টি–টোয়েন্টির সুবাদে ‘পাওয়ার হিটিং’ এখন ক্রিকেটের পরিভাষাই হয়ে গেছে। ‘পাওয়ার হিটিং কোচ’ বলে একটা পদও যোগ হয়ে যাচ্ছে দলগুলোর কোচিং স্টাফে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশ দলের সঙ্গেই যেমন এ নিয়ে দিন তিনেক কাজ করে গেলেন অ্যালবি মরকেল। প্রথম আলোকে মুঠোফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সাবেক অলরাউন্ডার জানালেন পাওয়ার হিটিংয়ের বৃত্তান্ত—
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: ‘পাওয়ার হিটিং’ নিয়ে ইদানীং অনেক আলোচনা। আপনি তো বাংলাদেশ দলের সঙ্গে এ নিয়ে কাজও করলেন। একটু কি বলবেন, ‘পাওয়ার হিটিংয়ের’ মৌলিক বিষয়গুলো আসলে কী কী?
অ্যালবি মরকেল: প্রথমত, ব্যাটিংয়ের ভিতটা শক্ত হতে হবে এবং শারীরিক সামর্থ্য বাড়াতে হবে। ব্যাটিংয়ের জন্য শক্তিটা কাঁধ থেকে আসতে হবে, পশ্চাদ্দেশ থেকে নয়। বলের ওপর নিখুঁতভাবে চোখ রাখতে হবে এবং সেটাকে আপনার মারার পরিধির মধ্যে আসতে দিতে হবে। এরপর সর্বশক্তি দিয়ে ব্যাটটা ঘোরাতে হবে।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: এখানে তো দেখা যাচ্ছে শক্তিটাই আসল। একজন ব্যাটসম্যানকে পাওয়ার হিটার বানাতে হলে তাহলে কী করতে হবে?
মরকেল: দেখুন ‘পাওয়ার হিটিং’ কিন্তু বলার জন্য একটা খুব বিপজ্জনক শব্দ। মূলকথা হলো বাউন্ডারি মারার জন্য ব্যাটসম্যানকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, তার মানসিক গঠনটাই ও রকম হতে হবে। সব সময়ই ছক্কা মারতে যেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আমি মনে করি, সব ব্যাটসম্যানের পক্ষেই সম্ভব নিজেকে পাওয়ার হিটারে পরিণত করা এবং আরও ধারাবাহিকভাবে বাউন্ডারি মারার সামর্থ্য বাড়াতে পারা।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এই সামর্থ্য কেমন দেখলেন?
মরকেল: কিছু খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, এই জায়গায় উন্নতির জন্য তারা খুব বেশি সময় ব্যয় করেনি। এটা ঠিক যে বাংলাদেশে যে ধরনের উইকেটে খেলা হয়, সেখানে কাজটা কঠিন। তবে আমার বিশ্বাস, নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে খেলোয়াড়েরা তাদের এই সামর্থ্য অনেকটাই বাড়িয়ে নিতে পারবে।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলের এমন দু–একজন ব্যাটসম্যানের নাম কি বলতে পারেন, যাঁদের পক্ষে সত্যিকারের পাওয়ার হিটার হয়ে ওঠা সম্ভব?
মরকেল: সেটা বলতে হলে আমার আরও সময় লাগবে। তবে আমি তাঁদের মধ্যে শেখার প্রচণ্ড আগ্রহ দেখেছি। কিছু ভালো লক্ষণও দেখেছি।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: আপনি তো খুব অল্প সময় কাজ করলেন। এ সময়ের মধ্যে কতটুকু সাহায্য করতে পারলেন ব্যাটসম্যানদের?
মরকেল: আপনি ঠিকই বলেছেন, মাত্র তিন দিন কাজ করেছি। মোটামুটি একটা প্রভাব ফেলতেও এই সময়টা যথেষ্ট নয়। খেলোয়াড়দের অবস্থান কোথায়, কী তাঁদের ব্যাটিংয়ের অবস্থা, আগে সেটা মূল্যায়ন করে মৌলিক বিষয়গুলো ঠিক করাটা জরুরি। সত্যি বলতে কি, এটা খেলার আনন্দদায়ী একটা দিক। বলটাকে উড়ে যেতে দেখার চেয়ে আনন্দের আর কিছু হয় না।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের সৌজন্যে সাদা বলের ক্রিকেটে এখন বড় শট খেলার সামর্থ্য থাকাটা ব্যাটসম্যানদের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। আপনার কি মনে হয় আন্তর্জাতিক দলগুলোর উচিত এ ধরনের একজন কোচ সব সময় দলের সঙ্গে রাখা?
মরকেল: আমি অবশ্যই সেটা মনে করি এবং আমরা সামনে নিশ্চিতভাবে এটা দেখবও। আপনি যেটা বললেন, এটা এখন ক্রিকেটের অপরিহার্য অংশ। আমি বিশ্বাস করি, যথাযথ অনুশীলনের মাধ্যমে সব খেলোয়াড়ের পক্ষেই সম্ভব তাঁদের খেলায় বাড়তি শক্তি যোগ করা।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: আপনি তো নামিবিয়ার সহকারী কোচ ছিলেন। সেই দায়িত্ব কি এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন?
মরকেল: এ মুহূর্তে ওদের সঙ্গে আমার কাগজ–কলমে কোনো চুক্তি নেই। তবে পরামর্শক হিসেবে যুক্ত থাকব বলে আমি তাদের কথা দিয়েছি।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলের সঙ্গে আরও দীর্ঘ সময় কাজ করতে চান?
মরকেল: আমার জন্য উপযুক্ত হয়, এমন প্রস্তাব পেলে হয়তো না করব না।