স্ত্রী স্টেফির সঙ্গে যা নিয়ে ‘ঝগড়া’ হয় স্বামী আগাসির
ক্যারিয়ারে যে ৮টি গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন, তার অর্ধেকই এসেছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে। বছরের প্রথম এই গ্র্যান্ড স্লাম শুরু হবে, আর সেখানে আন্দ্রে আগাসি থাকবেন না, তা হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস কিংবদন্তিকে কাল দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের উদ্বোধনী দিনে।
ছেলেদের এককে চ্যাম্পিয়নদের হাতে যে ট্রফি তুলে দেওয়া হয়—নরমান ব্রুকস চ্যালেঞ্জ কাপ—সেটি হাতে করে রড লেভার অ্যারেনায় নিয়ে আসার সম্মানটা তাঁকে দেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই টেনিস খেলোয়াড়। আর সেখানেই তিনি তুলে ধরেছেন নিজের দাম্পত্যজীবনের এক চিমটি গল্প, যা সাধারণত আগাসিকে করতে দেখা যায় না!
আগাসির দাম্পত্যজীবন মানে স্টেফি গ্রাফও। দুই কিংবদন্তির সংসার আরকি! জার্মান কিংবদন্তি স্টেফির ঝুলিতে আছে ২২ গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা। ১৯৬৮ সালে টেনিসে ওপেন যুগ শুরুর পর মেয়েদের এককে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের নজির।
যেকোনো সময় মিলিয়ে মেয়েদের এককে তৃতীয় সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী, আর এই স্টেফি আগাসির ঘর বেঁধে দেওয়া দ্বিতীয় নারী। ১৯৯৭ সাল থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেত্রী ব্রুক শিল্ডের সঙ্গে টিকেছিল আগাসির প্রথম ‘ঘর’। সেই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর ২০০১ সালের ২২ অক্টোবর স্টেফিকে বিয়ে করেন আগাসি। তারপর ২৩ বছর হলো নিজেদের দাম্পত্যজীবন নিয়ে আগাসি ও স্টেফি দুজনেই যতটা সম্ভব মুখে কুলুপ এঁটেছেন সংবাদমাধ্যমে। তাঁদের সংসার নিয়ে কখনো সেভাবে কিছু জানা যায়নি সংবাদমাধ্যমে।
কিন্তু ‘ফক্স রেডিও ১০১.৯’-এ সঞ্চালক ব্রেন্ডন ফেভোলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেখা গেল অন্য আগাসিকে। স্টেফির সঙ্গে দাম্পত্যজীবন এবং বিয়ে থেকে জীবনে পাওয়া শিক্ষা সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন ৫৩ বছর বয়সী সাবেক এই নাম্বার ওয়ান, ‘ঝগড়া লাগবেই। তবে প্রথম যে ঝগড়াটা আমি এড়িয়ে যেতে পেরেছি সেটা হলো, নিজের জেতা শিরোপাগুলো বাসায় নিয়ে আসিনি। কারণ, আমি শিরোপাগুলো ঘরে নিয়ে গেলে সে–ও (স্টেফি) তার জেতা শিরোপাগুলো নিয়ে আসত।’
পেশাদার ক্যারিয়ারে ৮টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের পাশাপাশি এটিপি ট্যুরে আরও ৬০টি শিরোপা জিতেছেন আগাসি। তবে তাঁর স্ত্রী স্টেফির জেতা শিরোপা–সংখ্যার কাছে আগাসি কিছুই না! মেয়েদের এককে ২২টি গ্র্যান্ড স্লাম তো জিতেছেনই, ডব্লুটিএ ট্যুরে জিতেছেন আরও ১০৭টি একক শিরোপা। এ ছাড়া দ্বৈতে জিতেছেন আরও ১১টি শিরোপা—এর মধ্যে আছে ১৯৯৮ সালে জেতা উইম্বলডন।
সংখ্যাই যেহেতু সত্যটা বলে দেয়, আগাসি তাই ঘরে কে সেরা—এমন প্রশ্নে আর বিতর্কের জন্ম দেননি। বউয়ের ক্যারিয়ার তাঁর চেয়ে অনেক ভালো—মেনে নিয়ে আগাসি বলেন, ‘অঙ্কের এই হিসাবটা (শিরোপা) খুবই পচা। একে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে খুব কষ্ট হয়। তবে কে কী করেছে, কখন করেছে, এসব নিয়ে তর্ক উঠলে সে সাধারণত আমাকে হারিয়ে দেয়। শুধু এটুকুই বলতে পারি, আমরা চেষ্টা করি নিজেদের অর্জনটাকে অন্যের তুলনায় ফুলিয়ে–ফাঁপিয়ে দেখাতে।’
নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত রোববার একটি ছবি পোস্ট করেন আগাসি। সেই ছবি দেখেও স্টেফির প্রতি তাঁর ভালোবাসা টের পাওয়া যায়। মেলবোর্ন পার্কের টানেলে শিরোপা হাতে একটি ছবি আছে স্টেফির। সেই ছবিতে চুমু খাওয়ার মুহূর্তটা ক্যামেরাবন্দী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন আগাসি। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমার সঙ্গে কথা বলো।’ আগাসির মেয়ে জ্যাজ এলে ছাড়াও এই পোস্ট তাঁর অনেক ভক্তই শেয়ার দেন। জ্যাডেন গিল নামে একটি ছেলেও আছে আগাসি-গ্রাফের ঘরে।