৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পকে ভেবেছিলেন গা মালিশের কৌশল
সমুদ্রের পাশে শহরটা, মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্পের কাঁপাকাঁপি টের পাওয়া যায়। মেক্সিকোর গেরেরো রাজ্যের সেই আকাপুলকু শহরে চলছে এটিপি ট্যুরের মেক্সিকান ওপেন। আজ সেখানে সেমিফাইনালের ম্যাচ চলাকালে আঘাত হানল ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প!
জার্মান তরুণ সেনসেশন আলেক্সান্ডার জভেরভ তখন লড়ছিলেন ডমিনিক কোয়েফারের সঙ্গে। সৌভাগ্যবশত, কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ম্যাচ বন্ধ থাকেনি এক সেকেন্ডও।
তবে এর মধ্যে হাস্যরসের জোগান দিচ্ছে তার কিছুক্ষণ আগেই ডাবলসে খেলে যাওয়া ব্রিটিশ জুটি কেন স্কুপস্কি ও নিল স্কুপস্কির অনুভূতি। ম্যাচ শেষে নিল তখন ‘ম্যাসাজ’ নিচ্ছিলেন। এর মধ্যে ভূমিকম্পের কাঁপাকাঁপিতে তাঁর মনে হয়েছিল, এটাও বুঝি গা মালিশের কোনো কৌশল!
জো সালিসবুরি ও রাজিব রাম জুটিকে হারিয়ে ছেলেদের ডাবলসের ফাইনালে উঠছেন স্কুপস্কিরা। এরপর ধকল কাটাতে গা মালিশ নিচ্ছিলেন নিল স্কুপস্কি। প্রায় সব অ্যাথলেটই তা করেন। তা ম্যাসাজ টেবিলে নিল যখন শুয়ে, আঘাত হানল ভূমিকম্প। অত বেশি মাত্রার ভূমিকম্প নয় আর ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে দূরে বলেই হয়তো, মৃদু কাঁপাকাঁপি ছাড়া তেমন কিছুই টের পাননি নিল।
ওই কাঁপাকাঁপিটা কেমন ছিল, সেটি বুঝতে পারবেন নিলের কথায়, ‘আমি আসলে ভেবেছিলাম এটা উনার (ম্যাসিওর) কোনো গা মালিশ করার কৌশল। কারণ, টেবিলটা নড়ছিল। আমি ভেবেছিলাম এটা স্বাভাবিকই!’
এরপর অবশ্য একটু বিপদেই পড়ে যাচ্ছিলেন নিল, ‘এরপর তাঁর ফোনে অ্যালার্ম বেজে উঠল। তখন আমার মনে হলো, ব্যাপারটা অদ্ভুত তো! এরপর তিনি বললেন, “ভূমিকম্প হচ্ছে, আমাদের বের হতে হবে।” ভবন থেকে বের হওয়ার মতো কাপড়ও আমি দ্রুত গায়ে জড়াতেও পারিনি।’
নিলের সঙ্গী কেন কাপুস্কি অবশ্য একটু ভয়ই পেয়েছিলেন। ক্ষণস্থায়ী ওই ভূমিকম্প নিয়ে তাঁর অনুভূতি, ‘সম্ভবত পাঁচ সেকেন্ডের মতো ছিল ভূমিকম্পটা। কিন্তু পুরো বিল্ডিং যে কাঁপছে, সেটা বোঝাতে অতটুকুই যথেষ্ট ছিল।’
তবে ছোট মাত্রার এই ভূমিকম্পের পর এখন বড় কিছুর শঙ্কায় আছেন কেন কাপুস্কি, ‘ভয় ধরিয়ে দিতে অতটুকুই যথেষ্ট ছিল, কারণ এর আগে আমি কখনো ভূমিকম্প টের পাইনি। আশা করছি, এটার পর এখানে আর ভূমিকম্প হবে না। কারণ যেমনটা হয়, আগামী কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যে আরও বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা আছে।’
সে পরের ব্যাপার, তবে আজ ভূমিকম্পের মধ্যে ছেলেদের এককে জভেরভদের ম্যাচ বাধাহীনই চলেছে। ইউএস ওপেন ফাইনালিস্ট জভেরভ তাতে ৬-৪, ৭-৫ (৫) ব্যবধানে জিতে উঠে গেছেন ফাইনালে, যেখানে তাঁর অপেক্ষায় স্তেফানোস সিৎসিপাস।
তবে ম্যাচের সময় ভূমিকম্প টের পাননি বলেই জানালেন জভেরভ, ‘কী হয়েছে আমি কিছুই জানি না। ডমিনিকও জানে না। আমরা শুধু দর্শকের চিৎকার টের পেয়েছিলাম। আমার মনে হয় লাইটের বাল্বগুলো নড়ছিল, আর আমাদের চেয়ে দর্শক কাঁপাকাঁপিটা বেশি টের পাচ্ছিলেন। আমরা তো কোর্টে দৌড়াচ্ছিলাম, ভূমিকম্পের সময় আমরা পয়েন্টের জন্য খেলছিলাম।’