আইপিএল অভিষেকের রাতটাকে এত দিনে হয়তো ভুলেই গেছেন মার্ক উড। ৪ ওভারে বিলিয়েছিলেন ৪৯ রান, নিতে পারেননি কোনো উইকেট। ‘শুধু গতি আছে, মাথায় ঘিলু নেই’—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলের শিকার হতে হতে এমন কথাও শুনতে হয়েছিল। ২০১৮ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলা ওই ম্যাচটাই ছিল এত দিন আইপিএলে তাঁর প্রথম ও একমাত্র অভিজ্ঞতা।
৫ বছর পর সেই উড কী দুর্দান্তভাবেই না ফিরলেন আইপিএলে! গতির ঝড় তোলার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত লাইন–লেন্থের পসরা সাজালেন উড। তাঁর ১৪৭ কিলোমিটার বেগের একেকটা গোলায় চোখে যেন শর্ষে ফুল দেখল দিল্লি ক্যাপিটালস ব্যাটসম্যানরা। কদিন আগে ইংল্যান্ডের হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসা এই ফাস্ট বোলারের ৫ উইকেটেই শুভ সূচনা করল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। ঘরের মাঠ ভারতরত্ন অটল বিহারি বাজপেয়ী স্টেডিয়ামে দিল্লিকে তারা হারাল ৫০ রানের বড় ব্যবধানে। আইপিএলের গত মৌসুমে অভিষেক হওয়া লক্ষ্ণৌ এখন পর্যন্ত মুখোমুখি তিন লড়াইয়েই হারিয়ে দিল ভারতের রাজধানীর ফ্র্যাঞ্চাইজিকে।
টস হেরে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৯৩ রান করে লক্ষ্ণৌ। আইপিএল অভিষেকেই ঝোড়ো ফিফটি উপহার দেন কাইল মেয়ার্স। রান তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৪৩ রানে থামে দিল্লি। ১৪ রানে ৫ উইকেট নেওয়া উডই হয়েছেন ম্যাচসেরা।
লক্ষ্ণৌকে জেতানোর পথে দ্বিতীয় ইংলিশ বোলার হিসেবে ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েছেন উড। ২০১২ সালে প্রথম ইংলিশ বোলার হিসেবে ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন দিমিত্রি মাসকারেনহাস।
সকালে নিজেদের পাঠানো বিশেষ বিমানে মোস্তাফিজুর রহমানকে ঢাকা থেকে উড়িয়ে নিয়ে যায় দিল্লি। তবে বাংলাদেশের তারকা পেসারকে শুরুর একাদশ তো দূরের কথা, ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়দের তালিকাতেও রাখেনি দিল্লি।
মোস্তাফিজের অনুপস্থিতিতে দিল্লির অনভিজ্ঞ পেস বোলাররা খুব একটা ভালো করতে পারেননি। তিন পেসার চেতন সাকারিয়া, খলিল আহমেদ ও মুখেশ কুমার মিলিয়ে ওভারপ্রতি প্রায় ১০ করে দান দিয়েছেন (১২ ওভারে ১১৭)। তিনজনের মধ্যে বেদম মার খেয়েছেন সাকারিয়া।
রান তাড়ায় শুরুটা অবশ্য ভালোই করেছিল দিল্লি। ৪ ওভারে ৪০ রান তুলে ফেলেছিল তারা। তবে পঞ্চম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন উড। টানা দুই বলে বোল্ড করেন পৃথ্বী শ ও মিচেল মার্শকে। পরে আউট করেন সরফরাজ খান, অক্ষর প্যাটেল ও সাকারিয়াকে।
উডের গতির সামনে অসহায়ই মনে হয়েছে দিল্লির ব্যাটসম্যানদের। যা একটু লড়াই করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে ওয়ার্নারের স্বভাববিরোধী ইনিংস (৪৮ বলে ৫৬) টি–টোয়েন্টির দাবি মেটাতে পারেনি মোটেও। দিল্লিও পারেনি জয়ের নাগালে পৌঁছাতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস : ২০ ওভারে ১৯৩/৬
(মেয়ার্স ৭৩, পুরান ৩৬, বাদোনি ১৮; খলিল ২/৩০, সাকারিয়া ২/৫৩, কুলদীপ ১/৩৫)
দিল্লি ক্যাপিটালস : ২০ ওভারে ১৪৩/৯
(ওয়ার্নার ৫৬, রুশো ৩০, অক্ষর ১৬; উড ৫/১৪, আবেশ ২/২৯, বিষ্ণই ২/৩১)
ফল : লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ৫০ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মার্ক উড