অলিম্পিক থেকে ফিরে ‘শাস্তি’ পাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার ১৬ অ্যাথলেট
যেকোনো দেশের অলিম্পিয়ান অ্যাথলেট সে দেশের গর্ব। কিন্তু সেই গর্বের কাজটি করতে গিয়ে ‘শাস্তির’ মুখে পড়তে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ১৬ অ্যাথলেটকে। টোকিও অলিম্পিক থেকে ফেরার পর অস্ট্রেলিয়ার নিয়ম অনুসারে ২৮ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
সাধারণত ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হয় সবার, কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে এত দিন কোয়ারেন্টিন করতে হওয়াকে রীতিমতো ‘নিষ্ঠুর’ বলে বর্ণনা করছেন এই অ্যাথলেটরা। আর এভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকাটা ‘শাস্তি’ বলেই মনে হচ্ছে সে দেশের অ্যাথলেট ও অলিম্পিক অ্যাসোসিয়শনের কর্মকর্তাদের।
যে ১৬ অ্যাথলেট টোকিও থেকে সিডনি হয়ে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় গেছেন, তাঁদের বাড়তি দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ান অলিম্পিক কমিটি (এওসি) সে দেশের সরকারের এমন বাড়াবাড়ি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘যেখানে অন্য দেশের অ্যাথলেটরা ফেরার পর উৎসব করছে, সেখানে আমরা নিজেদের অ্যাথলেটদের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও অবহেলার চোখে দেখছি।’
এওসির কাছে মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলে যেন ‘অপরাধ’ করে ফেলেছেন অ্যাথলেটরা! এভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হওয়া এওসির চোখে অ্যাথলেটদের সে ‘অপরাধেরই’ শাস্তি, ‘অলিম্পিক গেমসে তাঁরা গর্বের সঙ্গে দেশের হয়ে খেলে শাস্তি পাচ্ছেন।’
এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান অলিম্পিক দলের ওই ১৬ সদস্য নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী সিডনিতে কোয়ারেন্টিনে আছেন।
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া সরকার এই অ্যাথলেটদের কোয়ারেন্টিনে রাখার একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা বলছে, নিউ সাউথ ওয়েলসে অতিমাত্রায় ডেলটা ভেরিয়েন্টের ঝুঁকি রয়েছে। এই অ্যাথলেটদের বেলায় কোয়ারেন্টিনের এত বাধ্যবাধকতায় ছাড় দিতে অনুরোধ করেছিল এওসি, কিন্তু সরকার সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
যে ১৬ অ্যাথলেট টোকিও থেকে সিডনি হয়ে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় গেছেন, তাঁদের বাড়তি দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। ওই ১৬ সদস্য এখন নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী সিডনিতে কোয়ারেন্টিনে আছেন।
এওসির প্রধান নির্বাহী ম্যাট ক্যারল এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘আমাদের অলিম্পিয়ানরা শুধু টিকাই নেননি, তাঁরা টোকিওতে অতি উচ্চমাত্রার জৈব সুরক্ষাবলয়ের মধ্যে ছিলেন। সর্বোচ্চ সতর্কতার মধ্যেই ছিলেন। অনেক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন করোনা পরীক্ষা হয়েছে তাঁদের।’ কেন এসব অ্যাথলেটদের ছাড় দেওয়ার আবেদনে সাড়া দেয়নি সরকার, তা নিয়েও অবাক তিনি, ‘কেন আমাদের অ্যাথলেটদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হলো, সেটার কোনো ব্যাখ্যা আমরা পাইনি।’
এভাবে ২৮ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়কে ভালোভাবে দেখছেন না অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টসের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডেভিড হিউজ, ‘এভাবে এত দিন কোয়ারেন্টিনে থাকা অ্যাথলেটদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য ঝুঁকি হতে পারে।’
মহামারি শুরুর পর অস্ট্রেলিয়ায় ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯৪৫ জন মারা গেছেন বলে জানাচ্ছে এ–সংক্রান্ত খবর জানানো ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস। তাদের মতে, অস্ট্রেলিয়ার মৃত্যুর এ হার অন্য অনেক উন্নত দেশের তুলনায় অনেক কম।