যুক্তরাস্ট্রের ১৫ বছরের অপেক্ষা ঘোচালেন ফ্রিটজ

ফাইনালে ওঠার পর টেলর ফ্রিটজের উদ্‌যাপনএএফপি

অ্যান্ডি রডিক ২০০৩ সালে ইউএস ওপেন জয়ের সময় টেলর ফ্রিটজ ৫ বছরের বালক। রডিকের সেই জয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের আর কোনো পুরুষ টেনিস খেলোয়াড় গ্র্যান্ড স্লাম জিততে পারেননি।

ছয় বছর পর ২০০৯ সালে উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠেন রডিক। গ্র্যান্ড স্লামে ছেলেদের এককে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো খেলোয়াড়ের ফাইনালে ওঠার সেটাই ছিল সর্বশেষ নজির। ১৫ বছর পর এবার ইউএস ওপেন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই খরা কাটালেন ফ্রিটজ। নিউইয়র্কে আজ ছেলেদের এককে সেমিফাইনালে ফ্রান্সিস তিয়াফোকে ৪-৬, ৭-৫, ৪-৬, ৬-৪, ৬-১ গেমে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছেন র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২তম যুক্তরাষ্ট্রের এই খেলোয়াড়।

আরও পড়ুন

আগামী সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ছেলেদের এককের ফাইনালে ফ্রিটজের প্রতিপক্ষ ছেলেদের র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানীয় ইতালির ইয়ানিক সিনার। অন্য সেমিফাইনালে ব্রিটেনের জ্যাক ড্রাপারকে ৭-৫, ৭-৬ (৭/৩), ৬-২ গেমে হারিয়ে প্রথম ইতালিয়ান পুরুষ খেলোয়াড় হিসেবে ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠেছেন এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনজয়ী সিনার

তিয়াফোর কাছে প্রথম সেটে হারের পর ঘুরে দাঁড়িয়ে পরের সেট জিতে নেন ফ্রিটজ। তৃতীয় সেটে আবার হারলেও শেষ দুটি সেট জিতে ঠিকই ফাইনালে ওঠেন ২৬ বছর বয়সী ফ্রিটজ। ১৬তম ‘এইস’ মেরে জয়ের পর ফ্রিটজ বলেন, ‘শুরুতেই সে দাপট দেখিয়েছে এবং আমিও কিছুটা এলোমেলো হয়ে পড়েছিলাম। নিজেকে শুধু বলেছি, টিকে থাকো, সার্ভিসগুলো ঠিকমতো করে স্কোরবোর্ডের ওপর চাপ বাড়াও। টিকে থাকতে যা যা সম্ভব, সবই করেছি। যদি তা না করতাম, তাহলে আফসোসটা সব সময়ই থেকে যেত। ফাইনালে সর্বস্ব নিংড়ে দিব।’

জয়ের পর তিয়াফোর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন ফ্রিটজ
এএফপি

সেমিফাইনালে বেশির ভাগ সময় তিয়াফোই দাপট দেখিয়েছেন। কিন্তু চতুর্থ সেটে নেটের কাছে আলসেমি করে ড্রপ শট মিস করার পর তাঁর খেলা এলোমেলো হয়ে পড়ে। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। পঞ্চম ও চূড়ান্ত সেটে খেলা হয়েছে ২৭ মিনিট। এই সেটে মাত্র ৯ পয়েন্ট তুলে নিতে পেরেছেন তিয়াফো। এ নিয়ে ইউএস ওপেনে সর্বশেষ তিনবারে দুবারই সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পড়লেন তিনি, ‘এটা হজম করা কঠিন। কষ্ট দেবে। ভেবেছিলাম, আমিই ভালো খেলছি। কিন্তু চতুর্থ সেটে গিয়ে ক্রাম্পের শিকার হই। শরীর একরকম শাটডাউন হয়ে গিয়েছিল। এটা স্নায়ুর ওপরও প্রভাব ফেলেছে।’

আরও পড়ুন

তিয়াফো-ফ্রিটজ মুখোমুখি হওয়ার আগে সিনার-ড্রাপারের সেমিফাইনাল ম্যাচ তিন ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছে। ২০১২ সালে অ্যান্ডি মারের পর প্রথম ব্রিটিশ পুরুষ খেলোয়াড় হিসেবে ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে ওঠা ড্রাপার ১০টি ডাবল ফল্টস ও ৪৩টি আনফোর্সড এরর করে হেরে যান। শুধু তা–ই নয়, ড্রাপার শারীরিকভাবেও সুস্থ ছিলেন না। দ্বিতীয় সেট চলাকালে কোর্টেই তিনবার বমি করেছেন।

ড্রাপার আবার সিনারের বন্ধুও। সেই বন্ধুরই বিপক্ষে জয়ের পর ইতালিয়ান তারকা বলেছেন, ‘জ্যাক ও আমি একে অপরকে খুব ভালোভাবেই জানি। কোর্টের বাইরে আমরা খুব ভালো বন্ধু। ম্যাচটি শারীরিকভাবে খুব কঠিন ছিল। তাকে হারানো খুব কঠিন, এ কারণে ফাইনালে উঠতে পেরে রোমাঞ্চ জাগছে।’ ম্যাচে ৪৩টি উইনার্স মারা সিনার কোর্টে একবার পরে গিয়ে কবজিতে চোটও পেয়েছেন।

ফাইনালে ওঠার পর ইয়ানিক সিনার
এএফপি

অ্যাংজাইটি কিংবা উদ্বেগ ব্যাধির কারণে ড্রাপার নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। হারের পর বলেন, ‘আমি বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষ। সবকিছু মিলিয়ে চাপটা যখন বাড়ে, তখন কোর্টে বমি বমি ভাব লাগে। পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠলে নিজেকে অসুস্থ মনে হয়।’

দুই বন্ধু ড্রাপার ও সিনারের জন্ম ২০০১ সালে। কিন্তু সিনার খেলছেন ক্যারিয়ারের ২০তম গ্র্যান্ড স্লামে, আর ড্রাপারের এটি ক্যারিয়ারের ১০ম গ্র্যান্ড স্লাম। ক্যারিয়ারের শুরুতে অ্যাঙ্কেল ও কাঁধের চোটে ভুগেছেন ড্রাপার।

মেয়েদের দ্বৈত ফাইনালে শিরোপা জিতেছেন ইউক্রেনের লুদমিলা কিচেনোক ও লাটভিয়ার ইয়েলেনা ওস্তাপেঙ্কো জুটি। ফাইনালে ক্রিস্টিনা ম্লাদেনোভিচ ও ঝ্যাং সুয়াই জুটিকে ৬-৪, ৬-৩ গেমে হারান এই জুটি। নিজের বিয়ে বাতিল করার দুই দিন পরই এই শিরোপা জিতলেন ৩২ বছর বয়সী কিচেনোক। গত বুধবার প্রেমিক স্তাস খামরস্কিকে বিয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। খামরস্কি আবার ওস্তাপেঙ্কোর কোচও। কিন্তু সামনে চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচ থাকায় বিয়ে পিছিয়ে দেন তাঁরা।

আরও পড়ুন