২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

১৪৭ বছরের ঐতিহ্য ভাঙছে উইম্বলডন

উইম্বলডনের লাইন জাজ। আগামী বছর থেকে উইম্বলডনে তাঁদের দেখা যাবে নাএএফপি

উইম্বলডন কি শুধুই টেনিসের গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্ট? কাগজে–কলমে হয়তো তা–ই। গ্র্যান্ড স্লাম তো বটেই, এটা পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো টেনিস টুর্নামেন্ট। জিতলে অন্য তিনটি গ্র্যান্ড স্লামের তুলনায় সম্মানও বেশি। বলা হয়, এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টেনিস টুর্নামেন্ট।

১৪৭ বছরের পুরোনো টুর্নামেন্ট উইম্বলডনের ‘অলংকার’ কিছু প্রথা, যা অনেক আগেই ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। খেলোয়াড়দের সাদা পোশাক যেমন বাধ্যতামূলক, তেমনি স্ন্যাকস হিসেবে ক্রিমের পুর দেওয়া পাকা স্ট্রবেরি এবং লাইন আম্পায়ারেরাও উইম্বলডনের জন্ম থেকেই সঙ্গী। সেই ধারার একটি ঐতিহ্যে গতকাল ছেদ টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৮৭৭ সালে যাত্রা শুরু করা এই টুর্নামেন্ট।

আরও পড়ুন

উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ গতকাল জানিয়েছে, এই টুর্নামেন্টে কোর্টের ‘লাইন জাজেস’রা (লাইন আম্পায়ার) আর থাকবেন না। ২০২৫ সাল থেকে তাঁদের জায়গায় বসানো হবে আধুনিক প্রযুক্তির আশীর্বাদপুষ্ট ইলেকট্রনিক লাইন–কলিং। চারটি গ্র্যান্ড স্লামের মধ্যে একমাত্র ঘাসের কোর্টের টুর্নামেন্ট হিসেবে স্বকীয়তা ধরে রাখা উইম্বলডন কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ঐতিহ্যের জায়গায় কিছুটা হলেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগবে।

পরিপাটি পোশাকের লাইন জাজেসরা উইম্বলডনের জন্ম থেকেই সঙ্গী ছিলেন। তাঁদের সরিয়ে দিয়ে প্রযুক্তির আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ার পেছনে উইম্বলডন কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, ‘ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের মধ্যে ভারসাম্য আনতে’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

লাইন জাজের জ্যাকেটে উইম্বলডনের লোগো
এএফপি

ছেলেদের এটিপি ট্যুর কর্তৃপক্ষ গত বছর ঘোষণা করেছিল, ‘বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা ও যতটা সম্ভব নিখুঁত’ হতে ২০২৫ সাল থেকে ইলেকট্রনিক লাইন–কলিং (ইএলসি) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। মেয়েদের টেনিস অ্যাসোসিয়েশনও (ডব্লিউটিএ) একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চারটি গ্র্যান্ড স্লামের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ইউএস ওপেনে ইএলসি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ফ্রেঞ্চ ওপেন কর্তৃপক্ষ এখনো এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেনি। উইম্বলডনের আয়োজক অল ইংল্যান্ড ক্লাব আগামী বছর থেকে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে বিবৃতিতে, ‘সব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য কোর্টে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। “আউট” ও “ফল্ট” এর সিদ্ধান্ত দেবে এই প্রযুক্তি, যা এত দিন লাইন আম্পায়াররা দিয়ে এসেছেন।’

আরও পড়ুন

উইম্বলডন আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রধানরা জানিয়েছেন, এ বছরের টুর্নামেন্টে ইএলসি প্রযুক্তি বিস্তৃতভাবে পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর তা আগামী বছর থেকে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বল–ট্রাকিং ও লাইন–কলিং প্রযুক্তিকে ভিত বানিয়ে ইএলসি বানানো হয়েছে।

২০০৭ সাল থেকে উইম্বলডনের নির্দিষ্ট কিছু কোর্টে হক–আই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। অফিশিয়ালদের সাহায্যের জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। কারণ, লাইন আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন খেলোয়াড়েরা।

অল ইংল্যান্ড ক্লাবের প্রধান নির্বাহী স্যালি বোল্টন বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা ও আলোচনার পর চ্যাম্পিয়নশিপে ইলেকট্রনিক লাইন–কলিং চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বছর চ্যাম্পিয়নশিপে পরীক্ষা–নিরীক্ষার ফল পর্যালোচনার পর আমরা মনে করি, এই প্রযুক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী এবং ম্যাচ পরিচালনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিখুঁত হতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়টা এখনই। উইম্বলডনে ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্বটা আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে পালন করি।’

আগামী বছর উইম্বলডন ৩০ জুন শুরু হয়ে শেষ হবে ১৩ জুলাই।