কেমন ছিলেন অধিনায়ক তামিম
হুট করে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন, এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসর থেকে ফিরে আসেন। এবার অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তামিম ইকবাল। আজ বিসিবি সভাপতির বাসায় এক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তামিম। কয়েক দিনের মধ্যে নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর তামিম বলেছেন, ‘ভ্রমণটা দারুণ ছিল, ফলই কথা বলবে। আমি ভালো করেছি। তবে যদি অধিনায়ক থাকতাম, তাহলে স্বার্থপরের মতো হতো। যারা আমাকে চেনে, (তারা জানে) আমি সব সময় দলকে এগিয়ে রাখি। এটিই আমার হয়ে কথা বলবে।’
অধিনায়ক হিসেবে না থাকলেও যিনি তাঁর জায়গায় আসবে, তাঁকে সহায়তা করার আশ্বাস দেন তামিম, ‘একাদশে খেললে যে অধিনায়ক থাকবে তাকে সহায়তা করব।’
ফলে এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে তামিমের অধিনায়কত্ব-যাত্রা। ওয়ানডেতে তামিম অধিনায়কত্ব করেছেন ৩৭ ম্যাচে, যেখানে তাঁর জয় ২১ টি, অর্থাৎ জয়ের হার ৫৬.৭৫। বাংলাদেশ ক্রিকেট অধিনায়ক হিসেবে যাঁকে আলাদা জায়গা দেওয়া হয়, সেই মাশরাফি বিন মুর্তজার চেয়ে তামিমের জয়ের শতাংশ মাত্র দশমিক শূন্য ৬ কম। ৮৮ ম্যাচে ৫০ জয়ে অধিনায়ক মাশরাফির সাফল্যের হার ৫৬.৮১।
তামিম পূর্ণ মেয়াদে বাংলাদেশের অধিনায়ক হন ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এর আগেও ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তবে সেটা আপত্কালীন। ২০১৯ বিশ্বকাপের পরপরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফির চোটের কারণে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করা হয়েছিল তামিমকে। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে শ্রীলঙ্কার কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারা তামিম পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন শুরু করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ হারে তামিমের বাংলাদেশ। তবে সেই হারের পর শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।
ওয়ানডেতে তামিম অধিনায়ক হওয়ার আগে থেকেই বাংলাদেশ ভালো দল। শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে-এদের হারানো কোনো অর্থেই নতুন কিছু নয়। তবে ওয়ানডেতে অধিনায়ক হিসেবে তামিম যে সফল, এর সবচেয়ে বড় সাইনবোর্ড দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ওয়ানডে সিরিজ। ২০ বছর অপেক্ষার পর গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবার সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এই সিরিজ জয়ের মাহাত্ম্য আরও বাড়বে একটা পরিসংখ্যানে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতের ওয়ানডে সিরিজ জিততে সময় লেগেছে ২৬ বছর, আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কার মতো দল কখনো জিততেই পারেনি।
সর্বশেষ আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারের পরই আচমকা অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। ফলে পূর্ণ মেয়াদে অধিনায়ক হিসেবে শেষ ম্যাচে হারের রেকর্ড থাকল তাঁর।