অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেড অনূর্ধ্ব–১৮ দলের খেলোয়াড় থেকে এখন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৭ দলের হয়ে খেলার আগ্রহটা কীভাবে হলো?
আরহাম: আমার বাবা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠান। কোচ সাইফুল বারী স্যার ট্রায়ালে আসতে বলেন। আমি ১০ অক্টোবর বাংলাদেশে এসে অনুশীলনে যোগ দিয়েছি।
সুযোগ-সুবিধায় অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য অনেক। পার্থক্য আছে আরও অনেক কিছুতেই। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে একটু কি সমস্যা হবে না?
আরহাম: এসব নিয়ে ভাবি না আমি। আমি ফুটবলার, আমার কাজ খেলা। এখানে সুযোগ-সুবিধা যতটুকু যা আছে, সেটি ব্যবহার করেই খেলতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব–১৭ দলের অনুশীলনে যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?
আরহাম: অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমার টিমমেটরা দুর্দান্ত। সবাই আমার সুযোগ–সুবিধার দিকে খেয়াল রাখছে। এই দলে আমার বন্ধু আর রুমমেট মো. মানিক। সে সারাক্ষণ জানতে চায়, আমি কী খেতে চাই! আমি ওকে বলেছি বিরিয়ানি খেতে আমার ভালো লাগে। মানিক বাইরে থেকে আমার জন্য বিরিয়ানি কিনে এনে দেয়। অন্যরাও খেয়াল রাখে আমার প্রতি। কোচ সাইফুল বারী স্যার, আতিকুর রহমান স্যারদের (সহকারী কোচ আতিকুর রহমান মিশু) কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখছি। দারুণ অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমার।
কমলাপুর স্টেডিয়ামে আপনাদের ক্যাম্প। সেখানে মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে না?
আরহাম: কোচ সাইফুল বারী স্যার, আতিকুর রহমান স্যাররা খুব কড়া। খুব কঠিন অনুশীলন হচ্ছে। আমরা সবাই কম্বোডিয়াতে এএফসি বাছাইপর্বে ভালো খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার অন্য টিমমেটরা তো ওখানেই থাকে। আমি আলাদা কেউ তো না। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলে আমি খেলব, দলের ক্যাম্প ওখানে, আমার যদি কোনো অসুবিধাও হয়, মানিয়ে নিতেই হবে। না হলে আমি এলাম কেন এখানে? আমার টিমমেটরা সবাই এত ভালো, এত ফ্রেন্ডলি, আমার সব সমস্যা ওরাই সমাধান করে দেয়। তবে যে এলাকাটায় ক্যাম্প, ওখানে অনেক আওয়াজ আর একটু কোলাহলপূর্ণ।
ঢাকা তো অনেক গরমও…
আরহাম: আমার সমস্যা এটাই। আবহাওয়া খুব গরম। তবে শুনছি কম্বোডিয়ায়ও নাকি এমনই আবহাওয়া। একটু কষ্ট তো হচ্ছেই। তবে আমি বেশি করে তরল খাবার খাচ্ছি। পানি বেশি খাচ্ছি।
অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেডের বয়সভিত্তিক লিগটা কেমন?
আরহাম: আমরা গত মৌসুমে ২২টা ম্যাচ খেলেছি। এর ফাঁকে ফাঁকে কিছু কাপ প্রতিযোগিতাও হয়। সবাই খুব সিরিয়াস। কারণ, এখানে ভালো করলেই পরের ধাপে ওপরের দিকে যাওয়াটা সহজ হয়।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৭ দলের ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার আগে তো ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেড থেকে ছুটি নিয়ে আসতে হয়েছে। কোচের সঙ্গে কী কথা হয়েছে? তিনি কী বলেছেন?
আরহাম: প্রথমত, খুব খুশি হয়েছেন। আমাকে শুভকামনা জানিয়েছেন। কোচ বলেছেন, নিজের মাতৃভূমির জন্য খেলবে, নিজের সর্বোচ্চটা দিতে হবে। নিজেকে উজাড় করে দেবে। তিনি বলেছেন, এএফসি অনূর্ধ্ব–১৭ প্রতিযোগিতা আমার ফুটবলার হয়ে উঠতে দারুণ সাহায্য করবে। কারণ, এই প্রতিযোগিতা আমার অভিজ্ঞতা অনেক বাড়িয়ে দেবে।
অস্ট্রেলিয়ায় বড় হলেও ক্রিকেট নিয়ে কখনো আগ্রহ জাগেনি?
আরহাম: আমি ক্রিকেট খেলেছি। তবে ফুটবলই আমার ভালো লাগে। ক্রিকেট সেভাবে টানে না। মাঝেমধ্যে বাড়ির সামনে বাবার সঙ্গে ক্রিকেট খেলি। সেটা সময় কাটাতে।
বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে কোনো ধারণা আছে? কোনো ফুটবলারকে চেনেন?
আরহাম: একেবারেই ধারণা ছিল না। এখন ধারণা হচ্ছে। বাংলাদেশ ফুটবল উন্নতির চেষ্টা করছে। আমি আসলে বাংলাদেশের কোনো ফুটবলারকে সেভাবে চেনার সুযোগ পাইনি।
কম্বোডিয়ায় এএফসি অনূর্ধ্ব–১৭ বাছাইপর্বটা কেমন হতে পারে বাংলাদেশের জন্য?
আরহাম: আমি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৭ দলকে অনুসরণ করি আগে থেকেই। ভুটানে সাফ খেলতে গিয়েছিল ওরা। ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে যায়। আমরা দল হিসেবে ভালো। কম্বোডিয়ায় আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, ম্যাকাও ও কম্বোডিয়ার বিপক্ষে খেলা। খুব লড়াই করতে হবে। আশা করি, আমরা ভালো করব।