অলিম্পিকের বিছানা ভেঙেই ছাড়লেন ইসরায়েলের অ্যাথলেটরা
এবারের অলিম্পিকে অ্যাথলেটরা ভালো বিপদে পড়েছেন। অলিম্পিক মানে তো শুধু খেলা নয়, একটি দেশ, একটি শহরের অভিজ্ঞতা নেওয়াও। কিন্তু টোকিও অলিম্পিকে সেটা আর হচ্ছে কোথায়? আয়োজক শহরে চলছে জরুরি অবস্থা। অলিম্পিক ভিলেজের মধ্যেই সময় কাটাতে হচ্ছে। সেখানেও অন্য কোনো দেশ বা ইভেন্টের অ্যাথলেটদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ নেই। করোনার সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে সব দলকেই নিজেদের রুমে থাকার অনুরোধ জানিয়ে রাখা হয়েছে।
বিনোদনের উৎস খুঁজে নিতে তাই অ্যাথলেটরা নানা উপায় বের করছেন। টোকিও অলিম্পিকের জন্য বিশেষভাবে বানানো বিছানাকেই বিনোদনের উৎস হিসেবে খুঁজে নিয়েছেন অনেকে। ইসরায়েলের অ্যাথলেটরা যেমন বিনোদন নিতে গিয়ে বিছানাই ভেঙে ফেললেন!
ইসরায়েলের বেসবল খেলোয়াড় বেন ওয়াঙ্গারের হঠাৎ খেয়াল হলো নিজের টিকটক অ্যাকাউন্টে সাড়া ফেলতে হবে। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন, সবাই মিলে ভিলেজের একটা বিছানা ভেঙে দেখাবেন। দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর শুরুতে ওয়াঙ্গার নিজের উদ্দেশ্য জানিয়েছেন, ‘অলিম্পিক ভিলেজের বিছানা নিয়ে অনেক প্রশ্ন শুনছি। আজ তাই আমরা সবাই মিলে পরীক্ষা করে দেখব, এই বিছানা ভাঙতে কতজন ইসরায়েলি দরকার হয়।’
ভিডিওর শুরুতে নিজের বিছানায় উঠে লাফ দেন ওয়াঙ্গার। এরপর আরেক অ্যাথলেট এগিয়ে আসেন। দুজন মিলে লাফ দেন বিছানার ওপর। এভাবে ধীরে ধীরে তিন, চার করে অ্যাথলেটরা এসে লাফ দেন বিছানায়। আটজন মিলে লাফ দেওয়ার পর বিছানার পাশে একটু বেঁকে যায়। ওয়াঙ্গাররা তবু থামেননি। নবম সদস্য এসে যোগ দেন। তিনজন লাফ দেন। এবার বিছানার চার পাশই নিচু হয়ে যায়। নিজেদের কীর্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে ক্ষান্ত দেন তাঁরা।
এবারের অলিম্পিক বিছানা বেশ আগে থেকেই আলোচনায়। অলিম্পিক ভিলেজের সব বিছানা কার্ডবোর্ড দিয়ে বানানো হয়েছে। এ নিয়ে প্রথমে গুঞ্জন ছড়ানো হয়, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যাথলেটদের মধ্যে সম্পর্ক সৃষ্টি এড়াতেই এ পরিকল্পনা। একজন অ্যাথলেটের বেশি ওজন নিতে পারবে না এই বিছানা, এমন এক খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। অর্থাৎ অ্যাথলেটরা যেন যৌন সম্পর্কে না জড়ান, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা।
অলিম্পিক শুরুর আগেই অবশ্য সে গুঞ্জন থামিয়ে দিয়েছেন আইরিশ জিমন্যাস্ট রিস ম্যাকলেনাহান। টুইটারে একটি ভিডিওতে নিজের বিছানায় লাফ দিয়ে দিয়ে ম্যাকলেনাহান জানিয়েছেন, আচমকা নড়াচড়ায় এ বিছানা ভেঙে যায়, এটা ভুয়া খবর। অলিম্পিকের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে এরপর ম্যাকলেনাহানকে ধন্যবাদও দেওয়া হয়।
অবশ্য অ্যাথলেটদের ভিলেজের মহাব্যবস্থাপক তাকাশি কিতাজিমা জানিয়েছেন, খেলোয়াড়দের সম্পর্ক স্থাপনে বাধা সৃষ্টির যুক্তিটা মিথ্যা। কারণ, কার্ডবোর্ডের তৈরি হলেও এই বিছানা ১৯৯.৬ কেজি পর্যন্ত ওজন নিতে পারে। বরং এটা পরিবেশের কথা চিন্তা করেই বানানো হয়েছে, যেন এ বিছানা অলিম্পিকের পর আবার কাগজে রূপান্তর করা যায় এবং খাটের সঙ্গে থাকা ম্যাট্রেস দিয়ে প্লাস্টিক পণ্য বানানো যায়।
পরিবেশসচেতন জাপান এবারের অলিম্পিক পদকও প্রক্রিয়াজাত করা সোনা, রুপা ও ব্রোঞ্জ দিয়ে বানিয়েছে। এর জন্য দুই বছর ধরে পরিত্যক্ত মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিক পণ্য থেকে ধাতু প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এ জন্য ৭৮ টন পণ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে।