বিলিয়ার্ড-স্নুকার ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?
রিয়াসাত করিম ভূঁইয়া: আমি একজন ব্যবসায়ী এবং পুল খেলোয়াড়। ২০১৬ থেকে খেলি। খেলাটার পৃষ্ঠপোষণাও করি। ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ১০টি ঘরোয়া পুল টুর্নামেন্ট করেছি ব্যক্তিগত উদ্যোগে। আমি আমার বাসার ছাদে দুটি পুল টেবিল বসিয়েছি পাঁচ বছর আগে। সেখানে খেলোয়াড়েরা বিনা মূল্যে অনুশীলন করেছে। এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে মিলে জাতীয় পুল চ্যাম্পিয়ন মুনতাসের জুবেরিকে টুর্নামেন্ট খেলতে সরঞ্জামসহ কাতার, ভিয়েতনাম ও মালদ্বীপে পাঠিয়েছি। পুলের সঙ্গে এমন সম্পৃক্ততার কারণেই সরকার আমাকে বিলিয়ার্ড ও স্নুকার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক করেছে।
নামে বিলিয়ার্ড-স্নুকার ফেডারেশন হলেও পুল খেলাও আপনার ফেডারেশনেরই অধীনে। অ্যাডহক কমিটি পুল, স্নুকার, বিলিয়ার্ডের মতো খেলাগুলোয় কী সংস্কার আনবে?
রিয়াসাত: প্রথমত, পুল-স্নুকার ছড়িয়ে দিতে চাই। এত দিন খেলাগুলো সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে ভুগেছে। অ্যাডহক কমিটির সভাপতি, সহসভাপতিসহ সবাই সহযোগিতা করবেন বলেছেন। কমিটির প্রথম সভাতেই তিনটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কী কী সিদ্ধান্ত?
রিয়াসাত: গতবারের মতো এবারও আমরা সার্ক স্নুকারে দল পাঠাব, কলম্বোয় যেটি আগামী বছর হবে। আজই (কাল) উত্তরা ক্লাবে সেটির বাছাই হয়েছে। ডিসেম্বরে আমরা ন্যাশনাল নাইন বল পুল ও ন্যাশনাল সিক্স রেড স্নুকার করব। এ ছাড়া সামনে স্কুল পর্যায়ে খেলাগুলো চালু করতে জোরালো উদ্যোগ নেব।
পুল-স্নুকার-বিলিয়ার্ডে বাংলাদেশে খেলোয়াড় সংখ্যা কেমন?
রিয়াসাত: তিনটি মিলিয়ে ২০০–এর বেশি হবে। এর মধ্যে পুল খেলোয়াড় বেশি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে পুল বেশি পছন্দ। তবে তিনটি খেলারই আলাদা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হয়। পুলে ন্যাশনাল নাইন বল, টেন বল, এইট বল টুর্নামেন্ট হয়। এইট বল অবশ্য বাংলাদেশে অনেক বছর হয় না। আশা করি এই খেলাগুলোর খেলোয়াড়ের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। এ জন্য বাণিজ্যিকভাবে টেবিলের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশে এখন কতগুলো পুল-স্নুকার টেবিল আছে?
রিয়াসাত: আমার ধারণা শ খানেকের বেশি পুল বোর্ড আছে বাংলাদেশে। বাণিজ্যিক ক্লাবে পুল বোর্ড দেখা যায়। আমাদের দেশে কিছু পুল ক্লাবও গড়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম, খুলনা, কক্সবাজার, সিলেটে, বগুড়ায় পুল ক্লাব আছে। মোহাম্মদপুরে আমি নিজে একটা পুল ক্লাব করেছি। লিমিটেড ক্লাবগুলোয় পুল টেবিল আছে। তবে ঢাকা, উত্তরা, বনানী...এসব ক্লাবের প্রতিটিতে ৩-৪টি করে স্নুকার টেবিল আছে।
খেলাগুলোকে সাধারণ মানুষের কাছে কীভাবে নেবেন?
রিয়াসাত: পুল-বিলিয়ার্ড-স্নুকার চাইলে সবাই খেলতে পারে। বাণিজ্যিক ক্লাবে পুল খেলতে ঘণ্টায় আড়াই শ-তিন শ টাকা লাগে। পুল খেলতে গেলে ক্লাব থেকেই কিউ (লাঠি) দেয়। একটা কিউয়ের দাম ২ হাজার টাকা হতে পারে, ২-৩ লাখও হতে পারে। একটা পুল টেবিল ৫০ হাজার টাকা হতে পারে, আবার ১০ লাখও হতে পারে।
এগুলো ব্যয়বহুল খেলা। কেউ খেলতে চাইলে ফেডারেশন সহযোগিতা করবে?
রিয়াসাত: অবশ্যই করবে। আমরা প্রশিক্ষণ দেব, টুর্নামেন্ট করব। সরকারের সহযোগিতাও দরকার। সরকার খেলাগুলোর সরঞ্জাম আমদানির কর কমালে ভালো হয়। তাহলে আরও পুল-স্নুকার টেবিল আনা যাবে। খেলার চর্চাও বাড়বে।
তিনটি খেলায় সাধারণ মিল কী?
রিয়াসাত: তিনটি খেলাই বল লাঠি দিয়ে মারে। তিনটির বোর্ডেই ৬টি করে পকেট থাকে। অমিলও আছে। পুল নাইন বলে বেশি খেলা হয়। স্নুকার বেশি হয় ২০ বলে। বিলিয়ার্ড ৩ বলে। পুল খেলার জন্য ৯ ফুট লম্বা টেবিল লাগে। বিলিয়ার্ড আর স্নুকার দুটি হয় একই টেবিলে, যার দৈর্ঘ্য ১২ ফুট।
স্নুকার-বিলিয়ার্ড ফেডারেশনের কোনো অফিসই নেই। বলা যায় ঠিকানাবিহীন। এ নিয়ে কী ভেবেছেন?
রিয়াসাত: স্নুকার-বিলিয়ার্ড ফেডারেশনের আগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুব মারা গেছেন। তিন দশক ধরে তিনি সম্পাদক ছিলেন। ওনার ব্যক্তিগত অফিসে কাজ চলত। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে আমরা একটা অফিস চেয়েছি, যাতে খেলাগুলোর কার্যক্রমে গতি আনা যায়।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: মাসুদ আলম