মেসিকে নিয়ে আবারও বসবেন তাঁর বাবা ও বার্সা

লিওনেল মেসি থেকে যেতে পারেন বার্সেলোনায়।ছবি: টুইটার

প্রথম বৈঠকে কোনো সুরাহা হয়নি। তখনই জানা গিয়েছিল আবারও আলোচনার টেবিলে বসবে দুই পক্ষ। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আর্জেন্টাইন আজ সম্ভাব্য দ্বিতীয় বৈঠক হওয়ার কথা জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’। বার্সেলোনায় লিওনেল মেসির ভবিষ্যৎ নিয়ে আজ দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসতে পারেন তাঁর বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি এবং ক্লাবটি।

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্ত’-এর সংবাদকর্মী মার্তা ফার্নান্দেজ কাল এ নিয়ে ‘স্পোর্তিয়া’র সঙ্গে আলোচনায় এ নিয়ে বলেছেন, ‘আগামীকাল (আজ) দ্বিতীয় বৈঠক হবে। আশা করি তখন নিরেট কোনো তথ্য পাওয়া যাবে, কেউ কথা বলবে। মেসি ও বার্সেলোনা ঘিরে কী চলছে তা ভক্তদের জানা দরকার।’ তবে কালই বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যম একটি সম্ভাব্যতার কথা জানিয়েছে। বার্সেলোনায় চুক্তির শেষ বছরটা পূর্ণ করে যেতে পারেন মেসি। সূত্রের মাধ্যমে খবরটি জানিয়েছে ইএসপিএন।

আজ মেসি প্রসঙ্গে আবার বার্সার সঙ্গে বসবেন হোর্হে
ছবি: রয়টার্স

এ ছাড়াও মেসির বাবার সঙ্গে কথা বলার খবর জানিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘দেপোর্তেস কুয়াত্রো’। হোর্হে মেসি তাঁর গাড়িতে থাকতে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বার্সায় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেসি থাকবেন কি না এবং তারপর কি ফ্রি-এজেন্ট হিসেবে ক্লাব ছাড়বেন? মেসির বাবা নাকি জবাব সেরেছেন এক শব্দে—‘হ্যাঁ’। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মিডিয়াসেট’ কেও মেসির বাবা বলেছেন বার্সেলোনা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের সঙ্গে আলোচনা ‘ভালো’ হয়েছে।

কাল মেসির বাসায় ঘন্টাখানেক ছিলেন তাঁর বাবা। মেসির বন্ধু ও বার্সা সতীর্থ লুইস সুয়ারেজও সেখানে ছিলেন। সেখানে দুই সতীর্থ ফাইভ-এ-সাইড ও প্যাডল টেনিস খেলেছেন। ক্লাবের অনুশীলনে টানা তৃতীয় দিন অনুপস্থিত মেসি। পিসিআর টেস্টেও অংশ নেননি তিনি। অনুশীলনে উপস্থিত না হওয়ায় দিন প্রতি মেসিকে ১ লাখ ইউরো জরিমানা করার কথা ভেবেছে বার্সা। তবে সংবাদমাধ্যম জানায়, বার্সা সভাপতি বার্তোমেউ নাকি মেসির প্রতি একটু নরম হয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তাঁকে জরিমানা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বার্তোমেউ।

কাতালান ক্লাবটির সঙ্গে মেসির সম্পর্ক ছিন্ন করতে বার্সেলোনায় পা রেখেছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু সময় গড়িয়ে চলার সঙ্গে পরিস্থিতি ঠিক তার উল্টো দিকে এগোচ্ছে। বার্সেলোনার বিমানবন্দরে নামার পর সংবাদমাধ্যমকে হোর্হে মেসি বলেছিলেন, বার্সায় তাঁর ছেলের ভবিষ্যৎ ‘কঠিন’। এ ছাড়া ২০২১ সাল পর্যন্ত মেসি বার্সায় থাকবেন কি না, এ প্রশ্নের জবাবে হোর্হে তখন বলেছিলেন ‘আমি জানি না।’

মেসির বার্সায় থেকে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা কাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন আর্জেন্টাইন সংবাদকর্মী মার্টিন আরেভালো। ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, ‘বিশ্বসেরা ফুটবলারের ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত থেকে যাওয়ার নিরেট সম্ভাবনা আছে। চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করবেন তিনি এবং এ মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাবছেন। নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে (বার্সায়) থেকে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। মেসি খুব দ্রুতই এর সমাধান করবেন এবং জানাবেন। দেখা যাক কী ঘটে।’

টিওয়াইসি স্পোর্টসের সংবাদকর্মী সিজার লুইস মার্লো আরেভালোর উদ্ধৃতি দিয়ে ৯ ঘণ্টা আগে টুইট করেন, ‘মেসির বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ। আগামীকাল এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’ এর ঘণ্টাখানেক পর আরও একটি টুইট করেন সিজার লুইস, ‘২০২১ সাল পর্যন্ত বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছেন মেসি। চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করেন যাবেন তিনি।’

বার্সার দাবি, মেসির ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছে কথা জানানোর শেষ সময় ছিল ১০ জুন, সেটা ১০ জুনই থাকবে। করোনার কারণে মৌসুম আগস্ট পর্যন্ত পেছালেও মেসির চুক্তির শর্তের সে মেয়াদ তো আর পেছানো হয়নি। ফলে মেসি এখনো বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এবং তাঁকে নিতে চাইলে অন্য ক্লাবকে অর্থ খরচ করেই নিতে হবে। আর বার্সেলোনার অনিচ্ছায় নিতে চাইলে সে অঙ্কটা হতে হবে ৭০ কোটি ইউরো। মেসির দাবি অবশ্য অন্যরকম। বার্সার শর্ত ছিল, নতুন চুক্তিতে প্রতি মৌসুম শেষে চাইলে ক্লাব ছাড়তে পারবেন মেসি। আর্জেন্টাইন তারকা নতুন মৌসুমের আগে ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে দাবি করেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে যেহেতু এই মৌসুম স্বাভাবিক সময়ে শেষ হয়নি, আরও পিছিয়েছে, আর এই পেছানো সময় ধরেই বার্সার শর্তের মধ্যে থেকে সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ নিজেকে তিনি এখন আর বার্সার খেলোয়াড় মনে করছেন না।