মিলিয়ন ডলারের প্রথম নারী ফুটবলার যুক্তরাষ্ট্রের গিরমা
বেশ কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। বলাবলি হচ্ছিল, মেয়েদের ফুটবলে মিলিয়ন ডলারের প্রথম ট্রান্সফার ফির রেকর্ড গড়তে পারেন যুক্তরাষ্ট্র নারী ফুটবল দলের ডিফেন্ডার নাওমি গিরমা। চেলসির সঙ্গে সফল আলোচনার পর সেই গুঞ্জন এখন বাস্তবে রূপ নেওয়ার পথে। মেয়েদের ফুটবলে ট্রান্সফার ফির রেকর্ড গড়ে সান ডিয়েগো ওয়েভ থেকে ইংল্যান্ডের ক্লাব চেলসিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন গিরমা। সব আলোচনাই শেষ, চুক্তির সব শর্ত মেনে নিয়েছে দুই পক্ষই, এখন শুধু সই করাটাই বাকি। সে কাজটুকু হয়ে গেলে গিরমা হয়ে যাবেন ইতিহাস।
গিরমার জন্য ১.১ মিলিয়ন বা ১১ লাখ ডলার ট্রান্সফার ফি দিচ্ছে চেলসি। এর আগে মেয়েদের ফুটবলে সর্বোচ্চ ট্রান্সফার রেকর্ডটি ছিল জাম্বিয়ার র্যাচেল কুন্দানানজির। গত বছর মাদ্রিদ নারী ফুটবল ক্লাব থেকে ৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার ট্রান্সফার ফিতে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব বে এফসি। তবে গিরমার সঙ্গে কুন্দানানজির একটা পার্থক্য আছে, গিরমা ডিফেন্ডার, কুন্দানানজি ফরোয়ার্ড। ফুটবলের দলবদলে সাধারণত ক্লাবগুলো ট্রান্সফারে বেশি ব্যয় করে ফরোয়ার্ডদের জন্য। তাঁদের সাফল্যটা ফুটবলপ্রেমীদের কাছে বেশি দৃশ্যমান। কারণ, তাঁরা গোল করেন, গোল করান। সেখানে একজন ডিফেন্ডারের কাজটা সেভাবে চোখে পড়ে কম। তাই একজন ডিফেন্ডার হয়েও গিরমার এমন মাইলফলক গড়া একটু বেশিই মাহাত্ম্যের।
ছেলেদের ফুটবলে মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হাতে গুনে শেষ করা যাবে না। সেই ১৯৬৮ সালে ইতালির ফরোয়ার্ড পিয়েত্রো আনাস্তাসি ভারেসে থেকে জুভেন্টাসে নাম লিখিয়েছিলেন ৫ লাখ পাউন্ডে। সেই সময় ১ পাউন্ডের মূল্য ছিল ২.৩৯ মার্কিন ডলার। অর্থের অঙ্কে আনাস্তাসিই মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার ফিতে বিক্রি হওয়া প্রথম খেলোয়াড়। গত কয়েক দশকে তো ছেলেদের ফুটবলে ট্রান্সফার ফি রকেট গতিতে বেড়েছে। ট্রান্সফার ফির বর্তমান রেকর্ডটি ব্রাজিলের তারকা নেইমারের। ২০১৭ সালে বার্সেলোনা থেকে ২০ কোটি ইউরো বা ২৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার ট্রান্সফার ফিতে নাম লিখিয়েছিলেন পিএসজিতে।
ফেরা যাক গিরমার দলবদলে। তাঁকে নিয়ে জোর লড়াই হয়েছে চেলসি ও অলিম্পিক লিওঁর। প্রশ্ন আসতে পারে একজন ডিফেন্ডার হয়েও দলবদলের বাজারে গিরমার এত চাহিদা কেন! কয়েক বছর ধরেই নিজের প্রতিভার ঝলক দেখিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের নারী দলের এ ফুটবলার। ২০২২ সালে তাঁকে ন্যাশনাল উইমেন সকার লিগের ড্রাফটে প্রথম পছন্দ হিসেবে দলে ডাকে সান ডিয়েগো ওয়েভ। সেই মৌসুমে ন্যাশনাল উইমেন সকার লিগের সেরা ডিফেন্ডার হন গিরমা।
সেই সাফল্যের পর তিন বছরের জন্য তাঁকে চুক্তিবদ্ধ করে সান ডিয়েগো ওয়েভ। পরের মৌসুমেও লিগের সেরা ডিফেন্ডার নির্বাচিত হন গিরমা। যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় দলেও দারুণ কার্যকর। ২০২৪ অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের সোনা জয়ে অসামান্য ভূমিকা ছিল তাঁর। দলকে অলিম্পিক সোনা জিতিয়ে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ষসেরা নারী ফুটবলারেরও পুরস্কার জিতেছেন গিরমা।