২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মেলবোর্নের এক ডুমুর গাছের সঙ্গে ১৫ বছরের ‘বিশেষ সম্পর্কের’ কথা কেন বলছেন জোকোভিচ

২০১৭ সালে মেলবোর্নের একটি গাছের সঙ্গে এ ছবি পোস্ট করেছিলেন জোকোভিচইনস্টাগ্রাম

তিনি নিরামিষাশী। যদিও এ ক্ষেত্রে কোনো ‘আখ্যা’ তাঁর পছন্দ নয়। ‘উদ্ভিজ্জ ডায়েট’ অনুসরণ করেন, তা বলতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। মেডিটেশনের গুণগান করেন, আধ্যাত্মিক গুরুর শরণাপন্নও হয়েছেন। সাফল্যের জন্য রহস্যময় এক যন্ত্রের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। নোভাক জোকোভিচ টেনিস ইতিহাসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হয়ে ওঠার পেছনে অনেক কিছুর অবদানের কথাই উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন সময়ে।

মেলবোর্নের এক ডুমুরগাছও অমনই।

১৫ বছর ধরে এই গাছের সঙ্গে বিশেষ এক সম্পর্ক আছে তাঁর, এমন জানিয়েছেন রেকর্ড ২৪টি গ্র্যান্ড স্লাম বিজয়ী সার্বিয়ান তারকা। ১১ নম্বর শিরোপার পেছনে ছুটতে জোকোভিচ এখন অস্ট্রেলিয়ায়। মেলবোর্নের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনের সেই গাছকে ‘পুরোনো বন্ধু’ উল্লেখ করে জোকোভিচ বলেছেন, তিনি সেটিকে জড়িয়ে ধরতে এবং এর ওপর চড়তে পছন্দ করেন।

জোকোভিচের জুতায় এখনই ২৪ লেখা, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতলে তাঁর গ্র্যান্ড স্লাম হবে ২৪টি
এএফপি

অস্ট্রেলিয়ান অ্যালেক্সেই পপিরিনকে হারিয়ে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন জোকোভিচ। এ ম্যাচে দর্শকদের সঙ্গে বিতণ্ডাতেও জড়িয়ে পড়েন ম্যাচ শেষে। তবে সে ম্যাচের পরই মেলবোর্নের ওই বিশেষ গাছের কথা বলেছেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে একটি নির্দিষ্ট গাছের কাছে যেতে দেখেছেন, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমে এসেছে এমন প্রতিবেদন। এমন কোনো প্রিয় গাছ আছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে জোকোভিচ বলেছেন, ‘সত্যি, এটা সত্যি। একটা নির্দিষ্ট গাছের সঙ্গে বিশেষ একটি সম্পর্ক আছে আমার, বলা যায় ১৫ বছর ধরেই।’

এরপর জোকোভিচ বলেন, ‘আমি বোটানিক গার্ডেনের প্রতিটি কোনা ভালোবাসি। আমার মনে হয়, শহরের মধ্যে এমন একটি পার্ক থাকা, প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়া মেলবোর্নের দারুণ একটি সম্পদ। আমি বলব না কোন গাছ, তবে ওই গাছের কাছে গিয়ে আমি একান্তে সময় কাটাতে চাই। নিজের পা মাটিতে রেখে ওই পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে ভালো লাগে।’

আরও পড়ুন

২০০৮ সালে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন জোকোভিচ। এর পর থেকে মেলবোর্নে নিয়মিতই যাতায়াত তাঁর। কোন গাছ, সেটি নির্দিষ্ট করে এবার বলতে না চাইলেও ২০১৭ সালেই ইনস্টাগ্রামে ‘প্রিয় বন্ধু’ একটি গাছের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেছিলেন তিনি।

সেই গাছটি কেন তাঁকে টানে, এর জবাবে জোকোভিচ বলেছেন, ‘আমি স্রেফ পছন্দ করি এটি। এর শিকড়, কাণ্ড, শাখাপ্রশাখা—সবকিছু। এতে চড়া শুরু করেছি অনেক বছর আগে। এটিই, এর সঙ্গে একটা সংযোগ আছে।’

আরও পড়ুন

এবারই জোকোভিচ বলেছিলেন, তিনি কুসংস্করাচ্ছন্ন নন। তবে তিনি নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় গিয়ে ভাগ্য ফেরাতে পছন্দ করেন—এমনও বলেছেন। তাঁর মতে, ‘প্রকৃতির মধ্যে নিজের মতো করে থাকতে, গাছ জড়িয়ে ধরতে, চড়তে—এমন কিছু (পছন্দ করি)। অস্ট্রেলিয়ায় সাফল্যের রহস্য এটি হোক বা না, আমি জানি না। তবে আমার নিশ্চিতভাবেই ভালো লাগে।’

জোকোভিচ এর আগেও এসেছেন আলোচনায়
এএফপি

এর আগেও নিজের জীবনযাপনের অপ্রচলিত ঘরানার কথা উল্লেখ করেছেন জোকোভিচ।

‘হাইপারবারিক’ অক্সিজেন চেম্বার বা ‘হিলিং পিরামিড’ ব্যবহার, স্প্যানিশ গুরু পেপে ইমাজের সান্নিধ্যে যাওয়া আছে এর মধ্যে। এখন ‘গ্লুটেন’জাতীয় ও দুগ্ধজাত কোনো খাবারও খান না। তাঁর উদ্ভিজ্জনির্ভর ডায়েটের ওপর ভিত্তি করে নেটফ্লিক্সে ‘দ্য গেম চেঞ্জার্স’ নামে ডকুমেন্টারিও আছে। জোকোভিচ নিজেই সেটির নির্বাহী প্রযোজক।

এমনিতে মানবাধিকার–সংক্রান্ত কাজেও নিয়মিত জোকোভিচ। তবে ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে খাবার ও পানির আকৃতি বদলানো যায়, এমন দাবি করেও শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। করোনাভাইরাসের সময় টিকা না নিয়েও হইচই ফেলে দিয়েছিলেন জোকোভিচ। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে গিয়েও টিকা না নেওয়ায় ফিরে যেতে হয়েছিল তাঁকে।