২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ইউএস ওপেনে ১৮ বছরের মধ্যে দ্রুততম বিদায় জোকোভিচের

পপিরিনের কাছে হারের পর তাঁর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন জোকোভিচএএফপি

রেকর্ড ২৫তম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা জয়ের স্বপ্নে আবারও ধাক্কা খেলেন নোভাক জোকোভিচ। ইউএস ওপেনে আজ ছেলেদের এককের তৃতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্সেই পপিরিনের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছেন সার্বিয়ান কিংবদন্তি। র‍্যাঙ্কিংয়ে ২৮তম পপিরিনের কাছে ৬–৪, ৬–৪, ২–৬, ৬–৪ গেমে হারেন জোকোভিচ।

এবারের ইউএস ওপেন দিয়ে মার্গারেট কোর্টকে পেছনে ফেলে নারী–পুরুষ মিলিয়ে এককভাবে সর্বোচ্চ ২৫ গ্র্যান্ড স্লামের মালিক হওয়ার সুযোগ ছিল জোকোভিচের সামনে। কিন্তু পপিরিনের কাছে হেরে ইউএস ওপেনে গত ১৮ বছরের মধ্যে দ্রুততম বিদায় ঘটল তাঁর। বছরের শেষ এ গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টে সর্বশেষ ২০০৬ সালে তৃতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিলেন প্রতিযোগিতাটির ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন।

২০১৭ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকে পড়ার পর গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টে এবারই দ্রুততম সময়ে বিদায় নিলেন ছেলেদের র‍্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় শীর্ষ এই তারকা।

জয়ের পর দর্শক অভিবাদনের জবাবে পপিরিন
এএফপি

জোকোভিচের বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২২ বছর পর এবার একটি নজিরও দেখা যাবে। সর্বশেষ ২০০২ সালের পর ২০২৪ সালই হবে প্রথম বছর, যে বছরে টেনিসের ‘বিগ থ্রি’র (রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল ও নোভাক জোকোভিচ) মধ্যে কাউকে গ্র্যান্ড স্লাম জিততে দেখা যাবে না।

শুধু কি তা–ই? ২০০৪ ফ্রেঞ্চ ওপেনের পর এবারের ইউএস ওপেনই হবে প্রথম মেজর টুর্নামেন্ট, যেখানে শেষ ষোলোয় ফেদেরার, নাদাল ও জোকোভিচের মধ্যে কাউকে দেখা যাবে না। অবশ্য ইউএস ওপেনে এবার ছেলেদের এককে তারকাদের মধ্যে শুধু জোকোভিচই বিদায় নেননি; এ বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন ও উইম্বলডনজয়ী তৃতীয় বাছাই কার্লোস আলকারাজও গতকাল দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে বিদায় নেন

প্যারিস অলিম্পিকে এবার সোনা জিতলেও এ বছর কোনো গ্র্যান্ড স্লাম জেতা হলো না জোকোভিচের। মাঝে হাঁটুতে অস্ত্রোপচারও করিয়েছেন। এর আগে তিনবার পপিরিনকে হারালেও চতুর্থবারের মুখোমুখিতে মোট ৪৯টি আনফোর্সড এররের মাশুল গুনেছেন জোকোভিচ। হারের পর সার্বিয়ান কিংবদন্তি নিজেই স্বীকার করলেন, ‘এটা আমার জন্য খুব বাজে ম্যাচ ছিল।’

বিদায় নেওয়ার সময় দর্শকদের প্রতি জোকোভিচ
এএফপি

এবার ইউএস ওপেনে যেভাবে খেলে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন, সেটিকে ‘সফলতা’ বলেই মনে করেন জোকোভিচ। আসলে খুব বাজে খেলেও যে ওই পর্যন্ত ওঠা যায়, সেটা বোঝাতেই সম্ভবত এ মন্তব্য করেন হারের পর বিধ্বস্ত জোকোভিচ, ‘টুর্নামেন্টের শুরু থেকে যেভাবে খেলে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছি, সেটা সফলতাই। এটি নিজের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বাজে টেনিস খেলাগুলোর একটি।’

মাত্র চার সপ্তাহ আগে প্যারিস অলিম্পিকে সোনা জয়ের পর দ্রুতই ইউএস ওপেনে খেলতে নেমে যাওয়াকেও হারের কারণ হিসেবে দেখছেন ৩৭ বছর বয়সী কিংবদন্তি, ‘অবশ্যই, প্রভাব তো ছিলই। সোনা জিততে অনেক উদ্দীপনা খরচ করেছি। নিউইয়র্কে যখন এসেছি, শারীরিক ও মানসিকভাবে সতেজ ছিলাম না।’

গত জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে ইয়ানিক সিনারের কাছে হেরেছিলেন জোকোভিচ। পরে সিনারই চ্যাম্পিয়ন হন। গত জুনে ফ্রেঞ্চ ওপেনে হাঁটুতে চোট পাওয়ায় কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন জোকোভিচ। এরপর গত জুলাইয়ে উইম্বলডন ফাইনালে হেরেছেন আলকারাজের কাছে। এই তিন গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ফ্রেঞ্চ ওপেনে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ছিলেন জোকোভিচ। এবার ইউএস ওপেনে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের মুকুটও হারাতে হবে তাঁকে।

এ কাজ যিনি করেছেন, সেই পপিরিনের স্বাভাবিকভাবেই আনন্দে ভেসে যাওয়ার কথা। জোকোভিচের বিপক্ষে তাঁর জয় গ্যালারি থেকে দেখেছেন দুবার গ্র্যান্ড স্লামজয়ী অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেনিস খেলোয়াড় লেটন হিউইট। ২০০৬ ইউএস ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে হিউইটের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিলেন জোকোভিচ। জয়ের পর পপিরিন বলেছেন, ‘আমি ভালো টেনিস খেলেছি। সর্বকালের সেরাকে হারিয়ে গ্র্যান্ড স্লামের চতুর্থ রাউন্ডে ওঠা অবিশ্বাস্য!’