মেসি–এমবাপ্পের বিশ্বকাপ লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে
২০২১ সালে অভিষেকেই ইউএস ওপেন জিতেছিলেন এমা রাদুকানু। ২০ বছর বয়সী ব্রিটিশ টেনিস সেনসেশনের পথটা এর পর থেকেই বন্ধুর। ২০২২ সালে চারটি গ্র্যান্ড স্লামের একটিতেও দ্বিতীয় রাউন্ড ছাপিয়ে যেতে পারেননি। চাপেই কি ভেঙে পড়ছেন তিনি? তবে এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে নামার আগে তাঁর অনুপ্রেরণা লিওনেল মেসি আর কিলিয়ান এমবাপ্পে।
গত ডিসেম্বরে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল উপভোগ করার সুযোগ হয়েছিল রাদুকানুর। সে ম্যাচটিকে তো ফুটবল ইতিহাসেরই সেরা ম্যাচ বলা হচ্ছে। টান টান উত্তেজনা, রোমাঞ্চ—সবই ছিল আর্জেন্টিনা আর ফ্রান্সের মধ্যকার সে ফাইনালে।
আর্জেন্টিনা ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পর ভাবা হচ্ছিল বিশ্বকাপটা তারা সহজেই জিততে যাচ্ছে। কিন্তু দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল শোধ করে দারুণভাবেই খেলায় ফিরে আসে ফ্রান্স।
এরপর অতিরিক্ত সময়ের চিত্রনাট্য ছিল আরও শ্বাসরুদ্ধকর। লিওনেল মেসির দ্বিতীয় গোলে আর্জেন্টিনা ৩-২ গোলে এগিয়ে গেলেও এমবাপ্পে আবারও সমতা ফেরান। ১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখেছে প্রথম হ্যাটট্রিক। তবে ফ্রান্সের শেষরক্ষা হয়নি। টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা নিজেদের স্নায়ু ধরে রেখে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপার নাগাল পেয়ে যায়।
গত ১৬ ডিসেম্বর দুবাইয়ে একটি প্রদর্শনী টেনিস ম্যাচ খেলতে গিয়েই বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার সুযোগটা এসে যায় রাদুকানুর। দুবাই থেকে দোহায় গিয়ে ১৮ ডিসেম্বর তিনি হাজির হন লুসাইল স্টেডিয়ামে। ৮৯ হাজার দর্শকের সঙ্গে তিনি প্রাণভরে উপভোগ করেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালের দুর্দান্ত সেই ফাইনাল। রাদুকানু বলেছেন, ওই ম্যাচে মেসি–এমবাপ্পেদের খেলা দেখে তিনি অনুপ্রাণিত, সেই প্রেরণা কাজে লাগাবেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। বিশ্বকাপ ফাইনালটা তাঁর কাছে অন্য রকম এক অভিজ্ঞতা, ‘ম্যাচটা দুর্দান্ত, পরিবেশও ছিল দুর্দান্ত। এমন পরিবেশে স্টেডিয়ামে ম্যাচ দেখার অভিজ্ঞতাটাও দারুণ। ইশ! এমন একটা পরিবেশে, এত দর্শকের সামনে যদি কোনো টেনিস ম্যাচ হতো!’
বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখে অনেক কিছুই শিখেছেন ব্রিটিশ টেনিস তরুণী, ‘ম্যাচটা দেখে শিখেছি, খেলোয়াড়েরা কীভাবে চাপের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়। কীভাবে তারা নিজেদের খেলাটা খেলে যায়। কীভাবে তারা চাপের মুখে পেনাল্টি নেয়। পুরো বিষয়টিই অবিশ্বাস্য।’
মেসি-এমবাপ্পেদের খেলা দেখে অনুপ্রাণিত বোধ করছেন রাদুকানু, ‘মেসি-এমবাপ্পের মুখোমুখি লড়াইটা দুর্দান্ত। ফাইনালে এমবাপ্পে যেভাবে খেলেছে, সেটি দুর্দান্ত ছিল। মেসি গোটা দলকে একাই খেলিয়েছে। পুরো দলের দায়িত্ব মেসি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল। ভালো লাগছে যে মেসি শেষ পর্যন্ত দারুণভাবে ম্যাচটা শেষ করেছে। দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছে। উপলক্ষটার পূর্ণ সদ্ব্যবহার তারা যেভাবে করেছে, সেটি আমার জন্য শিক্ষণীয়। আমি আসলে আর্জেন্টিনারই জয় দেখতে চেয়েছিলাম।’
ফাইনালে বক্সে বসে খেলা দেখেছিলেন নোভাক জোকোভিচ। রাদুকানু সেই সুযোগে সার্বিয়ান তারকার সঙ্গেও কথা বলেছেন, ‘তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়াটা ছিল দারুণ ব্যাপার। মজার ব্যাপার হলো, বিভিন্ন টুর্নামেন্টে জোকোভিচকে সামনাসামনি দেখেছি। কিন্তু ওই সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে একটু লজ্জাই লাগত। কিছুটা নার্ভাসও লাগত। কিন্তু বিশ্বকাপ ফাইনালে তাঁর সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলেছি। তিনি দারুণ এক মানুষ। আমার সঙ্গে অনেক কথা বলেছেন। বেশির ভাগ কথাবার্তাই অবশ্য টেনিস নিয়ে হয়েছে।’