অ্যান্ডি মারের বয়স ৩৫ বছর। কোমরে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন দুবার। ২০১৮ সালে অস্ত্রোপচার করিয়ে কোমরে ধাতবের ক্যাপ বসিয়েছিলেন। ব্যথা না কমায় পরের বছর আবারও অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। কিন্তু কাল রাতের অ্যান্ডি মারেকে দেখে এসব বোঝার উপায় ছিল না।
তিনবার গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী এই ব্রিটিশ তারকা অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে। অথচ অস্ট্রেলিয়ার থানাসি কোক্কিনাকিসের বিপক্ষে প্রথম দুই সেট হেরে বিদায় দেখছিলেন মারে। কিন্তু শেষ তিন সেট জিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এখনো ফুরিয়ে যাননি।
কোক্কিনাকিসের বিপক্ষে মারের ৪–৬, ৬–৭ (৪–৭), ৭–৬ (৭–৫), ৬–৩, ৭–৫ গেমের এই জয় মারের ক্যারিয়ারেরও দীর্ঘতম ম্যাচ। সময় লাগে ৫ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। মাঝরাতে শুরু হয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ৫ মিনিটে শেষ হয়েছে এই ম্যাচ।
জয়ের পর ক্লান্ত মারে বলেছেন, ‘ম্যাচে উত্থান–পতন, হতাশা, উত্তেজনাসহ প্রায় সবকিছুই ছিল। জিততে পেরে খুব ভালো লাগছে। তবে আমি এখন বিছানায় যেতে চাই। ঘুমাতে চাই।’
গ্র্যান্ড স্ল্যামের ইতিহাসে রাতে দেরিতে ম্যাচ শেষ হওয়ার তালিকায় মারের এই ম্যাচ এখন দুইয়ে। ২০০৮ সালে এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেরই তৃতীয় রাউন্ডে মার্কোস বাগতাদিস–লেটন হিউটের ম্যাচটি শেষ হয়েছিল ভোর ৪টা ৩৪ মিনিটে।
ম্যাচে কোক্কিনাকিসের সঙ্গে বেশ কয়েকবার ম্যারাথন র্যালি হয়েছে মারের। তাতে লড়াইটা আরও দীর্ঘায়িত হয়েছে। এ জন্য বলকে দোষারোপ করেছেন মারে। এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের বল নিয়ে আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন নোভাক জোকোভিচ ও রাফায়েল নাদালরা।
এবারের বলগুলো নাকি বেশি নরম ও মন্থর। বল মন্থর হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি সময় পাওয়া যায়। মারে বলেছেন, ‘এটা অদ্ভুত ব্যাপার। কোর্ট কিন্তু দ্রুততর, কিন্তু সেটাই এখন মন্থর হয়ে গেছে। যখন ম্যাচ শুরু করি তখনই মনে হয়েছে বলের ভেতর বাতাস নেই, প্রায় সমান (নরম)। এটা নিয়ে ম্যাচেই অভিযোগ করেছি। (এমন বলে) র্যালিতে উইনার মারা কঠিন। সবাই দেখেছে। কাল ৭০ শটের র্যালিও হয়েছে, ৩৫ কিংবা ৪০ শটের র্যালিও ছিল। এটা মোটেও স্বাভাবিক নয়।’
অস্ট্রেলিয়ার জ্যাসন কুবলের ও রাশিয়ার ১৮তম বাছাই কারেন খাচানভের মধ্যকার ম্যাচে ৭০ শটের র্যালি দেখা গেছে। দুজনের মধ্যে কেউ–ই উইনার মারতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত কুবলের ব্যাকহ্যান্ড শট নেটে লেগে ওপাশে পড়লে র্যালি শেষ হয়।
বল নিয়ে জোকোভিচ এর আগে বলেছেন, ‘বাইরের কোর্টে দ্রুত খেলা যায়। স্টেডিয়ামের কোর্ট একটু মন্থর। কিন্তু বল একদমই মন্থর। এতে খেলার অসুবিধা হয়। এর আগে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বাদ পড়া নাদাল বলেছিলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই বলের মান খুব বাজে।’