‘আমি টিকা নিইনি, নেওয়ার ইচ্ছেও নেই’

উইম্বলডনের ট্রফিতে চুমু জোকোভিচেররয়টার্স

২১টা গ্র্যান্ড স্লাম হয়ে গেছে তাঁর। ২২ হলে রাফায়েল নাদালকে ছুঁয়ে ফেলবেন। এ রকম ফর্ম থাকলে সেটা হতে পারে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে হতে যাওয়া ইউএস ওপেনেই। কিন্তু তার আগে বড় প্রশ্ন—ইউএস ওপেনে কি খেলতে পারবেন নোভাক জোকোভিচ?

নাহ্, চোটের সমস্যা নেই এখন পর্যন্ত। জোকোভিচের খেলা না খেলা নিয়ে প্রশ্নটা উঠছে আসলে করোনার টিকার সঙ্গে তাঁর বৈরিতার কারণে।

আরও পড়ুন

মহামারিকাল থেকে পৃথিবীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সবচেয়ে বড় পরামর্শই হচ্ছে যত বেশি পারা যায় মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া। নিয়মিত দুই ডোজ তো বটেই, এখন বলা হচ্ছে বুস্টার ডোজের কথাও। খেলাধুলার জগৎও আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে মূলত টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরেই। সে কারণে বড় টুর্নামেন্টগুলোতে এখন অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের করোনার টিকা নেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সমস্যা হচ্ছে, জোকোভিচ শুরু থেকে করোনার টিকা নিতে আপত্তি করে আসছেন। তিনি টিকা নেবেন না। তিনি মনে করেন, তাঁর শরীরে কী ঢুকবে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শুধু তাঁরই। এই ব্যক্তিস্বাধানীতায় কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দিতে রাজি নন সার্বিয়ান টেনিস তারকা। ফলে যেসব টুর্নামেন্টে খেলতে হলে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক, সেখানে তিনি অংশ নিতে পারছেন না। এই যেমন বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে টিকা না নেওয়ায় খেলতে পারেননি জোকোভিচ। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি, জোকোভিচ পাননি খেলার অনুমতি।

এবারের উইম্বলডনের রাজা ও রানি
উইম্বলডন
আরও পড়ুন

আবার যেখানে করোনার টিকা নিয়ে নিয়ম শিথিল, সেখানে এমন ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে না জোকোভিচকে। প্রশ্ন হচ্ছে, এবার ইউএস ওপেনে নিয়মটা কী থাকবে?

এখন এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ। গত বছর যেমন রুদ্ধদ্বার স্টেডিয়ামে হয়েছে ইউএস ওপেন, টিকা নয়, তখন আইসোলেশন বাধ্যতামূলক ছিল। সেই নিয়ম মেনেই জোকোভিচ গতবারের ইউএস ওপেনে খেলেছেন, ফাইনালে হেরেছেন দানিল মেদভেদেভের কাছে।

আমি শুধু অপেক্ষায় আছি, ওরা টুর্নামেন্ট (ইউএস ওপেন) শুরুর আগে নিয়মটা তুলে দেবে, যাতে আমি যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারি। আমি আসলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুখবরের অপেক্ষায় আছি।
নোভাক জোকোভিচ

এরপর বছরের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেছেন নাদালের কাছে। ওই টুর্নামেন্ট জিতে নাদাল পেয়েছেন ২২তম গ্র্যান্ড স্লাম ট্রফির স্বাদ। জোকোভিচের ২১ নম্বরটা এসেছে সদ্য শেষ হওয়া উইম্বলডনে।

এবার ইউএস ওপেন জিতে নাদালকে ছোঁয়ার আশায় জোকোভিচ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের করোনাবিধি যে সেই পথে বাধা হয়ে যেতে পারে, সেটাও মাথায় আছে সর্বকালের অন্যতম সেরা এই টেনিস তারকার, ‘আমি টিকা নিইনি, নেওয়ার ইচ্ছেও নেই। ‘‘চিকিৎসা ছাড়’’-এর আবেদন করাটাও বাস্তবসম্মত নয়; কারণ, আমার কাছে এর উত্তর নেই। আমি শুধু অপেক্ষায় আছি, ওরা টুর্নামেন্ট (ইউএস ওপেন) শুরুর আগে নিয়মটা তুলে দেবে, যাতে আমি যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারি। আমি আসলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুখবরের অপেক্ষায় আছি।’

উইম্বলডনের ট্রফি হাতে সমর্থকদের অভিনন্দনে সিক্ত জোকোভিচ
রয়টার্স

শেষ পর্যন্ত যদি ইউএস ওপেনে খেলতে না–ও পারেন, তাতেও ভেঙে পড়ার কোনো কারণ দেখেন না জোকোভিচ। কিন্তু টিকা না নেওয়া নিয়ে নতুন করে কোনো বিতর্কে জড়ানোর কোনো ইচ্ছে নেই তাঁর, ‘আমার জেতার কোনো তাড়াহুড়ো নেই। আমি শুধু সুস্থ থাকতে চাই, যাতে ভবিষ্যতে আমার সামনে অনেক বিকল্প থাকে। অস্ট্রেলিয়ায় যা হয়েছে, সেটা আমার ভেতরে ঝড় বইয়ে দিয়েছে। ওটা কাটিয়ে ওঠা আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন