স্পেনের বিদায়ে থেমে গেল টেনিসে নাদালের পথচলা
একটু আগেভাগেই রাফায়েল নাদালের শেষ ম্যাচটি দেখে ফেলল টেনিস। তাঁর দল স্পেন যে ডেভিস কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছে। নাদালও শেষটা রাঙাতে পারেননি, হেরে গেছেন নিজের শেষ ম্যাচে।
ডেভিস কাপে স্পেনের হয়ে প্রথম সিঙ্গেলসে নেদারল্যান্ডসের বটিচ ফন ডি জান্ডশুল্পের কাছে হেরেছেন তিনি। তাঁর উত্তরসূরি স্পেনের কার্লোস আলকারাজ আরেকটি সিঙ্গেলসে জয় পাওয়ায় আরও একটি ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা ছিল নাদালের।
তবে ফল নির্ধারণী ডাবলসে আলকারাজ ও মারসেল গ্রানোয়ার্স নেদারল্যান্ডসের বটিচ ফন ডি জান্ডশুল্প ও ওয়েসলি কুলহফের কাছে হেরে গেলে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে স্পেনের বিদায় নিশ্চিত হয়। সঙ্গে নিশ্চিত হয় নাদালের টেনিস থেকে বিদায়ও।
মালাগায় ৩৮ বছর বয়সী নাদাল কাল হেরেছেন ৬-৪ ৬-৪ গেমে। শুরু থেকেই পিছিয়ে পড়েছিলেন, পরে আর ম্যাচে ফিরতেও পারেননি। আলকারাজ দ্বিতীয় সিঙ্গেলসে ডাচ ট্যালন গ্রিকসপুরকে হারান ৭-৬ (৭/০), ৬-৩ গেমে।
পরে ডাবলসে আলকারাজ ও মারসেল গ্রানোয়ার্স হেরে যান ৭-৬ (৭/৪), ৭-৬ (৭/৩) গেমে। নাদাল অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন গত অক্টোবরে। ক্যারিয়ারে ২২টি গ্র্যান্ড স্লাম জেতা রাফায়েল নাদাল জানিয়েছিলেন, স্পেনের হয়ে ডেভিস কাপ খেলার পর প্রিয় টেনিসকে বিদায় জানাবেন।
অনেক দিন ধরেই চোটের সঙ্গে লড়াই নাদালের। চোটের কারণে লম্বা সময় কোর্টের বাইরে থাকার পর এ বছরের জানুয়ারিতে প্রতিযোগিতামূলক টেনিসে ফিরেছিলেন। কিন্তু আবার ঊরুর চোটে পড়ে ছিটকে যান অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে। ইউরোপিয়ান ক্লে কোর্টের চলতি মৌসুমে ফ্রেঞ্চ ওপেনসহ নাদাল চারটি টুর্নামেন্ট খেলেন। কিন্তু চোটজর্জর তারকা ফ্রেঞ্চ ওপেনের প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে যান।
এরপর মাত্র দুটি টুর্নামেন্টই খেলেছেন—রোলাঁ গারোতে বাস্তাদ ও অলিম্পিক গেমস। ২৩ বছরের ক্যারিয়ারের নাদাল জিতেছেন ২২টি গ্র্যান্ড স্লাম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪টি জিতেছেন ফ্রেঞ্চ ওপেনে। ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে নাদাল জিতেছেন ৯২টি শিরোপা।
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানার রাতে স্বাভাবিকভাবেই নাদালকে আবেগ স্পর্শ করেছে। সেই আবেগ নিয়েই দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি, ‘ ২০ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ার আমার। এই ভালো-খারাপ সময়ে আপনারা আমার পাশে ছিলেন, খেলা চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।’
চোটের কারণেই যে প্রিয় টেনিস কোর্ট ছাড়ছেন তাও বলেছেন নাদাল, ‘সত্য হচ্ছে আপনি কখনোই এই মুহূর্তে থাকতে চাইবেন না। আমি টেনিস খেলতে খেলতে ক্লান্ত নয়, আমার শরীর চায় না আমি খেলাটা চালিয়ে যাই এবং আপনাকে সেটা মেনে নিতে হবে। আমি অনেক ভাগ্যবান। নিজের শখকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেশা হিসেবে রাখতে পেরেছি।’