পাকিস্তানে গিয়ে টেনিস খেলতেও রাজি নয় ভারত
>ডেভিস কাপে আগামী মাসে ইসলামাবাদে স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত। কাশ্মীরে চলমান সহিংসতার জন্য পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে অনিচ্ছুক ভারতের খেলোয়াড়েরা। ভারত ইতিমধ্যেই নিরপেক্ষ ভেন্যুর দাবি করেছে আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের কাছে। ইসলামাবাদে নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মুখোমুখি হতে চায় ভারত
ডেভিস কাপে এশিয়া/ওশেনিয়া গ্রুপ ১ থেকে আগামী ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের এ লড়াই অনুষ্ঠিত হবে ইসলামাবাদে। নিরাপত্তা শঙ্কার জন্য এ ম্যাচ ইসলামাবাদ থেকে সরিয়ে অন্য কোনো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে স্থানান্তর করতে আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের (আইটিএফ) কাছে আবেদন করেছে ভারত। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় ভারতের খেলোয়াড়েরা ইসলামাবাদে খেলতে ইচ্ছুক নন, এমন খবরই জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
কাশ্মীরে চলমান অস্থিরতা ও অবরুদ্ধ অবস্থার জন্য খেলোয়াড়দের এই নিরাপত্তা শঙ্কা। ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এতে পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধের পারদ আরও বাড়তে পারে। নতুন করে চাঙা হয়ে উঠছে ওই এলাকায় বিদ্রোহ। এ ছাড়াও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত রেখেছে পাকিস্তান। আর দুটি দেশের মধ্যে নাগরিকদের যাতায়াতও বন্ধ আছে। অল ইন্ডিয়া টেনিস ফেডারেশন জানিয়েছে, ম্যাচের ভেন্যু পাল্টাতে আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তারা।
অল ইন্ডিয়া টেনিস ফেডারেশনের (এআইটিএ) সভাপতি প্রবীণ মহাজন সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা আইটিএফের কাছে নিরপেক্ষ ভেন্যুর আবেদন করেছি কারণ পরিস্থিতি নিয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে আমার মনে হয় এটা যৌক্তিক আবেদন।’ এদিকে পাকিস্তান টেনিস ফেডারেশনের সহসভাপতি খালিদ রেহমানি জানিয়েছেন, তাঁর দেশ ম্যাচ আয়োজনে প্রস্তুত।
২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বন্ধ আছে। তবে পাকিস্তানে টেনিস খেলোয়াড়দের পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল এআইটিএ। কিন্তু কাশ্মীরে সহিংসতা শুরু হওয়ায় এআইটিএ এখন নিরপেক্ষ ভেন্যু চাচ্ছে। ভারতের কোনো টেনিস দল সবশেষ পাকিস্তান সফরে গিয়েছে ১৯৬৪ সালে। এই ডেভিস কাপেই স্বাগতিকদের ৪-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারত।
পাকিস্তানে যেতে খেলোয়াড়দের অনিচ্ছা প্রসঙ্গে এআইটিএ সচিব হিরণ্ময় চ্যাটার্জি বলেন, ‘ভারতের অধিনায়ক মহেশ ভূপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। এমন অবস্থায় খেলোয়াড়ের ওখানে অংশ নেওয়া খুব দুশ্চিন্তার। তারা অন্য কোথাও খেলতে চায়। আমরা আইটিএফকে বলেছি, ভারতের রাষ্ট্রদূতকে (পাকিস্তান থেকে) ফেরত পাঠানো হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ আছে, আকাশ, সড়ক ও ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ আছে।’
ডেভিস কাপে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আইটিএফ এর আগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্বাধীন নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে আয়োজক দেশের সঙ্গে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। টুর্নামেন্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আইটিএফ সন্তুষ্ট।’ সোমবার ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান, পাকিস্তানে গিয়ে ডেভিস কাপে অংশ নেওয়ায় খেলোয়াড়দের বাধা দেবে না সরকার। কারণ এটা বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ নয়।