প্যারিস অলিম্পিক ২০২৪

হঠাৎ করেই অলিম্পিকে গিয়ে বিরাট কিছু করে ফেলা সম্ভব নয়

প্যারিসে ২৬ জুলাই শুরু হচ্ছে অলিম্পিক গেমস। বাংলাদেশ থেকে এবারের অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন পাঁচ ক্রীড়াবিদ। প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা নাইর ইকবাল–এর সঙ্গে বলেছেন অলিম্পিককে ঘিরে তাঁদের স্বপ্ন আর রোমাঞ্চ নিয়ে। আজ পঞ্চম ও শেষ পর্বে থাকছে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দেশের দ্রুততম মানব ও দ্বিতীয়বারের মতো অলিম্পিকে অংশ নিতে যাওয়া ইমরানুর রহমানের কথা—

প্রশ্ন:

অলিম্পিকে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিচ্ছেন। প্যারিসে লক্ষ্য কী থাকবে?

ইমরানুর রহমান: আমি পরের রাউন্ডে যেতে চাই। যতটা সম্ভব ভালো করতে চাই। এমন কিছু করতে চাই, যেটা আগে কখনো পারিনি। মোটকথা, স্মরণীয় কিছু করতে চাই।

প্রশ্ন:

সম্প্রতি প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আপনি অলিম্পিকের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের ফাইনাল রাউন্ডে দৌড়াতে চান। কতটা আত্মবিশ্বাসী এই স্বপ্নপূরণে?

ইমরানুর: একটা বড় লক্ষ্য সামনে রেখেই আসলে এগোতে হয়। আমিও সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যে স্বপ্নের কথাটা বলেছি, জানি সেটি অনেক কঠিন। তবে চেষ্টা তো করে যেতে হবে। অলিম্পিক আসলে অনেক বড় ব্যাপার। একজন অ্যাথলেটের লড়াই করার সর্বোচ্চ জায়গা।

প্যারিস অলিম্পিকে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে অংশ নেবেন দেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর
এএফপি
প্রশ্ন:

অলিম্পিকের প্রস্তুতি তো ইংল্যান্ডেই নিচ্ছেন। কেমন হচ্ছে সেটা?

ইমরানুর: আলাদাভাবে কিছু করছি না। সারা বছর যেভাবে প্রস্তুতি নিই, সেভাবেই নিচ্ছি। তবে অনুশীলনের মাত্রা বাড়িয়েছি। প্রস্তুতি এখন পর্যন্ত ভালো। শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে আমি প্রস্তুত।

প্রশ্ন:

আপনার চোখে অলিম্পিকে ভালো করার পূর্বশর্ত কী?

ইমরানুর: এককথায় অত্যাধুনিক ও উন্নত মানের অনুশীলন। এর বিকল্প নেই। হঠাৎ করেই অলিম্পিকে গিয়ে বিরাট কিছু করে ফেলা সম্ভব নয়। পরিকল্পনা করে এগোতে হয়। একজন অ্যাথলেটের মূল কাজই হবে অনুশীলন করে যাওয়া। সঙ্গে পৃষ্ঠপোষকের সমর্থনও থাকতে হবে। যাঁরা অলিম্পিকে পদক জেতেন, তাঁরা বিশ্বের সেরা অ্যাথলেট। তাঁরা তেমন পরিবেশেই বেড়ে উঠেছেন।

প্রশ্ন:

আপনি অলিম্পিকে অংশ নেবেন দেশের দ্রুততম মানবের পরিচয়ে। এটাকে কীভাবে দেখেন?

ইমরানুর: এটা তো অবশ্যই মাথায় থাকবে। ট্র্যাকে সেভাবেই পারফর্ম করতে চাই। আমি নিজের পারফরম্যান্সটাকে আরও ভালো করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে অলিম্পিকে অংশগ্রহণ অবশ্যই ভবিষ্যতের জন্য বড় রসদ। অলিম্পিকের সব ইতিবাচক জিনিসই ক্যারিয়ারে যোগ করতে চাই।

অলিম্পিকে যতটা সম্ভব ভালো করতে চান ইমরানুর
প্রথম আলো
প্রশ্ন:

ইনডোর অ্যাথলেটিকসে সাফল্যের পর আপনি আর বড় কিছু করতে পারেননি। এটা কেন?

ইমরানুর: আমি তা মনে করি না। এরপর কিন্তু আমি জাতীয় রেকর্ড গড়েছি। দ্রুততম মানবের খেতাব ধরে রেখেছি। আমি যা করেছি, সেটা তো আগে কেউ করেনি। ভালোর শেষ নেই, তবে এটাও সত্যি, ইনডোর অ্যাথলেটিকসে আমার সাফল্যের পর অ্যাথলেটিকস নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে। এটা ধরে রাখতে অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন কাজ করে যাচ্ছে।

প্রশ্ন:

জাতীয় অ্যাথলেটিকসে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে আপনার বর্তমান টাইমিং ১০.৪৯ সেকেন্ড। এর আগে ১০.২৭, এমনকি ১০.০১ সেকেন্ড টাইমিংও করেছেন। এর চেয়ে ভালো কি সম্ভব?

ইমরানুর: ১০ সেকেন্ডের নিচে টাইমিং নামানো সহজ নয়। বিশ্বের সেরা অ্যাথলেটরা ১০-এর নিচে দৌড়ায়। এই কয়েক সেকেন্ডের পার্থক্য কমিয়ে আনার চেষ্টা ও পরিশ্রম অনেক ব্যাপক। অনুশীলন করে যাচ্ছি। দেখা যাক পারি কি না।

প্যারিস অলিম্পিক সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইমরানুর
প্রথম আলো
প্রশ্ন:

প্যারিস অলিম্পিকে ব্যক্তিগত সেরা টাইমিং করার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী আপনি?

ইমরানুর: আমি সামর্থ্য অনুযায়ী দৌড়াব। বিশ্বের সেরা ও প্রতিভাবান অ্যাথলেটদের সঙ্গে লড়তে হবে, অনেক কঠিন একটা মিশন। সেরা টাইমিং করতে হবে—এমন কিছু ভাবছি না। আমি দৌড়টা ভালো দিতে চাই। যেকোনো খেলাতেই অলিম্পিকে ভালো করতে হলে বড় পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। একজন ক্রীড়াবিদকে যেন অনুশীলন, পারফরম্যান্সের বাইরে অন্য কিছু নিয়ে মাথা ঘামাতে না হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে।