অধিনায়কের ভূমিকায় এটি আপনার প্রথম বিশ্বকাপ। অনুভূতিটা আসলে কেমন?
নাজমুল: এটা তো খুবই আনন্দের। প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার। এর মধ্যে বিশ্বকাপের মতো আসরে যদি দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি, সেটিও অধিনায়ক হিসেবে—এটা অনেক বড় ব্যাপার আমার জন্য। আমি খুবই এক্সাইটেড। আশা করছি, এই চ্যালেঞ্জটা আমি খুব ভালোভাবেই পার করতে পারব।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিবের চোটের কারণে দুটি ম্যাচে আপনি অধিনায়কত্ব করেছিলেন। দুটিই বড় ম্যাচ—অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। ঘটনাচক্রে পরে যারা ফাইনালে খেলেছে। চার–পাঁচ মাস পর ওই দুই ম্যাচের নির্দিষ্ট কিছু যদি মনে করতে বলি…যখন জানলেন আপনাকে অধিনায়কত্ব করতে হবে, সেই সময়কার অনুভূতি অথবা মাঠে বা মাঠের বাইরের কিছু…
নাজমুল: টু বি অনেস্ট, এত বড় দুটি টিমের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব করেছি, স্বাভাবিকভাবেই একটু নার্ভাস ছিলাম। এমন একটা আসরে অধিনায়কত্বটা কীভাবে হ্যান্ডল করব, দলও খুব একটা ভালো করছিল না সেই সময়, এসব বিষয় নিয়ে একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু মাঠের ভেতর ঢুকে যাওয়ার পর আস্তে আস্তে তা কেটে গেছে। এমন একটা আসরে ক্যাপ্টেনসি করাতে যেটা হয়েছে, আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। যে এক্সপেরিয়েন্সটা আমার মনে হয় এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অনেক কাজে আসবে।
নির্দিষ্ট করে যদি বলতে পারি, কী শিখেছেন?
নাজমুল: মাঠের মধ্যে সাহস করে ডিসিশন নেওয়ার বিষয়টা। বড় আসরে ডিসিশন নেওয়ার ক্ষেত্রে কনফিউশন কাজ করে, তবে আমি মনে করি, ডিসিশন নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের কাছে ক্লিয়ার থাকাটা খুব জরুরি। যেহেতু প্রথমবারের মতো এমন বড় আসরে ক্যাপ্টেনসি করছি, তাই মাঝেমধ্যে একটু কনফিউশন কাজ করছিল। তবে ম্যাচটা যখন সামনের দিকে এগোচ্ছিল, তখন বুঝতে পারছিলাম, আমার ক্লিয়ার মাইন্ড থাকাটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট। পরে কিছু কিছু জায়গায় আমি খুব সাহস করে ডিসিশন নিয়েছি। এই জিনিসটা আমাকে হেল্প করবে বলে আমি মনে করি।
বিশ্বকাপের আগে তো প্রতিটি দেশেই এক ধরনের হাইপ হয়। বাংলাদেশে তো অনেক। অধিনায়ক হিসেবে আপনি হয়তো বলবেন, অনেক ভালো খেলতে চাই। তা এই বিশ্বকাপে ‘অনেক ভালোর সংজ্ঞাটা কী? কী করলে আপনি বলবেন যে বাংলাদেশ ভালো করেছে? সরাসরি বললে এই বিশ্বকাপে দল নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?
নাজমুল: প্রত্যাশার চেয়েও যেটা বড় ব্যাপার, সেটা হলো, আপনি যেটা বললেন, আমরা আসলে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। এটা অবশ্যই প্রতিটি ক্যাপ্টেনেরই ইচ্ছা। তবে আমার কাছে প্রথম লক্ষ্য যেটা মনে হয়, আমাদের প্রথম রাউন্ড পার করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। টিম হিসেবে আমাদের সেই সামর্থ্য আছে। কারণ, এই ফরম্যাটে বড় টিম, ছোট টিম বলে কিছু নেই। প্রতিটি দলই নির্দিষ্ট একটা দিনে জেতার ক্ষমতা রাখে। আমরা আগে প্রথম রাউন্ডটা পার করি, এরপর আমাদের যাদের সঙ্গেই খেলা থাকুক, আমরা যদি ওই নির্দিষ্ট দিনটাকে নিজেদের করে নিতে পারি, তাহলে আমার মনে হয় যে খুব ভালো করা সম্ভব। তবে প্রথম টার্গেট, প্রথম রাউন্ডটা পার করা।
প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। আপনাকে যদি ম্যাচ ধরে ধরে সংক্ষেপে বলতে বলি…। প্রথম ম্যাচ যেহেতু শ্রীলঙ্কার সঙ্গে, ওদের দিয়েই শুরু হোক। প্রথম ম্যাচ বলে ওটাই কি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
নাজমুল: প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ, তবে ওভারঅল গ্রুপের কথা চিন্তা করলে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি ওই ম্যাচটা বের করতে পারি, তাহলে একটা মোমেন্টাম পাব। তাই বলে এই ম্যাচটা নিয়ে আমরা বাড়তি কিছু করতে যাব না। আমরা যেটা পারি, আমাদের যে সামর্থ্য আছে, সে অনুযায়ীই খেলব। আর আমরা যদি নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে ওই ম্যাচটা আমাদেরই হবে বলে আমরা মনে করি।
দ্বিতীয় ম্যাচটা বোধ হয় সবচেয়ে কঠিন। দক্ষিণ আফ্রিকা…
নাজমুল: দক্ষিণ আফ্রিকা খুবই ভালো দল। বোলিং–ব্যাটিং, দুই দিক দিয়েই খুবই ভালো। যে কন্ডিশনে আমরা খেলব, দুই টিমের জন্যই একদমই নতুন। তাই আমি বলতে চাই না যে আমরা ওদের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে থাকব। তাদের বিপক্ষেও আমাদের ভালো সুযোগ আছে জেতার।
নেদারল্যান্ডস নিয়ে কোনো মেন্টাল ব্লক কি থাকবে? আপনি মানেন কিংবা না মানেন থাকবে হয়তো, নেদারল্যান্ডস গত টি–টোয়েন্টি ও ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে, আর বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হেরেছে।
নাজমুল: টি–টোয়েন্টিতে নেদারল্যান্ডস, আমি যেটা একটু আগেও বললাম, নির্দিষ্ট দিনে যে ভালো খেলবে, ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা তাদেরই বেশি। কিন্তু বিশ্বকাপে ওদের কাছে আমরা যে ম্যাচটা হেরেছিলাম, সেটা ভিন্ন ফরম্যাটের। আমি মনে করি, ওই দিনটাতে আমরা কেউই ভালো করিনি, ওইটা আমাদের একটা বাজে দিন ছিল, যেটা ক্রিকেটে হতেই পারে। আমরা যদি নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারি, তাহলে আমার মনে হয় না নেদারল্যান্ডস আমাদের কাছ থেকে ম্যাচটা বের করে নিতে পারবে। এই ম্যাচে আমাদের মাথা ঠান্ডা রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, রিল্যাক্স থাকাটাও। আমরা যদি নিজেদের পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারি, তাহলে ভালো রেজাল্টই পাব ইনশা আল্লাহ।
গ্রুপের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ নেপাল তো বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই অজানা এক প্রতিপক্ষ। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশ সর্বশেষ কবে খেলেছে, আমার মনে পড়ে না। আপনি কি কখনো খেলেছেন নেপালের সঙ্গে?
নাজমুল: নেপালের ন্যাশনাল টিমের সঙ্গে একবার এসএ গেমসে খেলেছিলাম। ওদের ছোট করে দেখার কিছু নেই। আমাদের সেরাটা দিয়েই ওদের সঙ্গে খেলতে হবে। একটা ম্যাচেও রিল্যাক্স হওয়ার কিছু নেই। চারটা ম্যাচেই আমাদের পরিকল্পনা যা আছে, সেগুলো ঠিকমতো কাজে লাগাতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, চারটা ম্যাচই খুব মাথা ঠান্ডা রেখে খেলা।
অধিনায়ক হিসেবে যদি বলতে বলি, আপনার দলের শক্তি আর দুর্বলতা কী? দুর্বলতার কথা না–ই বলতে পারেন, তবে শক্তির জায়গাটা বলেন। মানে প্রতিটি দলেরই একটা ট্রেডমার্ক থাকে। বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টি দলের ট্রেডমার্কটা আসলে কী?
নাজমুল: এই মুহূর্তে আমাদের স্ট্রেংথ বোলিং ডিপার্টমেন্ট—স্পিন এবং পেস; দুটিই ভালো অবস্থায় আছে। সবাই জানেন, এই ফরম্যাটে বোলিংটা কত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বোলিংয়ে ভ্যারাইটি আছে। রাইট আর্ম আছে, রিস্ট স্পিনার আছে, লেফট আর্ম স্পিনার আছে, জোরে বোলার আছে, ডেথ বোলিং বিশেষজ্ঞ আছে। সব মিলিয়ে আমাদের সব ধরনের অপশনই আছে। শুধু নির্দিষ্ট দিনে পারফর্ম করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটসম্যানদের সেরা গেমটা খেলা ইম্পর্ট্যান্ট, সেটা যদি করতে পারি, ম্যাচ জেতার খুব ভালো সুযোগ থাকবে।
দুর্বলতা যদি না–ও বলি, তাহলে কি চিন্তার জায়গাটা ব্যাটিং? বোলিংটাকে এতটা হাইলাইট করলেন…আপনি কি ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত?
নাজমুল: বোলিং নিয়ে বললাম মানে এই না যে ব্যাটিং খারাপ। টি–টোয়েন্টিতে, আমার কাছে বোলিংটাই বেশি ইম্পর্ট্যান্ট মনে হয়; যে দল ভালো বোলিং করে, জেতার সম্ভাবনাও সে দলেরই বেশি থাকে। আমাদের বোলাররা আগে বোলিং করে ১৫০–১৭০, যতটা কমে রাখতে পারবে, ব্যাটসম্যানদের কাজটা ততটাই সহজ হবে। তখন দেখবেন ব্যাটসম্যানরা সেই প্রেশারটা ফিল করছে না। ব্যাটিং নিয়ে সত্যি কথা বলতে গেলে আমি খুব একটা চিন্তিত না। এই ফরম্যাটে, ফর্মে ফেরার জন্য একটা–দুইটা ভালো শটই যথেষ্ট। একটা পুরো ম্যাচও খেলার দরকার নেই। এমন না যে আপনাকে ৫০–৬০ করতে হবে, ১০০ করা লাগবে। আমার মনে হয় বোলাররা যদি ভালো করতে পারে, তাহলে ব্যাটসম্যানরাও যার যে ভূমিকা আছে, সে অনুযায়ী বোলারদের সঙ্গে তাল দিতে পারবে।
কিন্তু এবারের আইপিএল দেখে কি আপনার মনে হচ্ছে না টি–টোয়েন্টিতে বোলারেরই দরকার নেই। বোলিং মেশিন দিয়ে বল করলেই হয়, বলতে গেলে সব বলেই তো চার আর ছয়!
নাজমুল: আইপিএল আলাদা। আমার মনে হয়, আমাদের এই বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে সবারই টিভি বন্ধ রাখা দরকার। কারণ, আইপিএলের সিচুয়েশনটা বিশ্বকাপে আসবে না, এতটুকু আমি বলতে পারি। নিয়মিত ২৫০, ২৩০, ২৪০ রান উঠবে, সেটা আবার চেজও করে ফেলবে, এটা হয়তো হবে না। হঠাৎ একদিন হবে, তা–ও আমি বলব না যে ২৫০ রান হবে। আমার মনে হয় না, আইপিএল নিয়ে খুব একটা কথা বলার প্রয়োজন আছে।
আপনার ছোট্ট এই ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান–পতন, যে অভিজ্ঞতা অনেকের ১৫ বছর খেলেও হয় না। এর মধ্যে টার্নিং পয়েন্ট মনে হয় গত টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান ছিল আপনার, তিনটি ফিফটি। আপনার কাছেও কি ওই বিশ্বকাপটা টার্নিং পয়েন্ট, আরেকটি বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে অনুপ্রেরণাও?
নাজমুল: অবশ্যই। ওই বিশ্বকাপটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য টার্নিং পয়েন্ট ছিল। আমার কামব্যাকটাও সেখান থেকেই হয়েছে। আপনি যেটা বললেন, এই বিশ্বকাপে যাওয়ার সময় অবশ্যই ওটা আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। ওই ধরনের টুর্নামেন্টে আপনি যখন ভালো করবেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। যদিও ওটা অতীত। আমি কতটা ভালো করেছিলাম, কীভাবে ভালো করেছিলাম, সেগুলো হয়তো হেল্প করবে, কিন্তু আমাকে আবার নতুন করেই শুরু করতে হবে।
গত দুই বছরে টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বড় কিছু সাফল্য আছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ জয়টাকে আমি মনে করি টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ১–১ ড্র করে আসা, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়…বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি দলে কি সত্যি ইতিবাচক বড় একটা পরিবর্তন এসেছে? ওয়ানডেতে যেমন আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশ যেকোনো দলকে হারাতে পারে, টি–টোয়েন্টিতেও কি এমন বলার সময় এসেছে?
নাজমুল: এতটুকু আমি বলতে পারি, অনেক পরিবর্তন এসেছে। রেজাল্ট এসেছে দেখে আপনাদের কাছে প্রমাণ আছে। আপনারা আরও পরিষ্কার বুঝতে পারছেন, ওই রেজাল্টের কারণে আমরাও অনেক আত্মবিশ্বাস পাচ্ছি। ইংল্যান্ডের সঙ্গে যখন আমরা সিরিজটা জিতলাম, ওরা ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন ছিল। ওদের সেরা দলটাই কিন্তু এসেছিল। ওখান থেকে যেভাবে আমরা পরের সিরিজগুলো খেলেছিলাম, মাঝে মনে হয়, একটা সিরিজ আমরা হারলাম, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সেই সিরিজ হারলেও খুব ক্লোজ ছিল, টি–টোয়েন্টি ম্যাচ যেমন হয়, একটা–দুইটা ওভার খারাপ যাওয়ার কারণে একটা দল হেরে যায়। ওভারঅল কিন্তু আমাদের অনেক পরিবর্তন এসেছে এবং টিমের পরিবেশ বলেন বা অন্য যা কিছু বলেন, পরিবর্তন এসেছে। আমাদের টিমটা এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে।
এই পরিবর্তনটা কীভাবে হলো—খেলোয়াড়ি দক্ষতা তো হঠাৎ করে বদলে যায়নি, এটার মূলে কি অনেকটাই মানসিকতার পরিবর্তন? মাঝখানে সাকিব আল হাসান টি–টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব করেছেন, এই পরিবর্তনে সাকিবের কি বড় ভূমিকা ছিল?
নাজমুল: সাকিব ভাই যখন অধিনায়ক ছিলেন, দলের তখন সবাই ফ্রিডম নিয়ে খেলেছে। আমরা যে উইকেটেই খেলি, ভালো অথবা খারাপ, ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে আমাদের সেই ফ্রিডমটা ছিল। সবার সবার ওপরে একটা বিশ্বাস ছিল যে আমরা খেলা জিততে পারি। আমার মতে, মানসিকতার দিক থেকে এটা ছিল বিরাট একটা পরিবর্তন। আপনি যদি খেয়াল করেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে আমরা যে সিরিজ জিতলাম, একটা সময় মনে হচ্ছিল, আমরা হেরে যাব। কিন্তু সেখান থেকে শামীম পাটোয়ারি, তাওহিদ হৃদয় যেভাবে ম্যাচগুলো জিতিয়েছে আমাদের…ওই সময় আমরা যখন ড্রেসিংরুমে বসে খেলা দেখছিলাম, তখন কিন্তু একটা সময়ের জন্যও মনে হয়নি আমরা হেরে যাব। আমার ওই মুহূর্তের কথা মনে আছে। আমি, সাকিব ভাই, বেশ কয়েকজন আমরা একসঙ্গে ছিলাম। ওই সময় আমাদের মধ্যে বিশ্বাসটা ভালোভাবে তৈরি হয়েছে যে, যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা জিততে পারি। এটা অনেক ইম্প্রুভমেন্ট। আরেকটা জিনিস বলব, আমরা কিন্তু বেশ কয়েকটা সিরিজ বেশ ভালো উইকেটেই খেলেছি, আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ, ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ, আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ, শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও ভালো উইকেটেই খেললাম। ভালো উইকেটে আমাদের বোলাররা কীভাবে কম রান দেবে, উইকেট নেবে—এসব ব্যাপারে সেখান থেকে উন্নতি হয়েছে। ব্যাটসম্যানরাও ফ্রিডম নিয়ে খেলেছে। আমার মনে হয়, ভালো উইকেটে খেলায় স্কিলের দিক থেকে উন্নতি হয়েছে, মানসিকভাবেও উন্নতি এসেছে।
সাকিবের অংশে আবারও ফিরি। থিওরিটিক্যালি বললে সাকিবের ক্যাপ্টেনসি আপনি নিয়ে নিয়েছেন। এরপর সাকিবের সঙ্গে আপনার কী কথা হয়েছে? এখন সাধারণ খেলোয়াড় হিসেবে টিমে তাঁর ভূমিকাটা কী?
নাজমুল: আমার কাছে যখন ক্যাপ্টেনসি এসেছে, প্রথমেই উনি আমাকে খুব ভালোভাবে ওয়েলকাম করেছেন। কনগ্র্যাচুলেশনস জানিয়েছেন। শুভকামনা জানিয়েছেন। যেটা উনি নরম্যালি করে থাকেন। উনি সব সময়ই জুনিয়র বা ইয়াং প্লেয়ারদের ক্ষেত্রে অনেক সাপোর্টিভ। ক্যাপ্টেনসি আমার কাছে আসার পর অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা তিনি শেয়ার করেছেন। (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে) এই সিরিজেই যেমন বলেছেন, খুব বেশি দূরের জিনিস চিন্তা না করার জন্য। এ ধরনের উপদেশ বা পরামর্শ তিনি সব সময়ই দেন। যে জিনিসটা তিনি সব সময়ই বলেন, সেটা হলো, সবকিছু যে আমার একার করতে হবে, ব্যাপারটা এমন নয়। এটা ওনার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন। আমার যতটুকু রোল, সেটা পালন করাটাই টিমের জন্য মোর দ্যন এনাফ। আর মাঠের মধ্যেও ভালো ভালো ফিডব্যাক আমি ওনার কাছ থেকে পেয়েছি। বিশেষ করে কঠিন সময়ে বা ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। কোনো আইডিয়া মনে হলে বলা, সেই সাহায্যগুলো তো আমি মাঠের মধ্যে পাচ্ছিই। এটা তো আমার অনেক বড় হেল্প। আর ক্যাপ্টেন হিসেবে আমি যেটা ওনার কাছ থেকে চাই, সেটা হলো ওনার ব্যাটিং আর বোলিং যদি উনি টিমকে প্রতিদিন দেন, তাহলে আমি খুবই হ্যাপি। কারণ, আমি জানি, ওনার যে অভিজ্ঞতা, সেটা তিনি সবার সঙ্গে অটোমেটিক্যালি শেয়ার করবেন, আমি না বললেও শেয়ার করবেন।
সাকিব আল হাসানের এটা শেষ বিশ্বকাপ। অফিশিয়ালি না বললেও আমরা বুঝতে পারি, তাঁর হয়তো আর বিশ্বকাপ খেলা হবে না। শেষ বিশ্বকাপে সাকিবের কাছ থেকে নিশ্চয়ই বড় কিছু আশা করছেন? ২০১৯ বিশ্বকাপের মতো বলাটা হয়তো বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। সাকিব তো আছেনই, এর বাইরে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের কার কাছ থেকে বড় কিছু আশা করছেন?
নাজমুল: সাকিব ভাই নিজেও জানেন, ওনার কাছে প্রত্যাশাটা কত বেশি। আমি চাইব, উনি তাঁর বোলিং ও ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি অবদান রাখুন। আমি ক্যাপ্টেন হিসেবে তাঁকে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওভারগুলোই করাব, আমি চাই যে ওনার যে চারটা ওভার, সেগুলো ইমপ্যাক্টফুল হোক। ব্যাটিংয়ে আমি চাইব না, তিনি প্রতি ম্যাচে ৫০ করুক, ১০০ করুক, তিনি যদি ১০ রানও করেন, সেটি যেন খুবই ইমপ্যাক্টফুল হয়। সেই ১০ রান বা ২০ রান যেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়। এটা তো উনি গত ১৫–২০ বছর করেই আসছেন। টি–টোয়েন্টিতে আমি আরও বেশি করে চাইব। কারণ, টি–টোয়েন্টি উনি পৃথিবীজুড়েই খেলেছেন, সেই এক্সপেরিয়েন্সটা তাঁর আছে। তিনি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ভালো জানেন ও বোঝেন, কোন জিনিসটা কোন জায়গায় কতটুকু করা দরকার। খুব ছোট ছোট ইমপ্যাক্টফুল ইনিংস যদি ওনার কাছ থেকে পাই বা ওনার বোলিংয়ের জিনিসগুলো যদি পাই, তাহলে আমি মোর দ্যান হ্যাপি।
আর আপনি যেটা বললেন, কার কাছ থেকে বড় কিছু আশা করছি, আমার মনে হয় তাওহিদ হৃদয়। ও যেভাবে খেলছে, ও ওর ন্যাচারাল গেমটা যদি খেলতে পারে, তাহলে ওর জন্য অনেক ভালো বিশ্বকাপ হবে, পাশাপাশি বাংলাদেশ টিমেরও খুব ভালো হবে।
চাপ–সমালোচনার সঙ্গে তো ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আপনার পরিচয়। তা জয়ও করেছেন। এখন আপনি তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন, চাপটা আরও বেশি। অধিনায়ক হিসেবে ইনিংস শুরু করেছেন বেশি দিন হয়নি। টুকটাক সমালোচনা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে? এসব কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে হয়?
নাজমুল: অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। এটা যদি বলি, আমি এগুলো ফলো করি না, তাহলে মিথ্যা কথা বলা হবে। যদিও আমি কোনো সোশ্যাল মিডিয়ায় নেই, তারপরও কোনো না কোনোভাবে চোখের সামনে দুই একটা চলে আসেই। এটা ক্যাপ্টেন হিসেবে চ্যালেঞ্জিং। আপনি যদি একটা টিমের তিন ফরম্যাটের ক্যাপ্টেন হবে, তখন আপনাকে সব চ্যালেঞ্জই নিতে হবে। সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। আমি সব সময়ই চিন্তা করি, নিজেকে প্রশ্ন করি, আমি আমার স্কিলের ওপর আস্থাশীল আছি কি না, সেটি টিমের জন্য করছি কি না, টিমের প্রতি অনেস্ট কি না। আমি যখন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাই এবং বুঝতে পারি, যা যা করছি, সবই ঠিক করছি, তখন আমি নিজেকে বলি, যে আমি ঠিকই আছি। তখন আমার কাছে ওই প্রেশারটা সেভাবে ফিল হয় না। কারণ, সোশ্যাল মিডিয়াতে যেটা হয়, ইউটিউব বা ফেসবুক যেটিই বলেন না কেন, যে লেখালেখি বা কথাবার্তাগুলো হয়, আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় ৯৫ শতাংশ কথাবার্তাই মানুষ না জেনে, না বুঝে লেখে। ইউটিউবাররা দূর থেকে যেটা মনে করে, সে জিনিসটাই তুলে ধরার চেষ্টা করে। আমি তাদের দোষ দেব না। তাদের চিন্তা থেকে যে জিনিসটা ঘটছে মনে হয়, তারা সেটিই তুলে ধরে। পাশাপাশি এটাও সত্যি যে সাধারণ মানুষ তো তাদের অনেক বেশি ফলো করে।
টিম বা কোনো প্লেয়ার সম্পর্কে যদি কোনো কিছু লেখা হয়, তাহলে আমার মনে হয়, সেটা একটু জেনে–বুঝেই লেখা ভালো। কারণ, টিমের প্ল্যানিং সম্পর্কে স্বাভাবিকভাবেই বাইরের একটা মানুষ জানবে না, এটাই স্বাভাবিক। বাইরে থেকে মনে হতে পারে, এটা কেন হলো। আমরা কিন্তু কোনো বিষয়ে আগে সিদ্ধান্ত নিই। সিদ্ধান্তটা নিই এটা ভেবে যে এমনটা করলে বাংলাদেশ জিতবে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়াতে কিন্তু সেই সিদ্ধান্তে রেজাল্ট না আসার পর কথাগুলো হয়। আমি তাদের দোষও দিতে চাই না, পাশাপাশি এটাও মনে করি, কোনো কিছু বলা বা লেখার আগে আরও বেশি অথেন্টেসিটি চেক করে যদি বলা বা লেখা হতো, তাহলে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সঠিক একটা তথ্য যেত। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ টিমের জন্যও সেটা অনেক ভালো হতো। আমি মনে করি, ক্যাপ্টেন হিসেবে এটাই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং আমার জন্য।
তবে আমি এটাও মনে করি, এ বিষয়গুলো আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। আমি যেটা বললাম, আমি চেষ্টা করি, আমি আমার জায়গায় কতটুকু অনেস্ট, আমি বাংলাদেশ দলের হয়ে ভালো চিন্তা করছি, নাকি খারাপ চিন্তা করছি। আমি একটা জিনিস মনে করি, ক্রিকেট খেলায় কোনো রাইট কিংবা রং নেই। সাকিব ভাই, আজ একটা ওভারে ২০ রান দিয়ে দিয়েছেন, আরেক দিন তিনি মেডেন ওভার নিতেই পারেন। ওই দিন আমার ওই ডিসিশনটা রাইট ছিল, পরদিন সেটিই রং হয়ে গেছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো সব সময়ই থাকবে। এগুলো আসলে আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। খুব বেশি চিন্তা করারও নেই। নিজের কাজটা যত বেশি মনোযোগ দিয়ে করা যায়, সেটিই আসল কথা।
টি–টোয়েন্টিতে আপনার স্ট্রাইক রেট নিয়েও তো কথা ওঠা শুরু হয়েছে। যদিও এখন টি–টোয়েন্টিতে কত স্ট্রাইক রেটকে ভালো বলা হবে, এটা একটা ধাঁধা বটে। ৬০–৬৫ বলে সেঞ্চুরি করলেও অনেক সময় বলা হয়, এটাই ম্যাচ হারার কারণ। স্ট্রাইক রেট ভালো না খারাপ, এটা তো উইকেট, প্রতিপক্ষ বোলার, ম্যাচের পরিস্থিতি—এসবের ওপর নির্ভর করে। এখন স্ট্রাইক রেট নিয়ে যেভাবে কাটাছেঁড়া হয়, এটাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
নাজমুল: আপনি ঠিক কথাটা বলেছেন। ওই দিনে উইকেটটা কেমন ছিল, প্রতিপক্ষের বোলিং কেমন, আমাদের কত রান করা দরকার—এসব জিনিস কিন্তু ম্যাটার করে। ওই জিনিসগুলো বিচার করেই খেলতে হয়। এটা সবাই জানে, আমরা আমাদের দেশে খুব ভালো উইকেটে খেলি না, সম্প্রতি তা–ও একটু চেষ্টা করছি একটু ভালো উইকেটে খেলার। আমার কেন, বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানেরই স্ট্রাইক রেট বোধ হয় ১৩০–এর ওপরে নেই। ১২০ স্ট্রাইক রেট কি আইডিয়াল, এটাও কিন্তু আইডিয়াল না। সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ট্রাইক রেট নিয়ে অনেক কথা হয়…বাংলাদেশে সবাই কোচ, সবাই সিলেক্টর—আমি খুবই সরি, কথাটা বললাম। স্ট্রাইক রেটের কথা যদি বলেন, আমাদের কারও স্ট্রাইক রেটই ভালো না। ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট দেখলে ১৪০, ১৫০, ২০০—এমনও আছে। ওই স্ট্যান্ডার্ডে যদি চিন্তা করি, তাহলে আমাদের কারও স্ট্রাইক রেটই বোধ হয় ভালো না। এর কারণ, আমরা যে উইকেটে খেলে বড় হচ্ছি, যে ধরনের কম্পিটিশনে পার্টিসিপেট করছি, সেখানে ওই ধরনের সাপোর্টটা ব্যাটসম্যানরা ওভাবে পাচ্ছে না। ওই উইকেটে যেভাবে খেলার দরকার, সেভাবেই খেলছে। আমি তখন মানতাম যদি আমাদের অন্য ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট ১৫০ আর আমার ১১০, তাহলে বুঝতাম আমার এই জায়গায় উন্নতির দরকার আছে। আমার কাছে মনে হয়, আমাদের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানেরই এই জায়গায় উন্নতি করা দরকার। এটা তখনই আসবে, যখন আমরা ভালো উইকেটে ব্যাটিং করা শুরু করব। এটা এক দিন–দুই দিনের ব্যাপার না। এটা একটা অভ্যাসের ব্যাপার। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি জানবেন না, কোন বল কোন জায়গায় পড়লে ছয় মারা যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি কীভাবে মারবেন। আমরা যে উইকেটে খেলি, আমাদের খুব বুঝে–শুনে খেলতে হয়। উদাহরণ দিই, ইন্ডিয়া বা ইংল্যান্ড টিম যখন বাংলাদেশে আসে, তখন তাদেরও স্ট্রাইক রেট কমে যায়। তারা তখন ১৫০ স্ট্রাইক রেটে কেন খেলে না? এগুলো খুবই ছোট জিনিস, সবার বোঝার কথা নয়, সবাই হয়তো বুঝবেও না। ব্যক্তিগতভাবে আমি এটা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত না। আমি চাই যে ম্যাচটাতে আমার যে স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা দরকার, সেভাবে করার চেষ্টা করব, যদি না করতে পারি, তাহলে সেটা নিয়ে আমি কাজ করতে রাজি। পাশাপাশি আমি এটাও বলতে চাই, আমার এই জায়গায় উন্নতির দরকার আছে। আমি চেষ্টা করছি, কীভাবে আরও ভালো করতে পারি। উইকেট একদিক দিয়ে অজুহাত, আবার অজুহাতও না। কীভাবে স্ট্রাইক রেটে উন্নতি করতে পারি, এটা আমার মাথায় আছে। তবে আমি সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনা নিয়ে আমি একটুও বিচলিত না। কারণ আমি জানি, আমি সব সময় টিমের জন্যই খেলার চেষ্টা করি। আমাদের দলের সবাই টিমের কথাই চিন্তা করে। যার যে রোল, সে অনুযায়ী ব্যাটিং করার চেষ্টা করে।
আবার বিশ্বকাপে ফিরি, আপনার চোখে এই টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফেবারিট কে?
নাজমুল: এই কথাটা আমি যদি বলি, তাহলে দুইটা জিনিস হতে পারে। প্রথমে তো আমি বাংলাদেশকেই ফেবারিট মনে করব। আবার সেটা বললে…(হাসি)
আসলেই কি বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষমতা আছে বলে মনে করেন আপনি? বিশ্বাস করেন? আশা তো এক জিনিস, আর বিশ্বাস আরেক জিনিস…
নাজমুল: টু বি ভেরি অনেস্ট, এই মুহূর্তে বাস্তবতা বিচার করলে, অবশ্যই না। আবার আমরা যদি ইন্ডিয়ার ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের কথা বলি, ওই সময় তো কেউ আশা করে নেই। আমি যদি উদাহরণ হিসেবে বলি, ইউ নেভার নো, কী হবে। তবে বাস্তবতা অনুযায়ী, হ্যাঁ, এটা অনেক কঠিন একটা কাজ। বিশ্বাস করাও অনেক কষ্টকর। কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে এবং ক্যাপ্টেন হিসেবে, এটা বিশ্বাস করা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য যে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হবে। সেটার জন্য যা যা করা দরকার, সবই আমরা করতে প্রস্তুত। আমার টিমের প্রত্যেকটা প্লেয়ার। তবে এটা অনেক দূরের পথ, আমাদের ছোট ছোট স্টেপ ধরে এগোতে হবে। ওভারঅল যদি বলেন, ইন্ডিয়া, ইংল্যান্ড খুবই ভালো দল। নিউজিল্যান্ড সব সময়ই বিশ্বকাপ আসরে ভালো করে।
আপনার চোখে চার সেমিফাইনালিস্টের নাম যদি বলতে বলি…ইন্ডিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড তো বলেই ফেলেছেন। চার নম্বর দল কোনটা?
নাজমুল: একটা ফাঁকাই থাক। চেষ্টা করে দেখি (হাসি)।