ভারতের প্রো-কাবাডির নিলামে বাংলাদেশের আট খেলোয়াড়
ভারতের প্রো-কাবাডি লিগের নিলামে ডাক পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের আট খেলোয়াড় আরদুজ্জামান মুন্সি, তুহিন তরফদার, জাকির হোসেন, সবুজ মিয়া, মাসুদ করিম, জিয়াউর রহমান, মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হাসান।
ক্রিকেটের আইপিএলের আদলে গড়া পেশাদার কাবাডি লিগ প্রো-কাবাডির এটা অষ্টম আসর। এবারের মৌসুমের নিলাম আয়োজন হওয়ার কথা ছিল গত এপ্রিল মাসেই। আর জুন-জুলাইয়ে শুরু হওয়ার কথা ছিল চলতি মৌসুমের প্রো-কাবাডি। কিন্তু ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রো-কাবাডি লিগ স্থগিত হয়ে আছে।
আগস্টের শেষ সপ্তাহে মুম্বাইয়ে শুরু হওয়ার কথা এবারের মৌসুমের নিলাম। প্রো–কাবাডির টুইটার পেজে এরই মধ্যে আজ একটা টুইট করেছে আয়োজকেরা। যেখানে একটা ভিডিও শেয়ার করে লেখা হয়েছে, ‘অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ...। শিগগিরই শুরু হচ্ছে ভিভো প্রো–কাবাডির খেলোয়াড়দের নিলাম।’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪৪২ জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে নিলামে থাকবেন বাংলাদেশের আটজনও। গত সাত আসরের চেয়ে এবারই সর্বোচ্চসংখ্যক বাংলাদেশি খেলোয়াড় সুযোগ পাচ্ছেন প্রো-কাবাডির নিলামে।
গত মৌসুমে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হিসেবে ভারতের সিদ্ধার্থ দেশাইকে ১ কোটি ৪৫ লাখ ভারতীয় রুপিতে কিনে নেয় তেলেগু টাইটানস। আর প্রো-কাবাডির বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের ডিফেন্ডার মোহাম্মদ নবী বখশর নিলামে দাম উঠেছিল ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার রুপি।
জাপান, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়ার সেরা সব খেলোয়াড়ের ভিড়ে যদিও বাংলাদেশিদের খুব বেশি দাম ওঠার সম্ভাবনা নেই। সর্বশেষ মৌসুমে বাংলাদেশের রেইডার মাসুদ করিমকে ইউপি ওয়ারিয়র্স কিনে নেয় ১০ লাখ ভারতীয় রুপিতে।
মূলত ‘এ’, বি ও ‘সি’—এ তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে বেশির ভাগ খেলোয়াড়কে। তবে একেবারে নতুন খেলোয়াড়দের কোনো ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়নি।
বাংলাদেশের অলরাউন্ডার জাকির হোসেন, ডিফেন্ডার জিয়াউর রহমান, সবুজ মিয়া, তুহিন তরফদার ও মনিরুল ইসলামকে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে রেখেছে প্রো-কাবাডির নিলাম কমিটি। রেইডার আরদুজ্জামান, হাসান আলী ও মাসুদ করিমও ‘সি’ ক্যাটাগরিতেই আছেন নিলামের তালিকায়। খেলোয়াড় কিনতে প্রতিটি দলের বাজেট ধরা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪ কোটি। এবারের আইপিএলে খেলবে ১২টি দল।
এর আগে প্রো-কাবাডির দুই আসরে ইউ মুম্বা ও পাটনা পাইরেটসের হয়ে খেলেছেন জাকির হোসেন। এবার সর্বোচ্চসংখ্যক বাংলাদেশি খেলোয়াড় ডাক পাওয়ার ঘটনাকে কাবাডির বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছেন জাকির, ‘কাবাডি লিগের এমন একটা বড় আসরে সুযোগ পাওয়াই কঠিন। দলগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের প্রোফাইল, পারফরম্যান্সের ভিডিও দেখে তারপরই বাছাইয়ের জন্য নিলামে ডাকে। কে কোন পজিশনে ভালো খেলে, সেটা তাদের নখদর্পণে থাকে। এখানে যেকোনো দলে খেলার সুযোগ পাওয়াও বিশাল কিছু। আমাদের খেলোয়াড়েরাও যে সাম্প্রতিক সময়ে ভালো পারফরম্যান্স করছে, সেটা নিলামের বড় তালিকা দেখে বোঝা যায়।’
গত মার্চে ঢাকায় হয়েছিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক প্রীতি কাবাডি টুর্নামেন্ট। পাঁচ দেশের ওই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে শিরোপা জেতায় বড় ভূমিকা রাখা সব খেলোয়াড়ই মূলত ডাক পেয়েছেন এবারের নিলামে।
প্রো-কাবাডির নিলামে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে জিয়াউর রহমান ছাড়া সবাই বিভিন্ন সার্ভিসেস সংস্থায় চাকরি করেন। এর মধ্যে নৌবাহিনীতে আছেন আরদুজ্জামান ও তুহিন তরফদার, বিজিবিতে জাকির হোসেন ও সবুজ মিয়া, পুলিশে মাসুদ করিম, বিমানবাহিনীতে মনিরুল ইসলাম ও সেনাবাহিনীতে মোহাম্মদ হাসান।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে প্রো–কাবাডিতে আরও বেশি খেলোয়াড় সুযোগ পাবে বলেই আশা জাকিরের, ‘আমরা যদি নিয়মিত প্রো-কাবাডিতে খেলার সুযোগ পাই, তাহলে ভবিষ্যতে আরও অনেকের খেলার আগ্রহ বাড়বে। তা ছাড়া ভারতে গিয়ে আমরা ভালো পারফরম্যান্স করলে যার যার সার্ভিসেস সংস্থারও সুনাম বাড়বে। দেশের পতাকাও উঁচুতে উঠবে।’