পরীক্ষার হল থেকে এসেই চমক দেখালেন ফারবিন
খেলা শুরু হতে তখন মাত্র মিনিট পাঁচেক বাকি। তড়িঘড়ি করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ উডেনফ্লোর জিমনেসিয়ামে ঢুকলেন ফারবিন বিনতে এমদাদ।
পরনে তখনো কলেজের পোষাক। চলমান উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার হিসাববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা শেষ করে মাত্রই এসেছেন বাংলাদেশ জুনিয়র আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে খেলতে।
পোষাক বদলেই বাংলাদেশের জার্সি পরে নেমে গেলেন কোর্টে। মেয়েদের এককে প্রথম রাউন্ডে ইন্দোনেশিয়ার তাসিয়া ফারাহনায়লাহর কাছে হারলেও ফারবিন পৌঁছে গেছেন মহিলা দ্বৈতের ফাইনালে।
নাসিমা খাতুনের সঙ্গে জুটি গড়ে মহিলা দ্বৈতের সেমিফাইনালে ২১-৮, ২১-১৬ পয়েন্টে হারিয়েছেন স্বদেশি ফারহানা ইসলাম ও ফাতেহা রহমানকে। আগামীকাল ফাইনালে সোনা জেতার লড়াইয়ে ফারবিন ও নাসিমা জুটির প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের উর্মি আক্তার ও স্মৃতি রাজবংশী।
জাতীয় বয়সভিত্তিক দলের জন্য ফেডারেশন থেকে ডাক পাননি ফারবিন। ফলে ঢাকায় আজ থেকে শুরু হওয়া এই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার কথাই ছিল না ফারবিনের। কৌতূহলবশত এক দিন আগে বিশ্ব ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের (বিডব্লিউ) ওয়েবসাইটে ঢুকে জানতে পারেন বাংলাদেশ দলে খেলছেন তিনি।
অথচ এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাবেন না জেনে চলমান উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যই এত দিন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঢাকা সিটি কলেজের ছাত্রী।
শেষ পর্যন্ত খেলার টানে আজ পরীক্ষা শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে ছুটে আসেন পল্টন জিমনেসিয়ামে।
ঘণ্টাখানেকের অসহনীয় যানজট পেরিয়ে পরীক্ষার হল থেকে পৌঁছান ভেন্যুতে। পুরো দিনে যেখানে শুধু হতাশার গল্পই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা, সেখানে দিনশেষে তাঁর সাফল্য আলাদা করে নজর কেড়েছে সবার।
ফাইনালে ওঠার পর উচ্ছ্বসিত ফারবিন বলছিলেন, ‘ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আমাকে বলা হয়েছিল সময়মতো না এলে এই ম্যাচ ওয়াকওভার দেওয়া হবে। এখানে এসে শুধু কলেজের পোশাক বদলে জার্সি পরেছি। কোনোরকম ওয়ার্ম করে কোর্টে নামি। তখন খেলা শুরু হতে মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি ছিল। শেষ পর্যন্ত সময়মতো পৌঁছে খেলেছি এবং ফাইনালে উঠেছি। আমার খুব ভালো লাগছে। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ারও স্বপ্ন দেখছি। এই ম্যাচ জিততে আমার সতীর্থও অনেক সহযোগিতা করেছে। ওকেও ধন্যবাদ।’