নিখোঁজ র্যাকেট নিয়ে নাদালের হইচই
রাফায়েল নাদাল একজন আধুনিক মানুষ। তবে টেনিস কোর্টে কিছু আচার মেনে চলেন। ম্যাচের শুরুতে টানেলে নিজের নাম স্পর্শ করে কোর্টে নামেন। কোর্টের দাগে পা ফেলেন না। নিজে বসে সামনে কোনাকুনি দুটি বোতল রাখেন। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে র্যাকেট পাল্টান।
ম্যাচের মধ্যে র্যাকেট বাকিরাও পাল্টান, তবে নাদালের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্ভবত আরেকটু স্পর্শকাতর। যে র্যাকেট দিয়ে খেলছেন, তা সময়মতো হাতের কাছে না পাওয়ায় বলেই ফেলেন, ‘বল বয়, বল বয় আমার র্যাকেট নিয়ে গেছে...র্যাকেটটা ফেরত চাই।’
ঘটনাটা আজ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডে। নাদালের কথা শুনে মনে হতেই পারে, ম্যাচের মাঝে র্যাকেটটা বুঝি চুরি গেছে! আসলে তা নয়। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘সেভেন’ ও ‘নাইন’ জানিয়েছে, বল বয় যে র্যাকেটটি স্ট্রিংগারের (র্যাকেটে তার ঠিক করার লোক) কাছে নিয়ে গিয়েছিল, সেটি দিয়েই খেলছিলেন নাদাল। কিন্তু যে র্যাকেটটি নাদাল নিয়ে যেতে বলেছিলেন, বল বয় সেটি না নিয়ে অন্য র্যাকেটে নিয়ে যায়। আর এতেই এই ভুল–বোঝাবুঝি।
তাতে অবশ্য নাদালের জিততে খুব বেশি সমস্যা হয়নি। ব্রিটেনের জ্যাক ড্রেপারকে ৭-৫, ২-৬, ৬-৪, ৬-১ গেমে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের এই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন।
প্রথম সেটের সপ্তম গেমের বিরতিতে ঘটনাটা টের পান নাদাল। তখন যে র্যাকেট দিয়ে খেলবেন, সেটি নিতে নিজের বেঞ্চে ফেরত যান। গিয়ে দেখেন, সব ঠিক আছে, শুধু র্যাকেটটি নেই! কোর্টের চেয়ার আম্পায়ারকে ঘটনাটা জানানোর সময় নাদালের চোখমুখ দেখে মনে হয়েছে, এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। ভিডিও রিপ্লে দেখেই তা বোঝা গেছে। চেয়ার আম্পায়ারকে নাদাল বলেছেন, বল বয় ভুল করে র্যাকেটটি স্ট্রিংয়ের জন্য নিয়ে গেছে।
তখন নাদাল কী বলেছেন, সেটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম, ‘(আম্পায়ারকে দেখিয়ে) এটা স্ট্রিং করার কথা ছিল, ওটা নয় (বল বয় যেটা নিয়ে গেছে)। র্যাকেটটা ফেরত চাই।’ বল বয় ওটা নিয়ে গেছে লাইন্সম্যানের কাছ থেকে জানার পর ২২ বারের এই গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘বল বয় আমার র্যাকেট নিয়ে গেছে।’
অস্ট্রেলিয়ান টেনিসের ডাবলস কিংবদন্তি জন ফিটজেরাল্ড এ ঘটনাকে ‘বড় ভুল’ বলে মন্তব্য করেন ধারাভাষ্যে, ‘গুরুত্বটা সে (নাদাল) জানে। যে র্যাকেটটি দিয়ে খেলতে চায়, ওই মুহূর্তে ওটার গুরুত্ব সে বোঝে।’
নাইনের অন্য ধারাভাষ্যকার মার্ক পেটশে ঘটনাটা বুঝিয়ে বলেন, ‘সে (নাদাল) যে র্যাকেট এখন ব্যবহার করতে চায়, ওরা সেটি নিয়ে গেছে। আশা করি, ওরা র্যাকেটের তার এখনো কাটেনি। রাফার ম্যাচে এমন কিছু সম্ভবত এই প্রথম।’ ফিটজেরাল্ড এরপর মজা করেন, ‘সে (নাদাল) র্যাকেটটা আর কখনো না–ও দেখতে পারে। ওটা হয়তো এখন মেলবোর্নের রাস্তায়।’
তবে র্যাকেটটি পরে ফেরত পেয়েছেন নাদাল। স্ট্রিং-ও খুলে পুনরায় লাগানো হয়নি। নাদাল র্যাকেটটি নিয়ে ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখেন। ম্যাচ শেষে নাদাল ঘটনাটাকে ‘মজার মুহূর্ত’ বলেছেন, ‘সাধারণত (ম্যাচে) আমার কাছে কয়েকটি র্যাকেট থাকে। যেটায় স্ট্রিং করার দরকার ছিল, সেটি অন্য র্যাকেট। যেটা দিয়ে খেলব, সেটি সে (বল বয়) নিয়ে গেছে। তবে এতে কোনো সমস্যা হয়নি।’