নাদাল-জোকোভিচ মহারণ আজ

এবার ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালেই মুখোমুখি রাফায়েল নাদাল (বাঁয়ে) ও নোভাক জোকোভিচ
ছবি: রয়টার্স

অপেক্ষার অবসান হচ্ছে আজ। প্রায় এক বছর পরই যে আজ আবার টেনিস কোর্টে মুখোমুখি রাফায়েল নাদাল ও নোভাক জোকোভিচ। ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালেই দেখা হয়ে যাচ্ছে ইতিহাসের অন্যতম সেরা দুই টেনিস খেলোয়াড়ের। বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে একটায় শুরু হবে জিবে জল আনা সেই ম্যাচ।

গত বছর এই ফ্রেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালে সর্বশেষ দেখা হয়েছিল দুজনের। নাদাল-জোকোভিচ দ্বৈরথের ৫৮তম ম্যাচটি জিতে ফাইনালে উঠেছিলেন জোকোভিচ। পরে ফাইনালে স্তেফানোস সিৎসিপাসকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছিলেন জোকোভিচ।

এরপর কত কিছুই না দেখেছে টেনিস। নাদাল আর গত বছর কোনো গ্র্যান্ড স্লাম খেলেননি। জোকোভিচ উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ডে বসে যান রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদালের পাশে। এ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে রেকর্ডটাকে একান্তই নিজের করে নেন নাদাল। স্প্যানিশ মহাতারকার ২১তম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ে পরোক্ষ অবদান রেখেছেন জোকোভিচও। করোনার ভ্যাকসিন না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থেকে যে শেষ পর্যন্ত প্রিয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলা হয়নি সার্বিয়ান মহাতারকার।

ওই ঘটনার পর এই ফ্রেঞ্চ ওপেন দিয়েই আবার গ্র্যান্ড স্লাম টেনিসে ফিরেছেন জোকোভিচ। নাদালের রেকর্ডে আবারও ভাগ বসানোর অভিযানে তরতরিয়ে এগিয়েছেন র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর খেলোয়াড়। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে একটি সেটও হারেননি জোকোভিচ।

প্রিয় লাল দুর্গে প্রথম তিন রাউন্ডে নাদালও জিতেছেন সরাসরি সেটে। তবে পরশু চতুর্থ রাউন্ডে কানাডিয়ান তরুণ ফেলিক্স অজে-আলিয়াসিম কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন ১৩ বারের ফ্রেঞ্চ ওপেন চ্যাম্পিয়ন নাদালের। ২১ বছর বয়সী অজে-আলিয়াসিমকে হারাতে পাঁচ সেট খেলতে হয়েছে নাদালকে। ফ্রেঞ্চ ওপেনে ১১২ ম্যাচের ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয়বার পাঁচ সেট খেলতে হলো তাঁকে।

১০৯ জয়, ৩ হার—রোলাঁ গারোতে কী অবিশ্বাস্য রেকর্ড নাদালের। আবার এই রেকর্ডটাই একটু শঙ্কায় ফেলে নাদালকে। তিন হারের দুটিই যে জোকোভিচের কাছে। যার একটি গত বছরের সেমিফাইনালে, অন্যটি ২০১৫ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে। সেই কোয়ার্টার ফাইনালের পর গ্র্যান্ড স্লামে আজই প্রথম সেমিফাইনালের আগেই দেখা হয়ে যাচ্ছে দুজনের।

পরশু অজে-আলিয়াসিমকে হারানোর পর একটু বিদায়ের রাগিণীও শুনিয়েছেন নাদাল। চোটের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই করা স্প্যানিশ তারকা জানালেন, ‘আমি নিজের অবস্থা জানি, মেনেও নিয়েছি। আরও একটা বছর যে এখানে খেলতে পারছি, সেই ব্যাপারটাকেই উপভোগ করছি। সত্যি বলতে কি, রোলাঁ গারোতে আমার শেষ ম্যাচ কি না, এমন অনিশ্চয়তা নিয়েই প্রতিটি ম্যাচ খেলতে নেমেছি। আমার পায়ের সমস্যাটা রয়ে গেছে। তাই আমি জানি না অদূর ভবিষ্যতে কী হবে।’

কোয়ার্টার ফাইনালটা দিনেই খেলতে চেয়েছিলেন নাদাল। রাতের প্যারিসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় বলের গতি কমে যায়, এ ছাড়া ঠান্ডাও একটু বেশি থাকে। এসব কারণেই রাতে খেলতে চান না নাদাল। নাদালের এই অনীহাকেই সুযোগ হিসেবে নিতে চান জোকোভিচ। ২০ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী তো সরাসরিই বলে দিয়েছেন পারলে নাদালের সঙ্গে রাতেই খেলতে চান তিনি।

রাতের সেশনে খেলা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন কার্লোস আলকারাজও। স্প্যানিশ তরুণ তারকা পরশু কারেন খাচানভকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর বলেছেন, রাতে খেলাটা খুবই কঠিন। আজ দিনের বেলাতেই খেলতে নামবেন রাতে দুটি ম্যাচ খেলা আলকারাজ। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির আলেক্সান্দার জভেরেভের বিপক্ষে খেলবেন টেনিসের ভবিষ্যৎ। এই ম্যাচটা জিতলে নাদাল অথবা জোকোভিচকে পাবেন তিনি।