উইম্বলডনে নিষিদ্ধ রাশিয়া, তবু চ্যাম্পিয়ন এক ‘রুশ’
ভাগ্যিস, চার বছর আগে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন ইয়েলেনা রিবাকিনা!
যুক্তরাষ্ট্রে টেনিস প্রশিক্ষণ নিতে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন ছিল রিবাকিনার। রাশিয়ান টেনিস ফেডারেশনের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। তাঁর সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল কাজাখস্তান টেনিস ফেডারেশন। তবে একটাই শর্ত ছিল, নিতে হবে কাজাখস্তানের নাগরিকত্ব। সেই শর্ত মেনে জন্মভূমি রাশিয়া ছেড়ে কাজাখস্তানের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন বলেই তো এবারের উইম্বলডনে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন রিবাকিনা। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের কারণে এবারের উইম্বলডনে নিষিদ্ধ ছিলেন রুশ খেলোয়াড়েরা। কিন্তু ২০১৮ সালে কাজাখস্তানের নাগরিকত্ব নেওয়া রিবাকিনার খেলতে কোনো বাধা ছিল না।
আর বাধা ছিল না বলেই ইতিহাস হলো। কাজাখস্তানের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্লাম এককে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়ে ফেললেন রিবাকিনা। আজ অল ইংল্যান্ড ক্লাবে ফাইনালে ২৩ বছর বয়সী রিবাকিনা হারালেন তাঁরই মতো ইতিহাস গড়তে নামা তিউনিসিয়ার উনস জাবিরকে। যদিও টুর্নামেন্ট জুড়েই রিবাকিনাকে উত্তর দিতে হয়েছে এই প্রশ্নের—নিজেকে তিনি কী মনে করেন, রাশিয়ান না কাজাখস্তানি?
১৯৬২ সালের পর প্রথমবার দুই নতুনকে ফাইনালে দেখেছে মেয়েদের গ্র্যান্ড স্লাম টেনিস। সেই ফাইনালে পরিষ্কার ফেবারিট ছিলেন জাবিরই। র্যাঙ্কিং আর খেলার ধরন মিলিয়েই ফেবারিট ছিলেন প্রথম আরব হিসেবে একের পর এক রেকর্ড গড়ে ফাইনালে ওঠা জাবির। কেন তাঁকে ফেবারিট বলা হচ্ছে, সেটি ফাইনালের প্রথম সেটটি ৬–৩ গেমে জিতে প্রমাণ দিয়েছেন বিশ্বের দুই নম্বর নারী খেলোয়াড় জাবির।
তবে সবকিছু বদলে গেল দ্বিতীয় সেট থেকেই। দুর্দান্তভাবে ফিরে এলেন র্যাঙ্কিংয়ে জাবিরের চেয়ে ২১ ধাপ পেছনে থাকা রিবাকিনা। পরের দুই সেট ৬–২, ৬–২ গেমে জিতে নিজেই হয়ে গেলেন ইতিহাস। ১৯৭৫ সালে ডব্লুটিএ র্যাঙ্কিংয়ের প্রচলন হওয়ার পর র্যাঙ্কিংয়ে তাঁর চেয়ে পিছিয়ে থাকা মাত্র একজনই চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন উইম্বলডনে। ২০০৭ সালে ভেনাস উইলিয়ামস যখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন, তখন তিনি মেয়েদের টেনিসে ৩১ নম্বর খেলোয়াড়।
ইতিহাস গড়ার ক্ষণে অবশ্য বাবা–মাকে কাছে পাননি রিবাকিনা। তাঁরা ছিলেন রাশিয়াতেই। তবে অতিথিদের বক্স থেকে রিবাকিনাকে সমর্থন জুগিয়ে গেছেন তাঁর বোন।