সৌদি আরবে ‘পরিবর্তনের সুযোগ’ দেখেন ওজনিয়াকি
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’ সংস্কার প্রকল্পে খেলাধুলায় যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটার অংশ হিসেবে দেশটির টেনিস ফেডারেশনের দূত হয়েছেন রাফায়েল নাদাল। দূত হিসেবে নাদাল প্রতি বছর সৌদি সফর করবেন। টেনিসের উন্নয়নে সাহায্য করার পাশাপাশি একাডেমি তৈরির অগ্রগতিও পর্যবেক্ষণ করবেন।
পরশু সৌদি টেনিস ফেডারেশনের দূত হওয়ার পর নাদাল বলেছিলেন, ‘আমি চাই এই খেলা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক। সৌদি আরব এ ক্ষেত্রে সত্যিই সম্ভাবনাময় দেশ।’ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনজয়ী ক্যারোলিন ওজনিয়াকিরও বিশ্বাস, তারকা টেনিস খেলোয়াড়দের হাত ধরে দেশটির টেনিসে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ আছে।
দুটি সন্তান জন্মদান ও মাতৃত্বকালীন দায়িত্বের কারণে ৪ বছর পর এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ফিরেছেন ওজনিয়াকি। ৩৩ বছর বয়সী ডেনিশ টেনিস তারকার ফেরাটা সুখকর হয়নি। আজ রুশ তরুণী মারিয়া তিমোফিভার কাছে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকে পড়েছেন।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ওজনিয়াকি নাদালের সৌদি টেনিসের দূত হওয়া নিয়ে বলেছেন, ‘রাফার (নাদালের) ব্যাপারে বেশি কিছু পড়িনি, আসলে সে কী করছে। তবে স্পষ্টতই সে সৌদি খেলাধুলায় নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরছে। প্রথমে গলফ ও ফুটবল আর এখন টেনিস।’
সৌদি আরব খেলাধুলায় শক্তিশালী অবস্থান গড়ে নিচ্ছে, এটাই মনে করেন ওজনিয়াকি, ‘আমি মনে করি এটা অনিবার্য, এটা হতে চলেছে। যখন এটা ঘটবে, তখন সেখানে আমাদের পরিবর্তন আনার এবং ভালো কিছু করার সুযোগ আছে।’
সৌদি আরবে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বহু আগে থেকেই সোচ্চার উন্নত বিশ্ব। সমালোচকেরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে হলে সৌদিকে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। খেলাধুলাকে ব্যবহার করে সৌদির আন্তর্জাতিক খ্যাতি বাড়ানোর এই চেষ্টা সমালোচকদের চোখে ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’ ছাড়া আর কিছু নয়।
তবে ওজনিয়াকি মনে করেন, তারকা খেলোয়াড়দের হাত ধরে সৌদির ক্রীড়াঙ্গনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে, ‘মানবাধিকার ও অন্য বিষয়গুলো আমি বুঝি। কিন্তু আমি মনে করি ওরা (সৌদি আরব) খেলাধুলায় যে পরিমাণ অর্থ ঢালছে, তাতে এটা অনিবার্য। ভালো কিছু করে (সৌদি সম্পর্কে ধারণা) পাল্টে দেওয়ার সুযোগ আছে আমাদের।’
গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে জেদ্দায় নেক্সট জেন এটিপি ফাইনালস আয়োজন করেছিল সৌদি টেনিস ফেডারেশন। এ ছাড়া নোভাক জোকোভিচ–কার্লোস আলকারাজ এবং আরিয়ানা সাবালেঙ্কা–উনস জাবিরের মধ্যে দুটি প্রদর্শনী ম্যাচও হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এ বছর ডব্লুটিআই ফাইনালসও আয়োজন করবে সৌদি।
তবে নারী টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা ইগা সিওনতেকের কাছে ব্যাপারটি পরিষ্কার নয়। ২২ বছর বয়সী এ পোলিশ তারকা বলেছেন, ‘ডব্লুটিএ ফাইনালস সৌদি হতে চলেছে—এ ধরনের অনেক গুঞ্জন শুনেছি। আমরা এখনো সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। এটা ভালো কি না, আমার পক্ষে বলা সবসময়ই কঠিন। কারণ, ওই এলাকায় (আরব বিশ্বে) মেয়েদের জন্য খেলাধুলা করা সহজ নয়। তবে এটা ঠিক যে, ওই দেশগুলো রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে উন্নতি করতে চায়।’