বাংলাদেশের বক্সিংয়ে পেশাদারির ছোঁয়া
পেশাদার যুগে ঢুকতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বক্সিং। আগামী পরশু মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোরে হবে দেশের প্রথম পেশাদার বক্সিং টুর্নামেন্ট। যে প্রতিযোগিতার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে, ‘সাউথ এশিয়ান প্রফেশনাল বক্সিং ফাইট নাইট—দ্য আল্টিমেট গ্লোরি।’
দেশের বক্সারদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে জায়গা করে দিতে এবং বক্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে প্রথমবার এমন আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বক্সিং ফাউন্ডেশন।
সাধারণত কোনো বক্সার অ্যামেচার থেকে পেশাদার জগতে ঢুকলে তাঁকে কোনো একটি প্রোমোশন কোম্পানিতে নাম লেখাতে হয়। সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তি করার পর বক্সিং রিংয়ে নামতে পারেন ওই বক্সার। প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বক্সারদের প্রমোটার হিসেবে রয়েছে এক্সেল স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্রোমোশনস।
আগামীকালকের প্রতিযোগিতায় বক্সিং রিংয়ে নামবেন ভারতের হর্ষ গিল, নেপালের মহেন্দ্র বাহাদুর চাঁদ, ভারত চাঁদ, বাংলাদেশের সুর কৃষ্ণ চাকমা, মোহাম্মদ আল আমিন, রিয়াজুল মন্ডল, জাহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ তুহিন, উৎসব আহমেদ, মোহাম্মদ আকাশ, আবু তালহা হৃদয়, রিসাতুল মাহমুদ ও হীরা মিয়া।
খেলা হবে ফেদারওয়েট, ক্রসারওয়েট, বান্টামওয়েট, ওয়েল্টারওয়েট ও লাইটওয়েট ক্যাটাগরিতে।প্রতিযোগিতার সবচেয়ে আকর্ষণীয় লড়াইটা হতে পারে বাংলাদেশ গেমসে সোনাজয়ী আল আমিন ও নেপালের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ভারত চাঁদের মধ্যে।
পেশাদার বক্সিংয়ের অভিষেক নিয়ে রোমাঞ্চিত বাংলাদেশের বক্সার আল আমিন আজ বলেন, ‘এত দিন এমন একটা প্রতিযোগিতারই অপেক্ষায় ছিলাম। পেশাদার জগতে নাম লেখাতে পেরে খুব ভালো লাগছে। বাংলাদেশে প্রথমবার পেশাদার বক্সিং শুরু হতে যাচ্ছে, এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
শুধু আমি একা নই, সবাই খুব আনন্দিত। আমাদের দেখে ভবিষ্যতে অনেকে বক্সিংয়ে উৎসাহিত হবে। কারণ, আমাদের দেশে বক্সিং খেলে কেউ কোনো টাকা পায় না। কিন্তু পেশাদার বক্সিংয়ে নাম লেখালে আয়ের সেই পথটাও খুলে যাবে।’
পেশাদার বক্সিংয়ে বাংলাদেশের বক্সারদের সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ বক্সিং ফাউন্ডেশনের পরিচালক আদনান হারুন। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অ্যামেচার বক্সিংয়ে অনেকে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনেন। কিন্তু তাঁরা যখন বক্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চান, তখন সেটা পারেন না। আমরা চাই এমন বক্সারদের তুলে এনে প্রশিক্ষণ দিয়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পাঠাতে।’
১৯৮৬ সালে সিউলে দশম এশিয়ান গেমসে বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জপদক জেতেন বাংলাদেশের মোশাররফ হোসেন। সেই সাফল্যকে পুঁজি করে বক্সিংয়ে আরও এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর বক্সিংয়ে বলার মতো আন্তর্জাতিক সাফল্য আসেনি।
পেশাদার বক্সিংয়ের মাধ্যমে এবার বাংলাদেশকে পরিচিত করতে চান আদনান হারুন, ‘দেশের বক্সারদের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম দিতে এবং বক্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই কাজ করতে চাই আমরা। দেশের অ্যামেচার বক্সারদের পেশাদার হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়াও আমাদের লক্ষ্য।’