সাফজয়ী ওঁরা ২৩ জন
আঁখি খাতুন
সাফ ফুটবলে পাঁচ ম্যাচেই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়জন খেলেছেন বদলি হিসেবে। ছয়জন মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তারপরও সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লিখেছেন বদিউজ্জামান
বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে দীর্ঘাঙ্গি খেলোয়াড় আঁখির উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। উচ্চতার কারণেই পুরো দলের মধ্যে আলাদা করে নজর পড়ে আঁখির ওপর। সিরাজগঞ্জের মেয়ে আঁখি খেলেন ডিফেন্ডার হিসেবে। গোল ঠেকানোই তাঁর আসল কাজ। কিন্তু এর পাশাপাশি ওভারল্যাপ করে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সেও আতঙ্ক ছড়ান তিনি। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেডে গোল করায় বিশেষ দক্ষতা আছে তাঁর। রক্ষণ থেকে আঁখির বাড়ানো লং বলগুলোও বেশ কার্যকর।
বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের আবিষ্কার আঁখি। ২০১৪ সালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ইব্রাহিম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে খেলেন বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে। নজরকাড়া পারফরম্যান্স দিয়ে পরের বছরই জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পান। ওই বছরই সুযোগ পেয়ে যান বিকেএসপিতে। বর্তমানে বিকেএসপির উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী আঁখি ২০১৬ সালে তাজিকিস্তানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপের আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলে খেলেন প্রথমবার। ২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সদস্য হিসেবে জেতেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
সিরাজগঞ্জের পারকোলা গ্রামে একসময় তাঁতশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন আঁখির বাবা আক্তার হোসেন। নিজেদের মেশিন ছিল না। অন্যের মেশিনে তাঁত বুনে সংসার চলত আঁখিদের। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আর্থিক সহায়তা ও জমি পেয়ে সেই দুঃখ ঘুচেছে আঁখির। উচ্চতা ও রক্ষণের দক্ষতা মিলিয়ে অনেকেই আঁখিকে ‘মেয়েদের ফুটবলের কায়সার হামিদ’ বলে ডাকেন। আঁখি এতে গর্বই বোধ করেন। গত জুনে ঢাকায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫৭ ধাপ এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়াকে (৯০) ৬-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ (১৪৭)। ওই ম্যাচে আঁখি জোড়া গোল করার পর মালয়েশিয়ার ফুটবলাররা জানতে চেয়েছিলেন, ‘আঁখি, আপনি কী খান? এত ভালো কীভাবে খেলেন?’