ক্যারিয়ারে ‘শেষের শুরু’ হওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। সবাই ধরে নিয়েছিলেন, এবারের ইউএস ওপেন দিয়েই হয়তো অসাধারণ ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন সেরেনা।
প্রথম রাউন্ডে কাল তিনি কোর্টে নামার পর সেই প্রস্তুতিও ছিল অনেকের। গ্যালারিতে ছিলেন অপরা উইনফ্রে ও বিলি জিন কিংদের মতো তারকারা। সারা বছরে ট্যুরে সেরেনা ম্যাচ জিতেছেন মাত্র একটি, র্যাঙ্কিং নেমে গেছে ৬০৫ নম্বরে। কে জানে, ৪০ বছর বয়সী কিংবদন্তির এটাই হয়তো শেষ ম্যাচ!
ভুল। ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডে সেরেনা কখনো হারেননি। এ পরিসংখ্যান যাঁদের জানা, সেরেনাকে নিয়ে তাঁরা বোধ হয় নিশ্চিত ছিলেন, প্রথম রাউন্ডে অন্তত তাঁর অবসর নেওয়ার ঘোষণা আসার কোনো কারণ নেই। মন্টেনিগ্রোর ডাঙ্কা কোভিনিচকে ৬-৩, ৬-৩ গেমে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পর সেরেনাও জানালেন, অবসর নিয়ে নতুন কথা—এখনো ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।
ওপেন যুগে সর্বোচ্চ ২৩টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী সেরেনার ‘শেষের শুরু’ যেহেতু শুরুই হয়েছে, অপরা ও বিলি জিন তাই গ্যালারিতে চলে এসেছিলেন। অপরা উইনফ্রে সেরেনার জয় উদ্যাপনের সময় বলেছেন, ‘কী আর বলব! চোখের পলকে বছরগুলো কেটে গেল। ’৯৮ মনে হচ্ছে গতকালের কথা। তুমি আমাদের অনেক দিয়েছ। আমরা শুধু ধন্যবাদই বলতে পারি।’
অপরার কথায় সেরেনার অবসর নেওয়ার ইঙ্গিত থাকলেও কিংবদন্তি নিজেই জানিয়েছেন, অবসর নিয়ে তিনি নিশ্চিত করে এখনই কিছু বলতে পারছেন না। আগস্টের শুরুতে ‘ভোগ’ সাময়িকীতে লেখা নিজের কলামে অবসরের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সেরেনা। কিন্তু কখনোই বলেননি, ইউএস ওপেনই হতে যাচ্ছে তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টুর্নামেন্ট।
তবে অবসর নেওয়ার ভাবনাটা যে সেরেনার মাথায় ভালো মতোই জেঁকে বসেছে, সেটাও বোঝা গেল ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে, ‘এটা খুবই কঠিন (অবসর নেওয়া)। কারণ, আমি এখনো খেলতে ভালোবাসি। যত বেশি টুর্নামেন্ট খেলি, ততই এটা মনে হয়। কিন্তু এখনই সময়, অন্য কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার।’
ইউএস ওপেনই তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টুর্নামেন্ট কি না, এ নিয়ে সংবাদকর্মীরা সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন সেরেনার কাছে। সবাইকে ধোঁয়াশার মধ্যেই রাখলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই কিংবদন্তি, ‘আমি এটা নিয়ে এখনো ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। এভাবেই থাকতে চাই। কারণ, সামনে কী হবে, জানি না।’
জয়ের পর সেরেনা বলেছেন, ‘আমি এটা (অবসর) নিয়ে বেশ ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। এভাবেই থাকতে চাই। কারণ সামনে কী ঘটবে, জানি না।’
মেয়েদের এককে অন্য ম্যাচে দুবারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী সিমোনা হালেপকে প্রথম রাউন্ডে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন ইউক্রেনের দারিয়া সিনিগুর। সপ্তম বাছাই হালেপকে ৬–০, ০–৬ ও ৬–৪ গেমে হারান তিনি।
সিনিগুরের ক্যারিয়ারে এটাই সবচেয়ে স্মরণীয় জয়। ইউক্রেনের যুদ্ধপীড়িত জনগণকে এই জয় উৎসর্গ করে সিনিগুর বলেছেন, ‘এই জয় ইউক্রেনের মানুষের জন্য, আমার পরিবার ও দলের জন্য।’