'বাংলাদেশের হয়ে খেলতে তৈরিই আমি'

>
ইসমাইল বাঙ্গুরা
ইসমাইল বাঙ্গুরা
আরও দুই আফ্রিকানের সঙ্গে তাঁকেও বাংলাদেশ জাতীয় দলে চান কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। কোচের চাহিদা মেনে তিনজনকেই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাইয়ে দিতে কাজ শুরু করেছে বাফুফে। ইসমাইল বাঙ্গুরা নিজেও রাজি। কাল এসব নিয়েই মতিঝিলে ক্লাব লনে দাঁড়িয়ে কথা বললেন মোহামেডানের গিনিয়ান স্ট্রাইকার

* বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার প্রস্তাব পেয়ে কেমন ছিল আপনার অনুভূতি?
ইসমাইল বাঙ্গুরা: বেশ ভালো। কারণ জাতীয় দলে খেলার মর্যাদাই আলাদা। কোচ ডি ক্রুইফের হয়ে প্রস্তাবটা প্রথম আমার কাছে আনেন জাতীয় দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু। সঙ্গে সঙ্গে বলেছি, ইয়েস, হোয়াই নট? কোচও পরে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে তৈরিই আছি আমি।
* বাংলাদেশ দলে খেলতে আগ্রহী হলেন কেন?
বাঙ্গুরা: প্রত্যেক ফুটবলারেরই স্বপ্ন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তোলা। কিন্তু আমি গিনির জাতীয় দলে কখনো সুযোগ পাইনি, যদিও অনূর্ধ্ব-২৩ দলে খেলেছি। জাতীয় দল তো আলাদা বিষয়, তাই বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার প্রস্তাবে দ্বিতীয়বার না ভেবেই রাজি হয়ে গেছি।
* গিনির অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলেছেন কোন টুর্নামেন্টে?
বাঙ্গুরা: আফ্রিকা অলিম্পিওঁ মানে আফ্রিকা অঞ্চলের অলিম্পিক বাছাইয়ে। আলজেরিয়ায় টুর্নামেন্টটা হয়েছিল ২০০৭ সালে। বতসোয়ানা, তিউনিসিয়া, মরক্কোসহ আরও একটি ম্যাচে খেলেছি ওই টুর্নামেন্টে। তবে শেষ ম্যাচে ছিলাম না দুই হলুদ কার্ডের কারণে। এ ছাড়া আরও কিছু ম্যাচ খেলেছি, ৮-১০টি গোলও আছে আমার।
* আপনার তো বয়স এখন ৩০। অনেকের মধ্যে এই আলোচনাটা আছে যে, বুড়ো বাঙ্গুকে নিয়ে আসলে কতটা লাভ হবে! আপনি নিজে কী মনে করেন, নাগরিকত্ব পেলে কত দিন খেলতে পারবেন লাল-সবুজ জার্সিতে?
বাঙ্গুরা: কত দিন খেলতে পারব তা কী করে বলি! তবে এটা বলতে পারি, আফ্রিকান খেলোয়াড়েরা বয়সের কাছে সহজে হার মানে না। আমার বয়স ৩০ ঠিকই, কিন্তু শরীরটা দেখুন ২০ বছরে তরুণের মতে। অন্তত সাত-আট বছর খেলতে পারব, এই বিশ্বাস আছে। বাংলাদেশে আমি পাঁচ বছর ধরে খেলছি। এ দেশের জল-হাওয়ার সঙ্গে ভালোই পরিচয় আছে। সুযোগ পেলে ২০০ ভাগ দেব মাঠে।
* এ দেশে জন্ম নেননি। তাহলে আপনার পক্ষে এ দেশের ফুটবলের জন্য ২০০ ভাগ দেওয়া কি সত্যিই সম্ভব? নাকি এটা আবেগ থেকে বলছেন?
বাঙ্গুরা: আবেগ নয়, সত্যিই বলছি। কোথায় জন্মেছি তা বড় নয়। মাঠে নামলে ভুলে যাই আমি কোন দেশের। বিজেএমসির হয়ে খেলছি কিংবা এখন মোহামেডান, যে দলের জার্সিই পরি শতভাগই দিয়েই খেলি। বাইরের দুনিয়ায় দেখুন, নাগরিকত্ব নিয়ে অনেক ব্রাজিলিয়ানও অন্য দেশে খেলছে। পল পগবা গিনিতে জন্ম নিয়ে এখন ফ্রান্স দলে খেলছে নির্ভরতা হয়েই। আমিও সেভাবেই খেলতে চাই।
* আপনার অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশ দল শক্তিশালী হবে মনে করেন? বিশেষ করে আক্রমণভাগ?
বাঙ্গুরা: এটা আমার একার ব্যাপার নয়। সামাদ ও কিংসলেকেও নাগরিকত্ব দিয়ে জাতীয় দলে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। সবাইকে যদি নেওয়া যায় তাহলে একটা পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা আমরা করবই। আমি নিজেও চাইব যত বেশি সম্ভব গোল করতে। এ দেশের ফুটবলাররা চেষ্টা করছে, তারা ভালোও খেলছে। তবে আমাদের নেওয়া হলে দলের শক্তি নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও বাড়বে।
* আপনার পরিবার কী বলছে?
বাঙ্গুরা: পত্রিকায় খবরটা চলে আসায় আমি বাড়িতে ফোনে কথা বলেছি স্ত্রীর সঙ্গে। সে বলেছে, কোনো সমস্যা না হলে তুমি এগিয়ে যাও। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিতে পারো। আজই (কাল) বাবার সঙ্গেও এ নিয়ে কথা হয়েছে। তাঁরা কেউই আমাকে না বলেননি।