গ্র্যান্ডমাস্টারদের হারিয়ে চলেছে ১৩ বছর বয়সী মনন

রিফাত বিন সাত্তারকেও হারিয়ে চমকে দিয়েছে মননছবি: সংগৃহীত

মাত্র পাঁচ দিন আগে বাংলাদেশের দাবায় বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছিল ক্যান্ডিডেট মাস্টার মনন রেজা (নীড়)। ১৩ বছর বয়সী মনন সেদিন হারিয়ে দেয় গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবকে। ঢাকায় চলমান বঙ্গবন্ধু ৪৭তম জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের অষ্টম রাউন্ডে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাজীবকে হারিয়ে সবাইকে চমকে দেয় মনন।

আজ ১২তম রাউন্ডে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তারকেও হারিয়েছে নারায়ণগঞ্জের ফিলোসোফিয়া ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির এই ছাত্র। মনন সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলে ৫৩ চালের মাথায় হারিয়ে দেয় রিফাতকে। এবারের জাতীয় দাবায় ১২ ম্যাচে এটা মননের পঞ্চম জয়। ৩ ম্যাচে করেছে ড্র। বাকি ৪টিতে হার। সাড়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে।

ঢাকায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরোনো ভবনের তৃতীয় তলায় দাবাকক্ষে চলছে দেশে দাবাড়ুদের শীর্ষ এ প্রতিযোগিতা। এতে সর্বকনিষ্ঠ দাবাড়ু মনন খেলছে বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে। ছেলেকে নিয়ে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন মননের মা মৌমন রেজা। মনন যখন খেলায় মগ্ন থাকে, বাইরে অস্থির পায়চারি করেন তিনি। ছেলে কেমন খেলবে, কতটা ভালো পারফরম্যান্স করবে, সেটা নিয়ে ভাবনায় থাকেন।

এর আগে এনামুল হোসেন রাজীবকেও হারিয়েছে মনন
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় দাবায় মনন দুজন গ্র্যান্ডমাস্টারকে হারিয়ে দেওয়ায় উচ্ছ্বসিত মৌমন, ‘এবারের জাতীয় দাবায় শুরু থেকেই নীড় (মনন) ভালো খেলছে। প্রথম রাউন্ডে জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন সুব্রতকে হারিয়েছে। ফাহাদের (আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমান) সঙ্গে ড্র করেছে। ওর এমন পারফরম্যান্সে আমি কত খুশি হয়েছি তা বলে বোঝানো যাবে না।’

গত অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান যুব দাবায় অনূর্ধ্ব-১২ ক্যাটাগরির স্ট্যান্ডার্ড বিভাগে মনন জিতেছিল রুপা। মননের বর্তমান রেটিং ২২১৫। ফিদে মাস্টার খেতাব পেতে নিয়মিত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার বিকল্প নেই মননের।

কিন্তু মৌমন রেজার আক্ষেপ, পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সুযোগ পাচ্ছে না মনন, ‘ছোটবেলা থেকেই দাবার প্রতি ওর প্রচণ্ড টান। দাবার বোর্ডে মগ্ন থাকলে অনেক সময় পড়াশোনাও ভুলে যায় সে। ওর বর্তমান যে রেটিং তাতে দ্রুতই হয়তো ফিদে মাস্টার হতে পারবে। কিন্তু এ জন্য প্রয়োজন আরও বেশি টুর্নামেন্টে খেলা। কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সুযোগ করে দেওয়ার মতো সামর্থ্য আমার নেই। এ জন্য যদি কেউ তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করত, তাহলে আমার ছেলে অল্প সময়ের মধ্যে হয়তো ফিদে মাস্টার হতে পারত।’

১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে অনেকখানি এগিয়ে রয়েছেন গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন। সমান ম্যাচে সাড়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান।