প্রেমিকের আত্মহত্যা, তবু মায়ামি ওপেনে খেলবেন সাবালেঙ্কা
মায়ামি ওপেনে বাংলাদেশ সময় পরশু দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে আরিনা সাবালেঙ্কার মুখোমুখি হবেন স্পেনের পলা বাদোসা। কোর্টের বাইরে দুই খেলোয়াড় অন্তরঙ্গ বন্ধু। বাদোসা জানিয়েছেন, এই ম্যাচটা খেলতে তিনি ‘অস্বস্তিবোধ’ করবেন। কারণটা অবশ্যই বন্ধুত্ব নয়।
বন্ধু হলেও দুজন তো এর আগেও মুখোমুখি হয়েছেন। কারণটা আসলে ভয়াবহ—সাবালেঙ্কার প্রেমিক ‘আত্মহত্যা’ করেছেন গত সোমবার। দুবার গ্র্যান্ড স্লামজয়ী বেলারুশ তারকার মনের অবস্থাটা এখন কেমন সেটা তো আন্দাজ করে নেওয়াই যায়। এই শোক নিয়ে সাবালেঙ্কা যে মায়ামি ওপেনে খেলছেন, সেটাই তো অবিশ্বাস্য ব্যাপার!
মায়ামি ওপেনের আয়োজকেরা গতকালই জানিয়েছেন, সাবালেঙ্কা এই টুর্নামেন্টে খেলা চালিয়ে যাবেন। মায়ামির পুলিশ জানিয়েছে, সাবালেঙ্কার প্রেমিক বেলারুশের সাবেক আইস হকি খেলোয়াড় কনস্তানতিন কোলসোভ মায়ামির একটি রিসোর্টের ব্যালকনি থেকে লাফ দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন।
৪২ বছর বয়সী কনস্তানতিন উত্তর আমেরিকার আইস হকি লিগে (এনএইচএল) পিটসবরো পেঙ্গুইনসের হয়ে খেলেছেন। বেলারুশের সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, কনস্তানতিনের শরীরে ‘রক্ত জমাটবাঁধা’র অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। কিন্তু ফ্লোরিডার পুলিশ পরে জানায়, পাঁচ তারকা রিসোর্টের ব্যালকনি থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন কনস্তানতিন। মায়ামির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে ‘স্পষ্টত আত্মহত্যা’ ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশের মুখপাত্র আরজেমিস কোলোমে মেইলের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সেন্ট রেজিস হারবার রিসোর্টে একজন পুরুষের লাফ দিয়ে আত্মহত্যার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিল মায়ামির পুলিশ বিভাগের হোমিসাইড ব্যুরো। মিস্টার কনস্তানতিন কোলসভের এ ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে ধরে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত খুন বা তেমন কিছু মনে হয়নি।’ মেয়েদের র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় সাবালেঙ্কা মায়ামিতে অনুশীলন করতেন এবং সেখানে তাঁর বাসাও আছে। কনস্তানতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তিন বছরের। সাবালেঙ্কার প্রয়াত বাবা সের্গেই–ও আইস হকির খেলোয়াড় ছিলেন।
বাদোসা যেহেতু সাবালেঙ্কার কাছের বন্ধু—গতকালই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। বাদোসার ভাষায়, ‘গতকাল তার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছি। আজ সকালেও বলেছি। আমি জানি সে কিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমার নিজের জন্যও ব্যাপারটা ভয়ংকর। কারণ সে আমার সেরা বন্ধু। আমি চাই না সে ভোগান্তিতে থাকুক। পরিস্থিতিটা খুব কঠিন। একই সময়ে তার বিপক্ষে খেলতেও অস্বস্তি লাগবে।’
মেয়েদের টেনিস র্যাঙ্কিংয়ে সাবেক শীর্ষ খেলোয়াড় ক্যারোলিন ওজনিয়াকি বলেছেন, সাবালেঙ্কার পরিস্থিতিটা ‘হৃদয় ভেঙে দেওয়ার মতো’। সংবাদমাধ্যমকে ওজনিয়াকি বলেছেন, ‘ভাবতেও পারছি না সে কিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নিজেও ক্ষতবিক্ষত হচ্ছি। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বলেছি, কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে আমি পাশেই আছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড় জেসিকা পেগুলা বলেছেন, ‘আমরা সবাই গত রাতে জেনেছি...আমরা যেটা করতে পারি সেটা হলো, এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে তার যা যা প্রয়োজন সেসব ব্যাপারে সাহায্য করা। কে কীভাবে এমন শোক কাটিয়ে উঠবে কিংবা কীভাবে সহ্য করবে—সেটা তো আমরা জানি না। সব মানুষই আলাদা।’