সাফজয়ী ওঁরা ২৩ জন
কৃষ্ণা রানী সরকার
সাফ ফুটবলে পাঁচ ম্যাচেই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়জন খেলেছেন বদলি হিসেবে। ছয়জন মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তারপরও সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লিখেছেন বদিউজ্জামান
‘কৃষ কুল’—ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলের নামটা নিজেই দিয়েছেন। বাস্তবেও বেশ শান্তশিষ্ট চরিত্রের কৃষ্ণা রানী সরকার। কিন্তু মাঠে নামলেই যেন অন্য চেহারা দেখা যায় এই স্ট্রাইকারের। ফুটবল পায়ে শান্ত মেয়েটাই হয়ে ওঠেন অশান্ত। প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে মেতে ওঠেন উল্লাসে।
বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের অন্যতম ভরসা কৃষ্ণা উঠে এসেছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার উত্তর পাথালিয়া গ্রাম থেকে। সদ্য শেষ হওয়া মেয়েদের সাফে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করায় বড় অবদান কৃষ্ণার। ৫ ম্যাচে করেছেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ গোল। ফুটবলে কৃষ্ণার হাতেখড়ি ২০১১ সালে বঙ্গমাতা স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে। সেবার খেলেছিলেন সুতি ভিএম পাইলট মডেল হাইস্কুলের হয়ে। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে অর্থনীতিতে স্নাতকে পড়া কৃষ্ণা একসময় সারাক্ষণ কাকাতো ভাইদের সঙ্গে ফুটবল খেলতেন। একবার তো মা রাগ করে বল কেটে ফেলেছিলেন।
২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে কৃষ্ণার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলা শুরু। এরপর একে একে খেলেছেন এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাই ও চূড়ান্ত পর্বে। বয়সভিত্তিক সাফে খেলেছেন একাধিকবার। ২০১৪ সালে পাকিস্তানে মেয়েদের সাফে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেকেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেন হ্যাটট্রিক। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। হয়ে উঠেছেন জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। ২০১৬ সালে প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কারের বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদের স্বীকৃতি পেয়েছেন কৃষ্ণা। বাবা বাসুদেব সরকারের একসময় দরজির দোকান ছিল। কিন্তু ফুটবল দিয়ে বদলে গেছে কৃষ্ণাদের পরিবারের চেহারা। মাটির ঘর ভেঙে উঠেছে পাকা বাড়ি। শুধু পরিবারকে নয়, নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে বদলে দিতে চান তিনি বাংলাদেশের ফুটবলকেও।