নিগারের ঝোড়ো ফিফটি, ফারিহার হ্যাটট্রিকে মালয়েশিয়াকে পাত্তা দিল না বাংলাদেশ
ম্যাচের ফলাফলটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল প্রথম ইনিংসেই। মুর্শিদা খাতুন ও অধিনায়ক নিগার সুলতানার ফিফটিতে বাংলাদেশ নারী দল ৫ উইকেটে ১২৯ রান করে ফেলে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ১ নম্বর মাঠের মন্থর আউটফিল্ডে এই রান মালয়েশিয়ার মেয়েরা টপকে যাবেন, ইনিংস–বিরতিতে এমন ভাবার মতো খুব বেশি মানুষ থাকার কথা নয়। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তা–ই। ৮৮ রানের বিশাল জয়ে সিলেটের সোনালি বিকেল রাঙিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। তাতে বাড়তি রং যোগ করেছেন ফারিহা ইসলাম, অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করে।
বাংলাদেশের প্রত্যাশিত জয় দেখতে আসা দর্শকদের জন্য বিনোদনের কমতি ছিল না মোটেও। বড় একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য ফারিহা ইসলামের। দুপুরের রোদে ঝিমিয়ে পড়া সিলেটের দর্শকদের তিনি উল্লাসে মাতিয়েছেন হ্যাটট্রিক করে। সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের অভিষেক ম্যাচটাও রাঙিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের পর আবার জয়ের ধারায় ফিরল বাংলাদেশ।
ফারিহা ইসলামের সৌজন্যে মালয়েশিয়ার মেয়েদের ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি। ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ১৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারান তাঁরা। ৩টিই পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে, টানা ৩ বলে। ফারিহার তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলটি মালয়েশিয়ার অধিনায়ক উইনিফ্রেড দুরাইসিঙ্গামের স্টাম্প ভেঙে দেয় দুর্দান্ত ইনসুইংয়ে। সুইং ছিল পরের বলেও। সেটিতেও এলবিডব্লুর শিকার নতুন ব্যাটার মাস এলিসা।
পরে আরেকটি ইনসুইং ডেলিভারিতে ফারিহা বোল্ড করেন আরেক নতুন ব্যাটার মাহিরাহ ইজ্জাতি ইসমাইলকে। ফাহিমা খাতুনের পর মাত্র দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে মেয়েদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করা ফারিহাকে ঘিরে দলের বাঁধভাঙা উদ্যাপন শুরু হয় এরপরই।
অবশ্য আজ এমন উদ্যাপনের দৃশ্য নিয়মিতই দেখা গেছে। বাংলাদেশ বোলাররা এসেছেন, আর মালয়েশিয়ার উইকেটের পতন ঘটেছে। মালয়েশিয়ার কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। মালয়েশিয়ার ইনিংসও থেমেছে মাত্র ৪১ রানে। মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট নেওয়া ফারিহাই ছিলেন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রুমানা আহমেদ, সানজিদা আক্তার ও চোট থেকে দলে ফেরা লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন। ১ উইকেট নিয়েছেন সালমা খাতুন। নিগার এদিন বোলিং করিয়েছেন সাতজনকে দিয়ে।
বোলিং–দাপটের দিনে অবশ্য ম্যাচসেরা হয়েছেন অধিনায়ক নিগার। ইনিংসের প্রথম বলেই শারমিন সুলতানাকে হারানোর পর শুরুটা একটু এলোমেলোই হয় আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ইনিংসের। মন্থর শুরুর পর নিগারের ব্যাটেই গতির সঞ্চার হয়। অবশ্য নিগারের আগে ৫৪ বল খেলে ৫৬ রান করে বাকিদের জন্য মঞ্চ গড়ে দেন দলে ফেরা ওপেনার মুর্শিদা খাতুন। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে আরও দ্রুত রান তুলতে পারতেন তিনি। এই বাঁহাতির বেশ কিছু ভালো ড্রাইভ গ্যাপ খুঁজে পেলে মুর্শিদার ব্যাট থেকে আসা বাউন্ডারির সংখ্যাটা ৬-এর চেয়ে বেশি হতে পারত।
তবে সে আক্ষেপ পুষিয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক নিজেই। ৩৪ বল খেলে ৫৩ রান করে বাংলাদেশের রানটাকে মালয়েশিয়ান মেয়েদের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান তিনি। ৬টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল নিগারের ইনিংসে।