২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

দ্রুততম মানব ইমরানুর, দ্রুততম মানবী শিরিন

এবারও দ্রুততম মানব ইমরানুর ও দ্রুততম মানবী শিরিনছবি: সংগৃহীত

ইমরানুর রহমান দৌড় শেষ করতেই গ্যালারি থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাথলেটরা করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানালেন। ইমরানুরও হাসিমুখে অভিনন্দনের জবাব দিলেন সবাইকে।

বাংলাদেশের দ্রুততম মানব হিসেবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ইমরানুর রহমান আবারও নিজের অবস্থান ধরে রাখলেন। বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে আজ শুরু হওয়া ৪৬তম বঙ্গবন্ধু জাতীয় অ্যাথলেটিকসের প্রথম দিনেই ১০০ মিটার স্প্রিন্টের খেতাব ধরে রেখেছেন এই স্প্রিন্টার। ইলেকট্রনিক বোর্ডে সময় নিয়েছেন ১০.৪৯ সেকেন্ড। যদিও নিজের সেরা পারফরম্যান্স করতে পারেননি। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে দৌড়েছিলেন ১০.২৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে।

গত সেপ্টেম্বরে সামার অ্যাথলেটিকসে দ্রুততম মানবী হওয়া শিরিন আক্তার এবারও হয়েছেন দ্রুততম মানবী। সামার ও জাতীয় প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এ নিয়ে ১৪ বার ১০০ মিটার জিতলেন শিরিন। এবার তিনি সময় নিয়েছেন ১২.২০ সেকেন্ড। গত সেপ্টেম্বরে অবশ্য তিনি ১১.৯৫ সেকেন্ড দৌড়েছিলেন। ইলেকট্রনিক বোর্ডে যেটা ছিল মেয়েদের ১০০ মিটারের নতুন জাতীয় রেকর্ড।

দৌড় শেষে ইমরানুর
ছবি: সংগৃহীত

গত জানুয়ারিতে প্রথমবার জাতীয় অ্যাথেলেটিকসে খেলেই রেকর্ড গড়ে সেরা হয়েছিলেন লন্ডনপ্রবাসী ইমরানুর। তখন তিনি ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছিলেন। হারিয়েছিলেন চারবারের দ্রুততম মানব মোহাম্মদ ইসমাইলকে। ইলেকট্রনিক বোর্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাথলেট ইমরানুরের টাইমিং ছিল তখন ছিল ১০.৫০ সেকেন্ড। ইলেকট্রনিক বোর্ডে সেটিই ছিল তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেটের সেরা টাইমিং। এর আগে ১৯৯৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত মাহবুব আলমের গড়া ১০.৫৪ সেকেন্ড ছিল সর্বশেষ দেশের কোনো অ্যাথলেটের রেকর্ড টাইমিং।

ইমরানুর অবশ্য নিজের এমন পারফরম্যান্সের জন্য ভ্রমণ ক্লান্তিকেই দায়ী করলেন। বিলম্বিত ফ্লাইটের কারণে ঢাকায় এসেছেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে। ঢাকায় আসার জন্য ম্যানচেস্টার বিমান বন্দরে তাঁকে প্রায় ৪০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। একরকম অনুশীলন ছাড়াই ট্র্যাকে নেমে তারপরও হয়েছেন সেরা।

দৌড় শেষে ইমরানুর বলছিলেন, ‘আমার ঢাকায় আসার ফ্লাইট ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু বুধবার এসে পৌঁছাতে হয়েছে। ম্যানচেস্টারে আমাকে প্রায় ৪০ ঘণ্টা বিমানের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। যে বিমানে আসার কথা ছিল, সেটা বিকল হয়ে পড়ে হঠাৎ করে। এ জন্য এখানে এসে অনুশীলন করতে পারিনি সেভাবে। ক্লান্তি ছিল, এ জন্য ভালোভাবে দৌড়াতেও পারিনি।’

নিজেদের মুকুট ধরে রাখলেন ইমরানুর ও শিরিন
ছবি: সংগৃহীত

অবশ্য গত মাসে তুরস্কে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে ১০.০১ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ষষ্ঠ হয়েছিলেন ইমরানুর। সেটিকেই বাংলাদেশের জাতীয় রেকর্ড হিসেবে গণ্য করছিল বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। কিন্তু সলিডারিটি গেমসে অ্যাথলেটিকসের সব টাইমিংই বাতিল করেছে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস কর্তৃপক্ষ। যান্ত্রিক সমস্যার কারণে সেখানে সঠিক টাইমিং আসেনি বলে মনে করে সংস্থাটি। এ জন্য ইমরানুরের সেই টাইমিং গণ্য করা হবে না বলে জানালেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব, ‘তুরস্কের সব টাইমিং আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন বাতিল করেছে। এ জন্য আমরাও সেটাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করছি না।’

আবারও দ্রুততম মানবী হয়ে আনন্দে আত্মহারা শিরিন বলেন, ‘নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি খুশি। তবে এই টাইমিং আরও ভালো হতে পারত। চৌদ্দতমবার দ্রুততম হয়েছি, নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যেতে চাই।’

শিরিনের আগে বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী ছিলেন নাজমুন নাহার। সামার ও জাতীয় প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৭ বারের দ্রুততম মানবী ছিলেন নাজমুন নাহার। এই অ্যাথলেটকেও ছাড়িয়ে যেতে চান শিরিন, ‘বিউটি আপু (নাজমুন নাহার) কিংবদন্তি। তাকে আমার স্যালুট। আমি একদিন তাকেও ছাড়িয়ে যেতে চাই। এসএ গেমসে সোনা জিততে চাই। জানি সেটা কঠিন, তবে অসম্ভব না।’