানদের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল ক্রিকেটাররাও খেলবেন ঢাকার হয়ে।

বিদেশিদের মধ্যে আলাদা করেই বলতে হয় আফগানিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান নজিবউল্লাহ জাদরান ও উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শেহজাদের কথা। আরেক আফগান লেগ স্পিনার কায়েস আহমেদ বিগ ব্যাশ ছেড়ে আসবেন বিপিএলে ঢাকার হয়ে খেলতে। টি-টেন লিগে ভালো করা আফগান তরুণ ফজল হক ফারুকিও অন্য দলগুলোকে চমকে দিতে পারেন।

মাহমুদউল্লাহর হাতেই উঠতে যাচ্ছে ঢাকার অধিনায়কত্ব
ছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় ও বিদেশি ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিয়েই দল সাজিয়েছে ঢাকা। দলের সম্ভাব্য অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ড্রাফট শেষেই বলেছিলেন, ‘আমি সব সময় বিশ্বাস করি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিজ্ঞতার মূল্য অনেক। আমাদের দলটাও অভিজ্ঞ। মাঠে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগালে ভালো করা সম্ভব।’

মাহমুদউল্লাহ-তামিমদের সঙ্গে আবার একই দলে খেলবেন, তাতেই রোমাঞ্চিত মাশরাফি। সংবাদমাধ্যমে কদিন আগেই এ নিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো। তামিম অনেক বড় নাম। তবে এটার প্রভাব কতটুকু থাকবে, সেটা মাঠের ক্রিকেটেই বোঝা যাবে। আর মাহমুদউল্লাহর বিষয়টা তো আলাদাই—সে এখন টি–টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। দেশের টি-টোয়েন্টিতে অন্যতম সেরা পারফর্মার।’

মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার প্রধান কোচ মিজানুর রহমান। নাসিরুদ্দিন ফারুক আছেন সহকারী কোচ হিসেবে। নির্বাচক হাবিবুল বাশারেরও সম্পৃক্ত থাকার কথা দলটির ব্যবস্থাপনার সঙ্গে।

মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা

মাহমুদউল্লাহ, নজিবউল্লাহ জাদরান, ইসুরু উদানা, কায়েস আহমেদ, তামিম ইকবাল, রুবেল হোসেন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, শুভাগত হোম চৌধুরী, মোহাম্মদ নাঈম, আরাফাত সানি, মোহাম্মদ শেহজাদ, ফজল হক ফারুকি, ইমরান উজ জামান, শফিউল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, শামসুর রহমান, ইবাদত হোসেন।