২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ধারাভাষ্য ছেড়ে দিচ্ছেন ইয়ান চ্যাপেল

ইয়ান চ্যাপেলফাইল ছবি: এএফপি

দীর্ঘ ৪৫ বছরের ধারাভাষ্য ক্যারিয়ারের অবসান ঘটল। চার যুগের বেশি সময় ধরে মাইক্রোফোনের সামনে এন্তার গল্প বলেছেন ক্রিকেটের, বিশ্লেষণ করেছেন ক্ষুরধার, কখনো উচিত কথা মুখের ওপর বলতেও ছাড়েননি। ক্রিকেটের পুরোনো গল্পগাথা, স্মৃতির ভান্ডার খুলে অসাধারণ সব শব্দচয়নে সেসব গল্পের মতো করে বলায় ইয়ান চ্যাপেলের সমকক্ষ কেউ আছেন?

উত্তরটা তর্কের অংশ, তবে কথাগুলো বলতে হচ্ছে কারণ ধারাভাষ্য থেকে অবসর নেওয়ার কথা ভাবছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যে কিংবদন্তি মর্যাদা পাওয়া ইয়ান চ্যাপেল। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’কে চ্যাপেল জানিয়েছেন, ধারাভাষ্য থেকে অবসর নেওয়ার কথা তিনি বহুদিন ধরেই ভাবছিলেন।

ধারাভাষ্য থেকে অবসর প্রসঙ্গে তাঁর উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে ইএসপিএনক্রিকইনফো, ‘ক্রিকেট যথেষ্ট খেলে ফেলেছি, এটা বোঝার দিনটা আমার মনে আছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বেলা ১১টা বেজে ৫ মিনিট। ভাবলাম, (খেলা বাদ দিয়ে) যদি ঘড়িই দেখি তাহলে তো যেতে হবে! ধারাভাষ্য নিয়েও ভাবছি। কয়েক বছর আগে “মাইনর স্ট্রোক” হয়, ভাগ্য ভালো যে বেঁচে গেছি। তবে এরপর সবকিছু কঠিন হয়ে গেছে। এই যে এত ভ্রমণ, সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা—এসব কিছুই কঠিন হয়ে গেছে।’

চ্যাপেল নিজের অবসর-ভাবনা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি রাগবি ধারাভাষ্যকার রে ওয়ারেনের উদাহরণও দিয়েছেন, ‘অবসর নিয়ে র‍্যাবিটস (রে ওয়ারেন) যে কথাগুলো বলেছেন, সেগুলোও মনে গেঁথে গেছে—“একটা ভুল করা থেকে তুমি মাত্র একটি শব্দ দূরে।”’

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭৫ টেস্ট ও ১৬ ওয়ানডে খেলা চ্যাপেল খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষে ধারাভাষ্য কক্ষে যোগ দেন। অস্ট্রেলিয়ার টিভি চ্যানেল ‘চ্যানেল নাইন’-এর কিংবদন্তি ধারাভাষ্য দল রিচি বেনো, বিল লরি, টনি গ্রেগের সঙ্গে মাইক্রোফোন মাতিয়েছেন তিন দশকেরও বেশি সময়। চ্যানেল নাইনের সঙ্গে যে সব সময় ভালো সম্পর্ক ছিল তা কিন্তু নয়।

সেসব কথাও জানিয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই অধিনায়ক, ‘কেরি (কেরি প্যাকার, চ্যানেল নাইনের মালিক) আমাকে বেশ কয়েকবার ছাঁটাই করতে চেয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে তার অনেক মাতামাতি ছিল, এটা তো তাঁর কাছে সন্তানের মতোই ছিল। আমি হয়তো ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে কিছু বলতাম, কেরির কাছে এগুলো ছিল ঝড়ের মতো। তবে আমরা এগুলো মেনে নিয়ে পরের ঝড়ের জন্য অপেক্ষা করতাম।’

ধারাভাষ্যকার হিসেবে সবাই তাঁকে কীভাবে মনে রাখবে, চ্যাপেলের নিজের চাওয়া কী—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বলেছেন, ‘আমাকে নিয়ে লোকের ভাবনা কী, সেটা তাদের ভাবার বিষয়। কেউ হয়তো ভাববে, আমি ঠিকঠাকমতোই সব করেছি। কেউ আবার তা ভাববে না। এ নিয়ে আমি ভাবছি না।’ সাম্প্রতিক বছরগুলোয় স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়েছেন চ্যাপেল। ২০১৯ সালে তাঁর ত্বকের ক্যানসার ধরা পড়ে। তবে মাইক্রোফোনের সামনে বসা ছাড়াও ইএসপিএনক্রিকইনফোয় নিয়মিত কলাম লিখতে দেখা যায় চ্যাপেলকে।